নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার কোদালায় কাদায় আটকে পড়ে আহত হওয়া প্রায় দশ বছর বয়সী বুনো হাতিটির চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। হাতিটিকে সম্পূর্ণরূপে সুস্থ করে তুলতে ইতোমধ্যে ৫ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করেছে কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (২৫মে) থেকে মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সাইয়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন ও সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ড. বিবেক চন্দ্র সূত্রধরের নেতৃত্বে চিকিৎসাসেবার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পার্কের হাতির গোদার একটি শেডে অসুস্থ হাতিটির চিকিৎসাসেবা চলছে। এর আগে ১৩ মে বিকেলে হাতিটিকে ট্রাকযোগে প্রেরণ করা হয় চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে। এদিন থেকে হাতিটিকে পার্কের হাতির গোদা নামক স্থানে রেখে নিয়মিত নজরদারিতে রেখেছিল পার্ক কর্তৃপক্ষ। পার্কের আনার পর পরই বুনো আচরণ শুরু করেছিল হাতিটি। তবে বর্তমানে সেই আচরণ নেই। এতে হাতিটির চিকিৎসাসেবা শুরু করা সম্ভব হয়েছে বলে পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক এবং বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী কর্তৃক গঠিত ৫ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ডের অন্যরা হলেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সাইয়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ভজন চন্দ্র দাস, ঢাকা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (অব.) ডা. মো. ফরহাদ হোসেন, চকরিয়া উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুপন নন্দী। সদস্য সচিব করা হয় পার্কের বন্য প্রাণী চিকিৎসক হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকার নাইন।
মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যসচিব হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকার নাইন জানান, আনুষ্ঠানিকভাবে বুধবার থেকে হাতিটির সার্বিক চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আগামী পাঁচদিন পর্যন্ত একনাগাড়ে হাতিটির চিকিৎসা চলবে। এজন্য বোর্ডের প্রধান প্রয়োজনীয় ঔষুধ-পত্রাদি লিখে দিয়েছেন। নিয়ম করে সেই ঔষুধ প্রয়োগসহ হাতিটিকে সম্পূর্ণরূপে সুস্থ করে তুলতে সার্বিক তদারকি করা হচ্ছে।
পার্কের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম চকরিয়া নিউজ প্রতিবেদককে জানান, ৩০ এপ্রিল দুপুরে এই বুনো হাতিটিকে কাদায় আটকে থাকাবস্থায় উদ্ধার করে বনবিভাগ এবং সংশ্লিষ্টরা। এর পর হাতিটিকে বনে ফেরত পাঠানো হয়। কিন্তু হাতিটির শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হলে সেটিকে ফের চিকিৎসার জন্য কোদালা বনবিটের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। সেখানে পার্কের ভেটেরিনারী সার্জনের নেতৃত্বে চিকিৎসা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু তাতেও আশানুরূপ ফলাফল না আসায় প্রধান বনসংরক্ষকের নির্দেশে হাতিটিকে প্রেরণ করা হয় সাফারি পার্কে।
এই বিষয়ে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক এবং চট্টগ্রাম বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী চকরিয়া নিউজকে বলেন, পার্কে প্রেরণের পর পরই হাতিটি বুনো আচরণ শুরু করলেও বর্তমানে বেশ শান্ত রয়েছে। তাই মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের পর বুধবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিকিৎসাসেবা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আশা করছি হাতিটি অচিরেই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠবে।
পাঠকের মতামত: