মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, কুতুবদিয়া থেকে ফিরে ::
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের অর্থায়নে ‘টিনশেড পাকাবাড়ি’ পাচ্ছেন কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা মোজাফ্ফর আহমদের পরিবার। মুক্তিযোদ্ধা ভিটাতে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অর্থায়নে ঘর নির্মানের উদ্যোগ নিয়েছেন কুতুবদিয়ার ইউএনও মোঃ জিয়াউল হক মীর। মুক্তিযোদ্ধা মোজাফ্ফর আহমদ কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া দ্বীপের উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের আজিম উদ্দিন সিকদার পাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
জানা গেছে, বিগত ১৯৯১ এর ২৯ এপ্রিল ভয়াল রাতের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে ঘরবাড়ি লন্ডভন্ড হয়ে সাগরগর্বে তলিয়ে যায়। পরে অন্যত্রে একটি বসতভিটা করলেও সে সময়ে চরম অভাব-অনটনের কারণে নিজ ভিটাতে ঘর তৈরী করার সমর্থ ছিল না মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের। ওই সময় থেকে কক্সবাজার শহরে দক্ষিণ তারা বনিয়ারছড়া এলাকায় খাস জায়গায় কাঁচা ঘর তৈরী করে বসবাস করে আসছিল মোজাফ্ফর আহমদের পরিবার।
কুতুবদিয়া উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুচ্ছাফা জানান, জাতীর শ্রেষ্ট সন্তান মোজাফ্ফর আহমদ কুতুবদিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় ২০১৭ সালের ৩০ জুলাই ইহকাল ত্যাগ করেন। সেসময়ে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় কক্সবাজার জেলা শহরের দক্ষিণ তারা বনিয়ারছড়া কবরস্থানে দাপন সম্পন্ন হয় বলে বর্তমান ।
এদিকে মুক্তিযোদ্ধা মোজাফ্ফর আহমদের পরিবারের করুণ দশার খবর পেয়ে কুতুবদিয়ার ইউএনও মোঃ জিয়াউল হক মীর সম্প্রতি সরেজমিনে মুক্তিযোদ্ধার ভিটি দেখে আসেন। তাঁর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অর্থায়নে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে ‘টিনশেড পাকাবাড়ি’ তৈরী করে দেওয়ার উদ্যোগ নেন।
প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা মোজাফ্ফর আহমদের স্ত্রী মর্তুজা বেগম জানান, তিনি মুক্তিযোদ্ধা হলেও তেমন অর্থ সম্পদ ছিল না। খুব কষ্টের মধ্যে সংসার চালিয়েছিলেন। তিনি আরো জানায়, তাদের সংসারে দুই ছেলে, তিন কন্যা। প্রথম সন্তান আনিসুল ইসলাম, সাতকানিয়া আল হেলাল ডিগ্রি কলেজের আইসিটি বিষয়ের শিক্ষক, দ্বিতীয় সন্তান তাফসিরুল হাবিব চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ইর্ন্টানি চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত আছেন। ছোট কন্যা হালিমা আহমেদ শোভা কক্সবাজার সরকারি কলেজে রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিষয় নিয়ে অনার্স ৪র্থ বর্ষের ছাত্রী। আমেনা বেগম ও আফসানা আহমেদ দুই জনের বিয়ে হয়ে যায়। তাদের পাকা টিনশেড বাড়ি করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়ায় তিনি প্রধানমন্ত্রীর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
কুতুবদিয়ার ইউএনও মো: জিয়াউল হক মীর জানান, যার জমি আছে ঘর নাই তার জমিতে ঘর নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অর্থায়নে প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা মোজাফ্ফর আহমদের ভিটায় ঘর তৈরীর কাজ চলছে। নির্মাণ কাজ শেষ হলেও মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে বাড়িটি হস্তান্তর করা হবে।
পাঠকের মতামত: