ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় ভিসা প্রতারণার শিকার ডজনাধিক প্রবাসী

মোঃ নিজাম উদ্দিন, চকরিয়া ::
আদম ব্যবসায়ীর প্রতারণার শিকার হয়ে ডজনাধিক পরিবার সর্বস্বান্ত। ভিটেমাটি বিক্রি করে এখন তারা নিঃস্ব। এনজিওর টাকা পরিশোধ করতে না পেরে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ভুক্তভোগী পরিবার গুলো।
এদিকে কাতার থেকে প্রতিদিন বুক ফাঁটা আর্তনাদে স্বজনদের কাছে ফোন আসছে, “আমাদের দেশে ফিরিয়ে নাও। নাহয় বাংলাদেশ থেকে টাকা পাঠাও। দিনের পর দিন আমরা না খেয়ে আছি। মাসে ষাট সত্তর হাজার টাকা আয়ের কথা বলে এখানে এনে ফেলে রাখছে। কোথায় কাজ কোথায় বেতন! উপবাস থাকতে থাকতে আমরা হাঁটাচলা দুরের কথা, মুখ থেকে ঠিকমতো কথাও বের হচ্ছে না। দালাল বেলাল উদ্দিন আমাদের সর্বনাশ করেছে।” এ লোমহর্ষক ঘটনায় স্বজনদের কাছে অনেকে আত্মহত্যা করবে বলেও জানাচ্ছে।
চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের রংমহল গ্রামের নুরুল ইসলামের পুত্র বেলাল উদ্দিন নামের এক ভিসা প্রতারকের খপ্পরে পড়ে রংমহলসহ বিভিন্ন এলাকার ডজনাধিক পরিবার এখন সর্বস্বান্ত। মাসে ষাট সত্তর হাজার টাকা আয়ের ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বিনিময়ে কাতারে কোনো সুনির্দিষ্ট কাজ দিতে পারেননি। কাউকে পারমিট না দিয়ে পুরো টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। ফলে কাতার পৌঁছে গত তিন চার মাস ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন প্রবাসীরা। দেশে ফিরে আসতে চাইলেও আসতে দেয়া হচ্ছে না। অনাহারে এই ভুক্তভোগী লোকগুলো রাস্তার দ্বারে ও বিল্ডিংয়ের সানশেডের নিচে বসবাস করছে।
ভুক্তভোগীরা হলো ডুলাহাজারা রংমহল গ্রামের আবু তাহের সওদাগরের ছেলে শেফায়েত হোসেন, মৃত শাহ আলমের পুত্র আবু তালেব, ছব্বির আহমদের পুত্র ইমাম হোসেন, মৃত আবুল হোসেনের পুত্র জিয়াবুল করিম, মৃত এমদাদ হোসেনের পুত্র আবদুল কাদের, উত্তর পাড়া গ্রামের রিদুয়ানুল হক, কক্সবাজার সদর উপজেলা ঈদগাঁও মাইজ পাড়ার আহসান উল্লাহ, বদরখালী ৫নং ওয়ার্ডের আবুল হোসেনের পুত্র নুরুল আজমসহ ডজনাধিক ব্যক্তি।
আদম ব্যবসায়ী বেলাল উদ্দিন সবার কাছ থেকে চার-পাঁচ লাখ টাকা করে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদের কাতার পাঠিয়েছে। খবর নিয়ে জানা গেছে, ভিসা প্রতারক রংমহলের এ বেলাল উদ্দিন এলাকায় থাকতে প্রতিনিয়ত জুয়ার আসর বসাত। তাই তাকে জুয়াড়ি বেলাল বললেই সবাই চেনেন। বর্তমানে সে কাতার থেকে এসে দেশে অবস্থান করলেও সবার চোখে ধুলো দিয়ে নিজেকে গা ঢাকা দিয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারের অনেকে তার সাথে দেখা হলেও কোনপ্রকার সমাধানের আশ্বাস দিচ্ছে না।
স্থানীয় ডুলাহাজারা (৯নং ওয়ার্ড) রংমহল এলাকার ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন ঘটনার সত্যতা জানান। তার সাথে দেখা করে এর সমাধানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে তিনি জানায়। ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন জানায়, বেলাল উদ্দিনের সাথে কথা হয়েছে। সে এ বিষয়ে অতিশীঘ্রই সমাধান করবে বলে আশ্বস্ত করেছে।

পাঠকের মতামত: