কক্সবাজার প্রতিনিধি :: গত মাসে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাজিমাত করেছিলেন কক্সবাজারের চকরিয়ার তারেকুল ইসলাম জীবন বলী। এরপর থেকে বলী হিসেবে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে। কিন্তু মাস না যেতেই কক্সবাজারের ডিসি সাহেবের বলী খেলায় সেই জীবন বলী উখিয়ার নুর মোহাম্মদ বলীর কাছে কুপোকাত হয়েছেন।
শনিবার কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনাল খেলার দ্বিতীয় পর্বেই পরাজিত হন জীবন বলী। তাকে হারিয়ে প্রথম পর্বে উত্তীর্ণ হন উখিয়ার নূর মোহাম্মদ বলী। এরপর নুর মোহাম্মদ বলী ও বাংলাদেশ কুস্তি ফেডারেশনের তালিকাভুক্ত খেলোয়াড় আনসার সদস্য লিটন বিশ্বাসের মধ্যে টানা ২০ মিনিট হার না মানা লড়াইয়ের পর দুজনকেই যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়।
কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী ডিসি সাহেবের বলী খেলা ও বৈশাখী মেলার ২ দিনব্যাপী ৬৭তম আসর গত শুক্রবার বিকেল থেকে কক্সবাজারের বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে (জেলা স্টেডিয়াম) শুরু হয়। ৭ মে, শনিবার বলী খেলার সমাপনী দিনে জব্বারের বলীখেলার চ্যাম্পিয়ন চকরিয়ার তারেকুর রহমান জীবন বলীসহ বিভিন্ন এলাকার নামকরা প্রায় ৩শ বলী অংশ নেন। এর মধ্যে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলা-২০২২ এর চ্যাম্পিয়ন তারেকুল ইসলাম জীবন বলী এবং উখিয়ার নূর মোহাম্মদ বলী প্রায় আধাঘণ্টা লড়াই করেন। পরে মাটিতে হালকা পিঠ লাগলেই জীবন বলীকে পরাজিত ঘোষণা করেন রেফারি। তবে পরাজয় মেনে নেননি জীবন বলী।
অন্যদিকে টানা প্রায় ২০ মিনিটের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ খেলায় জয় পরাজয় নিশ্চিত না হওয়ায় বাংলাদেশ কুস্তি ফেডারেশনের লিটন বিশ্বাস ও উখিয়ার নুর মোহাম্মদ বলীকে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়। ২ নম্বর মেডেলেও একই ফলাফল হয়েছে। যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন মহেশখালীর মোহাম্মদ হোসেন বলী ও কুস্তি ফেডারেশনের আনোয়ার। তবে ৩ নম্বর মেডেলে মহেশখালীর সরওয়ারকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে একই উপজেলার সাহাব উদ্দিন।
পরে বিজয়ী ও বিজিতদের মাঝে নগদ অর্থ ও ট্রফি তুলে দেন জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাড. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জাহিদ ইকবাল, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিনসহ অন্যরা।
এর আগে সমাপনী দিনের খেলা উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। এসময় তিনি বলেন, জনপ্রিয় এই খেলা হারিয়ে যেতে বসেছে। তাই বলী খেলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
সমাপনী দিনে দুপুর থেকে ঢোল ও নানা বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে বিভিন্ন এলাকা থেকে স্টেডিয়ামে আসতে থাকে মানুষ। দর্শকদের তুমুল হর্ষধ্বনির মধ্য দিয়ে জমজমাট হয়ে উঠে বলী খেলা। বলী এবং দর্শকদের মাঝে টান টান উত্তেজনায় বিকেল গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সাথে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয় দর্শক গ্যালারি।
পাঠকের মতামত: