স্টাফ রিপোর্টার, চকরিয়া :: চকরিয়ায় আইনজীবীর চেম্বারে দিনেদুপুরে সন্ত্রাসীদের হামলায় দুই আওয়ামী লীগ নেতা মারাত্মক আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন মাতামুহুরী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাহারবিল ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মহসিন বাবুল (৬০) ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল দরবেশী (৪০)।
এসময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে আহতদের উদ্ধার করে চকরিয়া সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বিকাল দেড়টার দিকে চকরিয়া আইনজীবীপাড়ায় প্রকাশ্য দিবালোকে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান মহসিন বাবুল জানান, মঙ্গলবার বেলা দেড়টার ইকবাল দরবেশীকে নিয়ে কিছু পুরনো মামলার ব্যাপারে এড. শহীদুল্লাহ চৌধুরীর চেম্বারে অবস্থান করি।
এড.শহীদুল্লাহ চৌধুরী আদালতে থাকায় তার জন্য অপেক্ষা করি চেম্বারে। ওইসময় স্থানীয় সাংসদ জাফর আলমের ভাতিজা জিয়াবুল হক, ভাগিনা মিজানুর রহমান ও স্থানীয় যুবলীগ কর্মী শওকত ওসমানের নেতৃত্বে ৪-৫ জন অস্ত্রধারী অতর্কিতভাবে আইনজীবীর চেম্বারে প্রবেশ করে। তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গালিগালাজ করতে থাকে সন্ত্রাসীরা। তাদের হুমকি ধমকিতে অসহায় হয়ে পড়ি। এসময় জিয়াবুল, মিজান ও শওকত সম্প্রতি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদ সিআইপির নেতৃত্বাধীন বিভিন্ন সভা সমাবেশে কেন যাচ্ছো তা জানতে চান। এসময় তারা তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এবং তাদের উপর চড়াও হয়ে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে।
আওয়ামীলীগ লীগ নেতা মহসিন বাবুল আরও বলেন, এসময় তারা প্রথমে ইকবাল দরবেশীকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। হামলায় আহত হয়ে ইকবাল মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ওই সময় ইকবালকে উদ্ধারে এগিয়ে আসলে এমপি জাফরের ভাগিনা তাকে সিলভার কালারের একটি পিস্তল দিয়ে গুলি করার হুমকি দেন। একপর্যায়ে তাকে মারধর ও শাররিকভাবে লাঞ্চিত করে। তার শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। সন্ত্রাসীরা হুমকি ধমকি দিয়ে মুহুর্তের মধ্যে সটকে পড়েন। পরে সহকর্মীরা তাদেরকে উদ্ধার করে চকরিয়া সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। ইকবাল দরবেশীর বাম চোঁখে মারাত্মকভাবে আঘাত করা হন। তাদেরকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করেছে বলে দাবী করেন আওয়মী লীগ নেতা মহসিন বাবুল।
চকরিয়া আইনজীবি সমিতির সভাপতি এডভোকেট শহীদুল্লাহ চৌধুরী জানান, আওয়ামী লীগ নেতা মহসিন বাবুল ও ইকবাল দরবেশী মামলা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তার চেম্বারে অপেক্ষা করছিলেন। ওইসময় আমি আদালতে অন্য মামলার শুনানী নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। পরে এসে জানতে পারি তাদের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাবেদ মাহমুদ জানান, সাহারবিল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মহসিন বাবুল ও ইকবাল দরবেশীর উপর হামলার বিষয়টি জেনেছি। আহত দুইনেতার সাথে কথা বলার পর ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছি। এরপরও তারা লিখিত অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে মাতামুহুরী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মহসিন বাবুল ও সাংগঠনিক সম্পাদক কারা নির্যাতিত নেতা ইকবাল দরবেশীর উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা।
অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত সময়ের মধ্যে অস্ত্র উদ্ধারের দাবী জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদ সিআইপি, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গিয়াস গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, পৌর আওয়ামীলীগের সাবেক আহবায়ক অধ্যাপক আকম গিয়াস উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি সরওয়ার আলম, চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী, শফিউল আলম বাহার, সাবেক কৃষকলীগের সভাপতি জসিম উদ্দিন, অধ্যক্ষ আবদুল কাইয়ুম, আলমগীর কবির রাজু, এসএম আলমগীর হোছাইন, অধ্যাপক মোসলেহ উদ্দিন মানিক, আমান উদ্দিন আমান, এডভোকেট ফয়জুল কবির, মিজবাউল হক ও আবছার উদ্দিন মাহমুদ প্রমুখ।
পাঠকের মতামত: