ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় সংখ্যালঘু তিনটি পরিবার উচ্ছেদ আতঙ্কে, জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার দাবি

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::
চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নে দাপটশালীদের অব্যাহত হামলা ও দখল চেষ্টার ঘটনায় সংখ্যালগু তিনটি পরিবার উচ্ছেদ আতঙ্কে ভুগছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই তিনটি পরিবারের সদস্যদের মাঝে আতঙ্কের পাশাপাশি ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ইউনিয়নের উলুবনিয়া এলাকায় ঘটেছে এ দখল চেষ্টার ঘটনা।
অভিযোগে জানা গেছে, ডুলাহাজারা বগাচতর মৌজার বিএস ৮৩ খতিয়ানের ১৯ ও ৬৭ দাগের জায়গা আগের মালিক স্থানীয় সামসুল হুদা চৌধুরী, তার ভাই আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী ও বোন মরিয়ম খাতুনের কাছ থেকে ১৯৭৪ সালের ১৮ জুলাই ও ৭৫ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর দুই দলিলে এক একর ৯৬শতক জমি ক্রয় করেন উলুবনিয়া গ্রামের মরহুম হাজি সফিকুর রহমান। ৯৯৭-৯৮ সালে সফিকুর রহমানের কাছ থেকে ৭০শতক জমি ক্রয় করেন স্থানীয় সংখ্যালঘু তিনটি পরিবার। তাদের মধ্যে রাম কানু দে ২০শতক, বাদল কান্তি দাশ ৩০শতক ও শিশির ধর ২০শতক। ইতোমধ্যে ২০০১ সালের ২৯ মে ক্রেতা তিনজনের নামে চকরিয়া উপজেলা ভুমি অফিসে আলাদা তিনটি জমাভাগ খতিয়ানও সৃজিত হয়েছে।
সংখ্যালঘু পরিবার সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, জায়গা ক্রয় করার পর তাঁরা সেখানে শান্তিপুর্ণ অবস্থায় থাকলেও কিছুদিন আগে স্থানীয় জমি দালাল ছৈয়দের ইন্ধনে নতুন করে সৃজন করা কিছু ভিত্তিহীন কাগজের অনুবলে তাদের (সংখ্যালঘু পরিবারের) ক্রয়কৃত ওই জায়গা দখলের জন্য চক্রান্ত শুরু করে প্রভাবশালী একটি চক্র। সর্বশেষ গত ২৩ জানুয়ারী জায়গার মালিক শিশির ধর বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ কাজ করার সময় স্থানীয় আলী আহমদ নামের প্রভাবশালী ব্যক্তি ভাড়াটে লোকজন নিয়ে জায়গা দখলে হামলা করে। সেখানে মজুদ করে ইট ও বালু। জায়গার মালিক শিশির ধর জানান, বালু ও ইট মজুদের বিষয়টি চকরিয়া থানা পুলিশকে অবহিত করেন। তাৎক্ষনিক ওসির নির্দেশে থানার এসআই আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে দখলবাজ পক্ষকে বারণ করেন। ওইসময় অভিযুক্তরা এব্যাপারে বৈঠকে বসার জন্য সম্মত হন।
সংখ্যালঘু পরিবারের লোকজন জানান, দুই পক্ষের কথা মতো ২৬জানুয়ারী উভয়পক্ষের বিচারকদের নিয়ে বৈঠক অনুষ্টিত হয়। এতে দুই পক্ষের বিচারকরা কাগজপত্র পর্যালোচনা করে রায় দেন জায়গার মালিক সংঘ্যালঘু তিনটি পরিবার। ফলে রায়ের আদেশে শিশির পক্ষের বিচারক এডভোকেট হাবিব উদ্দিন মিন্টু ও আলী আহমদ পক্ষের বিচারক রশিদ আহমদ রায় দেন এখন থেকে সংখ্যালঘু পরিবার সমুহ ক্রয়কৃত সম্পদ হিসেবে জায়গায় থাকবে। অপরদিকে আলী আহমদ পক্ষকে জায়গা থেকে মজুদ করা ইট ও বালু অপসারণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয় লিখিত ওই রায়ে। এদিকে রায়ের একটি কপি ২৭ জানুয়ারী চকরিয়া থানার ওসির কাছে পাঠানো হয়েছে। একই সাথে শিশির ধরের করা থানার অভিযোগটি প্রত্যাহারের জন্য রায়ে বলা হয়েছে।
এদিকে সংখ্যালগু পরিবারের লোকজন অভিযোগ করেছেন, আগের দিন উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে ঘটনার ব্যাপারে একটি সন্তোষজনক সমাধান হলেও বর্তমানে অভিযুক্ত পক্ষের লোকজন ফের থানা ও আদালতে কাল্পনিক মামলা দায়ের করে ভুক্তভোগী পরিবার গুলোকে হয়রানির চেষ্টা করছেন। এ অবস্থায় ভুক্তভোগী সংখ্যালঘু পরিবারের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মো.কামরুল আজম বলেন, জায়গা ক্রয়ের ব্যাপারে কাগজপত্র সঠিক থাকলে কাউকে উচ্ছেদে করার এখতিয়ার কারো নেই। তারপরও কেউ সংখ্যালঘু পরিবার গুলোকে হয়রানীর চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অপরদিকে সংখ্যালঘু পরিবারের জায়গা জবরদখল চেষ্টায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন চকরিয়া উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক তপন কান্তি দাশ ও সদস্য সচিব বাবলা দেবনাথসহ পুজা কমিটির সকল নেতৃবৃন্দ।

পাঠকের মতামত: