ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গেছে ৩০০ চিংড়ি প্রজেক্ট

pic 1 pekuaচকরিয়া নিউজ :::
মৌসুমের শুরুতেই চরম বিপর্যয়ের পড়েছে কক্সবাজারের চিংড়ি চাষ। গতকালের জলোচ্ছ্বাসে নার্সারীতে রাখা পোনা ভেসে যাওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন চিংড়ি চাষীরা। গত ২০ মে থেকে সমুদ্রে মা চিংড়ি আহরণ নিষিদ্ধ হওয়া চিংড়ি পোনা সংকটের আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কক্সবাজারের প্রায় ৩০০ চিংড়ি প্রজেক্ট থেকে জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে চিংড়ি পোনা। একই সাথে ৬৫ দিনের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে মা চিংড়ি আহরণ। যার ফলে চাহিদা মোতাবেক চিংড়ি পোনা উৎপদান হবে না হ্যাচারী গুলোতে। যার ফলে পোনা সংকট অনিবার্য হয়ে উঠেছে।
চিংড়ি চাষী নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন গত সপ্তাহে প্রজেক্টে ১২ লাখ টাকার পোনা নার্সারী করেছি। গতকালের জলোচ্ছ্বাসে সব পোনা ভেসে গেছে। চারপাশে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় আগামি ১৫/২০ দিনের মধ্যে পোনা রাখাও সম্ভব নয়। এ ছাড়া হ্যাচারীগুলোতে তখন আর পোনা থাকবে না। এখন আমরা কি করব বুঝতে পারছি না।
মাতারবাড়ির চিংড়ি চাষী মোহাম্মদ হোছাইন জানান, সবকটি প্রজেক্টেই এখন আর পোনা নেই। সব পোনাই ভেসে গেছে। বাঁধ ঠিক করে চাষ শুরু হয়েছিল মাত্র। এত লোকসান দেওয়ার মত পুঁজি কারো নেই। যার কারণে প্রজেক্ট খোলাই রাখতে হবে। পোনার সংকট অনিবার্য হওয়ায় মূল্য দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। তাই ব্যবসা বন্ধ রাখা ছাড়া কোন উপায় নেই।
এদিকে মা চিংড়ি আহরণ ৬৫ দিন বন্ধ থাকলে মা চিংড়ির অভাবে পোনা উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে।  এতে সাগরে অবৈধ ভাবে পোনার আহরণকারীর সংখ্যা বেড়ে যাবে এবং তাদের উপরই নির্ভর করতে হবে চাষীদের।
বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা হিমায়িত চিংড়ি উৎপাদনে এই মৌসুমে বড় ধরণের বিপর্যয় আসবে। শ্রীম্প হ্যাচারী এসোসিয়েশন এর সভাপতি মশিউর রহমান রাজন জানিয়েছেন, বাংলাদেশে প্রায় ৩ লাখ হেক্টর জমিতে সুষ্টভাবে চিংড়ি চাষ হচ্ছে এবং চিংড়ি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানীখাত। এই খাত থেকে প্রতি বছর প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়। এই পুরোটাই সরকারের নীট আয়। এ খাতে মূল যোগানদার শ্রীম্প হ্যাচারী এসোসিয়েশন এর প্রায় ৭০টি বাগদা চিংড়ি হ্যাচারী রয়েছে। ওই হ্যাচারী থেকে প্রতি বছর ১ হাজার থেকে ১২ শ কোটি পোনা উৎপাদন করে দেশের চিংড়ি চাষিদের চাহিদা মেঠায়। ফলে চিংড়ি পোনা আমদানির প্রয়োজন পড়ে না। এ ছাড়া এই সেক্টরে প্রায় দেড় কোটি মানুষের জীবিকা নির্ভর করছে।

পাঠকের মতামত: