গ্রেফতার আতঙ্কে ভিলেজার পাড়ায় পুরুষশুন্য
এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং বনবিটের জবর দখলে নেওয়া সংরক্ষিত বনভূমি উদ্ধার এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গিয়ে ৯ জন বন কর্মকর্তা-কর্মচারী অমানবিক পিটুনির শিকার হওয়ার ঘটনায় চকরিয়া থানায় মামলা রুজু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার হারবাং অভয়ারণ্য বনবিট কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বাদি হয়ে সরকারি কর্তব্যকাজে বাঁধা এবং বনকর্মীদের উপর হামলার ধারায় মামলাটি করেছেন। এজাহারে ১০জনের নাম উল্লেখ্য ছাড়াও আরো ২০০-২৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি দেখানো হয়েছে।
এদিকে মামলা নেয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের। তিনি বলেন, সরকারি কর্তব্যকাজে বাঁধা সৃষ্টি ও বনকর্মীদের উপর হামলার ঘটনায় গতকাল হারবাং বনবিট কর্মকর্তা বাদি হয়ে থানায় একটি এজাহার জমা দিলে সেটি মামলা হিসেবে রুজু করা হয়। এজাহারে দশজনের নাম উল্লেখ্য ছাড়াও দুইশত থেকে আড়াইশ ব্যক্তিকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
ওসি বলেন, মামলাটি তদন্তের জন্য হারবাং পুলিশ ফাঁিড়র এসআই (উপ-পরিদর্শক) মানিক কুমারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আসামি গ্রেফতারে অভিযান জোরদার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত: আগের দিন বুধবার দুপুর একটার দিকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য রেঞ্জর চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের ভিলেজার পাড়ায় জবর দখলে নেওয়া সংরক্ষিত বনভূমি উদ্ধার এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গিয়ে অমানবিক পিটুনির শিকার হন ৯ জন বন কর্মকর্তা-কর্মচারী। ওইসময় একশ থেকে দেড়শতাধিক লোক বনকর্মীদের চারিদিক থেকে ঘিরে ফিলে আটকে রেখে তাদেরকে গণপিটুনি দেয়।
পরবর্তীতে ঘটনার খবর পেয়ে চকরিয়া থানা ও হারবাং ফাড়ির পুলিশদল বিকাল তিনটার দিকে ঘটনাস্থল থেকে মাটিতে শোয়া অবস্থায় আহত আজিজনগর বনবিট কর্মকর্তা মো. আজহার আলী, হারবাং বনবিট কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ, ওয়াইল্ডলাইফ স্কাউট যথাক্রমে কামরুল আলম , মো. ইউসুফ, মানিক চন্দ্র দে, ফরেষ্ট গার্ড নীলিমেষ বৈরাগী ও শওকত উল্লাহ চৌধুরী, সিপিজি সদস্য করিম দাদ ও শফি আলমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অপরদিকে বনকর্মীদের উপর হামলার ঘটনায় থানায় এজাহারনামীয় দশজন ছাড়াও দুইশ থেকে আড়াই মানুষের বিরুদ্ধে মামলা রজু হবার খবর পেয়ে গ্রেফতারের ভয়ে গতকাল থেকে হারবাং ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের ভিলেজার পাড়া এবং আশপাশ এলাকার গ্রামগুলোতে পুরুষশুন্য হয়ে পড়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ ইসমাইল।
পাঠকের মতামত: