ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

জজ নিয়োগে দলীয়করণ অসাংবিধানিক: ড. কামাল

image_148374_0নিজস্ব প্রতিবেদক ::
ঢাকা: গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন না থাকলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কেউই নিরাপদ থাকবে না। দলীয়করণের কারণে আমরা ক্যানসারে ভুগছি। জজ নিয়োগে দলীয়করণ হয়, এটা অসাংবিধানিক। যোগ্যতা, মেধা, অভিজ্ঞতা আমলে নেয়া হয় না। দলীয় লোকই নিয়োগ পায়।

শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন আয়োজিত ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। নতুন বার্তা

আলোচনায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক। তিনি বলেন, বিচার বিভাগ, নির্বাহী ও আইন বিভাগ থেকে পৃথক হতে হবে। একইসঙ্গে বিচারকার্যে বিচার বিভাগের থাকতে হবে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা। আমরা স্বাধীনতার চার দশক পরে এখনও প্রায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলছি এবং যা আলাপ-আলোচনা করছি তার প্রায় সব কথাই সমালোচনা-ধর্মীয়। অর্থাৎ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে আমাদের প্রশ্ন আছে।

তিনি বলেন, বিচার বিভাগ নিয়ে স্বস্তি নেই, আছে উৎকণ্ঠা। ১৯৭২ সালে সংবিধানে বিচার বিভাগ ছিল নির্বাহী বিভাগ থেকে সম্পূর্ণ পৃথক। নিম্ন আদালতে প্রশাসনিক দায়িত্বে ছিল সুপ্রিম কোর্ট।

বিশিষ্ট এই সংবিধান বিশেষজ্ঞ বলেন, অনুচ্ছেদ ৯৫ (২) (গ) বিচার বিভাগ সংক্রান্ত যে আইনের কথা ১৯৭৬ সালেই সংবিধানে বলা ছিল, কিন্তু অদ্যাবধি হয়নি।  তাহলো বিচারপতিদের নিয়োগ সংক্রান্ত আইন।  অনুচ্ছেদ ৯৫ (২) (গ)তে বলা আছে, কোন ব্যক্তির আইনের দ্বারা নির্ধারিত যোগ্যতা না থাকলে বিচারপতি পদে নিয়োগ লাভের যোগ্য হবেন না। ৪৪ বছর পার হয়ে গেল, সংসদ বিচারপতিদের যোগ্যতা নির্ধারণ করে আইন পাস করেনি। এই সংক্রান্ত আইনের ব্যাপারে সরকার কোনো উদ্যোগ নিয়েছে বলে শোনা যায় না।

বাজেট বরাদ্দে বৈষম্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ ছিল এক হাজার ৪৬ কোটি টাকা। আর মৎস্য ও পশু সম্পদ মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৪৬৯ কোটি টাকা। বিচার বিভাগ ও আইনজীবীদের চেয়ে মৎস্য ও পশু সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বাজেট বেশি।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। সুজন সভাপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খানের সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনায় সাবেক বিচারপতি আব্দুল মতিন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে. অব. এম সাখাওয়াত হোসেন, কলামনিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

পাঠকের মতামত: