ঢাকা,শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় জোড়া খুন: ৫০ দিনেও জড়িত কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি ::
ঘটনার ৫০ দিন পার হলেও কক্সবাজারের চকরিয়ায় জোড়া খুনের মামলায় এখন পর্যন্ত জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। উল্টো আসামিদের আত্মীয়-স্বজনরা মামলার বাদীকে হুমকি–ধামকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

পুলিশ বলছে, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

জানা যায়, গত ১৬ এপ্রিল রাতে উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের নবীন সমবায় সমিতির সামনে শফিউল আলম (৪৭) ও মোহাম্মদ সেলিমকে (৪৩) গুলি ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনাটি ঘটে। নিহত শফিউল সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের উত্তর মানিকপুর গ্রামের মৃত আবু সালাম ও সেলিম নূর মোহাম্মদের ছেলে।

হত্যাকাণ্ডের তিন দিন পর নিহত শফিউল আলমের ভাই সামশুল আলম (৪৬) বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় আট থেকে ১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। পরে পুলিশ জোড়া খুনের ঘটনার তদন্ত শুরু করে।

আসামিরা হলেন–সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ওই এলাকার উত্তর পাড়ার জাহেদুল ইসলাম জাহেদ (৪৫), জসিম উদ্দিন বাবু (২৮), মমতাজুল আলম সিকদার (৪৮), মুবিনুল হক (৪৯), চিরিংগা ইউনিয়নের বুড়িপুকুর গ্রামের আব্দু সালাম (৩২), চরণদ্বীপের বাহাদুর (৩৮) ও কাকারা সাকের মোহাম্মদ চরের আবু তালেব (৩২)।

মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে মামলার বাদী সামগুল আলম, নিহত মো. সেলিম বর্তমান ইউপি সদস্য জাহেদুল ইসলাম জাহেদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে জাহেদ ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। নির্বাচনের জের ধরে ইউপি সদস্য জাহেদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে বিরোধ চলছিল।

ওই দিন মানিকপুর নতুন বাজার স্টেশনের নবীন সমবায় সমিতির সামনে বসেছিলেন শফিউল ও সেলিম। এ সময় ইউপি সদস্য জাহেদুল ইসলামের নেতৃত্বে পাঁচ থেকে ছয়জন যুবক অস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে সেলিমের ওপর হামলা চালায়। এ সময় শফিউল এগিয়ে গেলে তাঁকে গুলি ও কুপিয়ে আহত করা হয়। এরপর সেলিমকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়।

দুজনকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সেলিমকে মৃত ঘোষণা করেন। শফিউলের অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) প্রেরণ করা হয়। রাত ১টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।

বাদী সামশুল আলম বলেন, ‘দুজন মানুষ খুন হওয়ার ৫০ দিন পর হলেও একজন আসামিও গ্রেপ্তার হয়নি। বরং আসামির আত্মীয়-স্বজনরা আমাকে হুমকি দিচ্ছে। আমার ছেলেকে মিথ্যা মামলা ফাঁসিয়ে দিয়েছে। কিছু লোক এই মামলা নিয়ে বাণিজ্য শুরু করেছে। এ ঘটনায় খুন হওয়া সেলিমের মা বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন।’

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক অরূপ কুমার চৌধুরী বলেন, ‘মানিকপুর জোড়া খুনের মামলাটি খুবই গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চলছে। প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে আসামিদের অবস্থান নিশ্চিত করে ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িতদের ধরতে কাজ চলছে। দ্রুত সময়ে ভালো ফল পাওয়া যাবে।’

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘সুরাজপুর-মানিকপুরের জোড়া খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। পুলিশের একাধিক জায়গায় অভিযান চালিয়েছে। আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

পাঠকের মতামত: