চকরিয়ায় ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে একটি বাঘ মারা যাওয়ার পর বর্তমানে বেস্টনীতে আছে এই তিনটি বাঘ। বুধবার দুপুরে তোলা ছবি।
নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কের নির্ধারিত বেস্টনীর ভেতরে ‘আঁিখ) নামের একটি বাঘের মৃত্যু ঘটেছে। সংশ্লিষ্টদের অযত্নে, অবহেলা, চিকিৎসা ও খাদ্যভাবের কারনে বাঘটি মারা গেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দা।
স্থানীয় লোকজনের দাবি, তিনদিন আগে বাঘটি মারা গেলেও পার্কের সংশ্লিষ্ঠরা বিষয়টি অতি গোপনে চামাচাপা দেয়ার চেষ্ঠা অব্যাহত রেখেছে। ঘটনার সত্যতা জানতে গতকাল বুধবার দুপুরে সরেজমিন সাফারি পার্কে গেলে দায়িত্বশীল কোন কর্মকর্তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। পার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা, বনবিট কর্মকর্তা এবং ভেটেরিনারী র্সাজনের ব্যবহৃত ব্যক্তিগত মুঠোফোন গুলোতে বারবার চেষ্ঠা করেও সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে বাঘ মারা যাওয়ার বিষয় নিয়ে কোন প্রকারের কথা বলতেই নারাজ।
তবে সাফারি পার্কের তত্তাবধায়ক বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষন বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) এসএম গোলাম মাওলা মুঠোফোন রিসিভ করেন। কিন্তু সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পর তিনি একটি মিটিংয়ে আছে ব্যস্ততার এমন অজুহাত দেখিয়ে সংযোগ কেটে দেন। এরপর বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বারবার চেষ্ঠা করেও ফোন রিসিভ না করায় বাঘের মৃত্যুর ঘটনা সর্ম্পকে তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
সাফারি পার্কের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মচারী জানিয়েছেন, রোববার রাতে সাফারি পার্কের বেস্টনী থাকা একটি মা বাঘ (বাঘিনী) মারা গেছে। ওইসময় সাফারি পার্কের ভেটেরিনারী সার্জন কর্মরত ছিলেন না, ফলে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক বাঘটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। বাঘের মৃত্যুর ঘটনাটি জানাজানি হলে পার্কের আশপাশের লোকজনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মহলে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।
স্থানীয় সুত্র জানায়, ঘটনার রাতে সংশ্লিষ্টরা অতি গোপনে পার্কের ভেতরে মারা যাওয়া বাঘটির মরদেহ মাটি খুঁেড় পুতেঁ ফেলে। এরপর থেকে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য পার্কের সংশ্লিষ্ঠ দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা মুঠোফোন বন্ধ করে দিয়ে কর্মস্থল থেকে কৌশলে গা ঢাকা দেয়। যাতে বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে কোন ধরণের বক্তব্য দিতে না হয়।
পার্কের একটি সুত্র জানিয়েছে, ঘটনার পরপর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এসএম গোলাম মাওলা পার্কের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদেরকে কৌশলে অন্যত্র অবস্থান নিতে নির্দেশ দেন। সাধারণ কর্মচারীদেরকে বারণ করেন পার্কে সাংবাদিক ঢুকলে বাঘের বিষয় ছাড়াও অন্য কোন বিষয়ে কথা বললে কোন ধরণের উত্তর না দিতে।
বাঘের মৃত্যুর ঘটনাটি অনুসন্ধানে বুধবার দুপুরে পার্কের বেস্টনীতে সরেজমিন গেলে সেখানে দেখা গেছে তিনটি বাঘ খাঁচার ভেতরে অবস্থান করছে। তারমধ্যে একটি খাঁচার ভেতরে ও অপর দুইটি খাঁচার বাইরে বেস্টনীর বিচরণ এলাকায় রয়েছে।
স্থানীয় লোকজন ও সাফারি পার্কের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মচারীরা জানিয়েছেন, সাফারি পার্কে মোট বাঘের সংখ্যা ছিল চারটি। একটি মারা যাওয়ার পর বর্তমানে তিনটি বাঘ বেস্টনীতে রয়েছে। তবে ঠিক কি কারনে বাঘটি মারা গেছে সেই ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা জানাতে পারেনি।
কারন জানতে বুধবার দুপুর থেকে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অনেকবার ফোন করা হয় পার্কের ভেটেরিনারী সার্জন মোস্তাফিজুর রহমানকে। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ না করার কারনে বাঘের মুত্যর বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি।
পাঠকের মতামত: