ঢাকা,রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন: ঘটনাস্থল পরিদর্শনে পুলিশ সুপার

নিজস্ব প্রতিবেদক :: চকরিয়ায় নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন: ঘটনাস্থল পরিদর্শনে পুলিশ সুপার।
চকরিয়ায় সুদের টাকার জন্য গৃহবধু নুর আয়েশাকে গাছের সাথে বেঁধে মারধর, শারিরীক নির্যাতন, শ্লীলতাহানি ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে নির্যাতনের শিকার গৃহবধু নুর আয়েশা বাদী হয়ে শওকত ওসমানকে প্রধান আসামী করে আরো পাঁচ জনের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন।

ওই মামলার এজাহারনামীয় ২নং আসামী জহির আহমদকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও ঘটনার মূলহোতাসহ অন্যান্য আসামীরা এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন।

এজাহারনামীয় অন্য আসামীরা হলেন- চকরিয়া উপজেলা বরইতলী ইউনিয়নের হাফানিয়াকাটার মোরাপাড়ার সুদি শওকত ওসমানের মা সাফিয়া খাতুন (৫০), তার স্ত্রী শাহিনা আক্তার (২৩)সহ অজ্ঞাত আরো দুইজন।

এদিকে, আজ  বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) সকাল ১০টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. হাসানুজ্জামান। এ সময় তিনি ভিকটিম ও তার পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলেন এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারপূর্বক শাস্তির আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান।

পরিদর্শনকালে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া-পেকুয়া সার্কেল) তফিকুল আলম ও চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের সাথে ছিলেন।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের চকরিয়া নিউজকে বলেন, গৃহবধূর উপর নির্যাতন ও শ্লীলতা হানির ঘটনার মুলহোতা মামলার এজাহার নামীয় ১ নম্বর আসামী শওকত ওসমান পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম অভিযান চালাচ্ছে। তবে এ মামলার ২ নম্বর আসামী জহির আহমদকে পুলিশ গ্রেপ্তারের পর আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে বিজ্ঞ আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য, কয়েক মাস পূর্বে নুর আয়েশা তার স্বামীর চিকিৎসার জন্য শওকত ওসমানের কাছ থেকে সুদের ওপর চার হাজার টাকা ধার নেয়। পরবর্তীতে নুর আয়েশা সুদ ও আসলসহ আট হাজার টাকা পরিশোধ করেন শওকত ওসমানকে। মঙ্গলবার দুপুরের শওকত ওসমান আরো দুই হাজার টাকা দাবি করেন নুর আয়েশার কাছ থেকে।

তিনি (নুর আয়েশা) ওই টাকা বৃহস্পতিবার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা মানতে রাজি হয়নি শওকত ওসমান। এনিয়ে দুইজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে শওকত ওসমান গৃহবধূ নুর আয়েশাকে একটি গাছের সঙ্গে শাড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর, শাররীক নির্যাতন ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।

এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ কোথাও অভিযোগ না দেয়ায় বিষয়টি গোপন থাকে। তবে বুধবার গৃহবধুকে গাছের সাথে বেঁধে শারিরীক নির্যাতনের ভিডিও চিত্রটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়লে টনক নড়ে প্রশাসনের। পরে পুলিশ তৎপর হয়ে একজন আসামীকে গ্রেপ্তার করে।

বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নিন্দার ঝড় উঠে। নির্যাতনের শিকার নুর আয়েশা উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের হাফালিয়াকাটা এলাকার দিনমুজুর আলী আহমদের স্ত্রী। এবং ঘটনার মুলহোতা সুদখোর শওকত ওসমান একই এলাকার জহির আহমদের ছেলে।

পাঠকের মতামত: