ঢাকা,বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় ১০ ইউপি নির্বাচনে ৫৬৫ প্রার্থীর মাঝে প্রতিক বরাদ্দ, নির্বাচনী প্রচারনা শুরু

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ১০ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য পদে ৫৬৫ প্রার্থীর মাঝে প্রতিক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। শুক্রবার স্ব-স্ব রিটার্নিং কর্মকর্তাগণ প্রার্থীদের মাঝে প্রতিক বরাদ্দ দেন। এদিকে প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা গতকাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। তৃতীয় ধাপে আগামী ২৮ নভেম্বর উপজেলার বদরখালী,পশ্চিম বড়ভেওলা, ঢেমুশিয়া, কোনাখালী, ভেওলা মানিকচর (বিএমচর), পুর্ববড় ভেওলা, সাহারবিল, কৈয়ারবিল, লক্ষ্যারচর ও কাকারা ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত হচ্ছে নির্বাচন। তদমধ্যে সাহারবিল ও লক্ষ্যারচর ইউনিয়নে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহন হবে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম জানান, চকরিয়ার ১০ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৬৭ জন, সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য পদে ১৩২ জন ও সাধারণ ইউপি সদস্য পদে ৩৬৬ জন প্রাথী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার ৬ চেয়ারম্যান প্রার্থী, সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য পদে ১ ও সাধারণ ইউপি সদস্য পদে ১৭ জনসহ ২৪ জন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন।

এরপর গতকাল শুক্রবার প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছেন স্ব-স্ব রিটার্নিং কর্মকর্তারা। তদমধ্যে উপজেলার উপকূলীয় জনপদ বদরখালীতে প্রতীক পেয়েছেন চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী নুরে হোছাইন আরিফ (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু নাইম মো. হেফাজ (চশমা), জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী নাছির উদ্দিন (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আলী (আনারস), আহসানুল কাদের চৌধুরী সাব্বির (মোটরসাইকেল), জাকের আহমেদ (ঢোল), আলী আকবর (অটোরিকশা), মিজানুর রহমান (ঘোড়া), শামসুদ্দীন (টেবিল ফ্যান) ও জসিম উদ্দিন (টেলিফোন)।

পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী ওয়াহেদ ফয়েজ মো: সামউনুল ইসলাম (চশমা), নিয়ামত উল্লাহ (মটর সাইকেল), নুরুল বশর চৌধুরী বাচ্চু (টেলিফোন), রবিউল এহেছান (আনারস)।

সাহারবিল ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৭জন প্রার্থী। তাঁরা হলেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মহসিন বাবুল (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী নবী হোছাইন চৌধুরী (আনারস), আবু তৈয়ব (ঘোড়া), আবদুল আলীম (অটোরিকশা), মাহমুদুল হাসান (মোটরসাইকেল), মুহাম্মদ খানে আলম (টেলিফোন) ও জুনাইদুল হক (চশমা)।

কোনাখালী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৭জন প্রার্থী। তাঁরা হলেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী জাফর আলম ছিদ্দীকী (নৌকা), জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মো: রুহুল কাদের মানিক (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার (মোটর সাইকেল), মো. নুরুল কবির (আনারস), আবদুল মাবুদ (চশমা), মোহাম্মদ ইয়াছিন (ঘোড়া) ও আনোয়ারুল ইসলাম (রজনীগন্ধা)।

ঢেমুশিয়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৭জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী এস এম মঈন উদ্দিন আহমদ চৌধুরী (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল আলম (আনারস), কফিল উদ্দিন (ঘোড়া), মো. হোছনে মোবারক (চশমা), সাইফুল ইসলাম (টেলিফোন), ফরিদুল আলম (মোটরসাইকেল) ও মোহাম্মদ হোছাইন (অটোরিকশা)। ভেওলা মানিকচর (বিএমচর) ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫জন প্রার্থী। তাঁরা হলেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী বদিউল আলম (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান এস.এম জাহাঙ্গীর আলম (আনারস), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী শাসমুল হক (হাতপাকা), নাছির উদ্দিন (ঘোড়া) ও মোহাম্মদ আলমগীর (চশমা)।

পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৬জন প্রার্থী। তাঁরা হলেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ফারহানা আফরিন মুন্না (নৌকা), জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী সাইফুল ইসলাম (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আনোরুল আরিফ (ঘোড়া), কামরুজ্জামান সোহেল (আনারস), মো. আব্দুল্লাহ (চশমা) ও মো. সালাহ উদ্দীন (মোটর সাইকেল)।

কৈয়ারবিল ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৯জন প্রার্থী। তাঁরা হলেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী জন্নাতুল বকেয়া (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মক্কি ইকবাল (ঘোড়া), আফজল-উর রহমান চৌধুরী (চশমা), মোহাম্মদ জকরিয়া (টেবিল ফোন), তৌহিদুল ইসলাম (মোটরসাইকলে), হিশাম উদ্দিন (অটোরিকশা), আনিচ উর রহমান জুয়েল (রজনীগন্ধা), মামুনুর রশিদ (টেলিফোন) ও আব্দুর রহমান আবেদ (আনারস)। কাকারা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনজন প্রার্থী। তাঁরা হলেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান শওকত ওসমান (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহাব উদ্দিন (চশমা) ও মোহাম্মদ ইসমত-ই ইলাহী (আনারস)।

লক্ষ্যারচর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মহি উদ্দিন মো. আওরঙ্গজেব বুলেট (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা কাইছার (ঘোড়া), সাবেক চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ (মোটরসাইকেল), মোহাম্মদ ওসমান (আনারস) ও সাইকুল ইসলাম (চশমা)।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে প্রচার-প্রচারণা করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্বাচন যেন উৎসব হতে পারে, সেই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তাছাড়া নির্বাচনে কোন ক্রমেই সহিংসতা ও সংঘর্ষের রূপ নিতে দেব না। এ বিষয়ে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকবে।

তিনি বলেন, প্রার্থীরা এখন নিয়ম মেনে প্রচার চালাতে পারবেন। দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মাইকিং করা যাবে। কোন ধরনের শো-ডাউন, বড় ধরনের জনসভা ও তোরণ নির্মাণ করা যাবে না। তবে ঘরোয়া বৈঠকে প্রার্থীরা অংশ নিতে পারবেন। অনেক প্রার্থীর পক্ষে আগেই পোস্টার লাগানো হয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি তদারকি করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে ইতিমধ্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

পশ্চিম বড় ভেওলায় আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ও মাতামুহুরী সাংগঠনিক থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি বর্তমান চেয়ায়ম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন,প্রতীক বরাদ্দ হওয়ায় আজকে থেকে দলীয় প্রতীক নিয়ে আমাদের নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু হতে চলেছে। যেহেতু আমি সরকার দলীয় দলের প্রার্থী। তাই আমাদেরকে নির্বাচনী আচরণবিধি খুব কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।

কৈয়ারবিল ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মক্কী ইকবাল হোসেন বলেন, আমি ঘোড়া প্রতীক চেয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করি। আজকে প্রতীক বরাদ্দ পেলাম। আজ থেকে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা কাজ শুরু করেছি।

 

পাঠকের মতামত: