এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: প্রেমের নামে প্রতারণা, শারিরিক সম্পর্কের ছবি ও ভিডিও ধারণ। অতঃপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রেমিকার আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ভাইরাল করার ঘটনায় অবশেষে নাঈম উদ্দিন নামের প্রতারক প্রেমিককে গ্রেফতার করেছে চকরিয়া থানা পুলিশ।
চকরিয়া উপজেলার একটি কলেজের একাদশ শ্রেনীতে পড়ুয়া ১৮ বছর বয়সী (ছদ্ম নাম রিপা আক্তার) ওই ছাত্রীর সঙ্গে বিগত তিন বছর পূর্বে বান্দরবান জেলার লামা থানার কেদারবাদ গ্রামের মৃত নাছির উদ্দিন এর ছেলে মোঃ নাঈম উদ্দিন (২২) এর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এই প্রেমের সম্পর্কের সুবাধে নাঈমের সাথে রিপার প্রতিনিয়ত মোবাইল ফোনে কথাবার্তা হতো। প্রায় সময় প্রেমিকের ছোট খাট আব্দার পূরণ করতো ওই ছাত্রী।
একসময় প্রেমিক নাঈম ওই ছাত্রী কাছে তার একান্ত ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও চায়। প্রথমে রাজি না হলেও বিশ্বাস এবং ভালবাসার কসম দিলে ভিডিও কলে নাঈমের সামনে আসে রিপা। সেই সুযোগে নাঈম রিপার আপত্তিরকর কিছু মোবাইল স্কীনশট ও মোবাইল স্কীন ভিডিও ধারন করে।
এক পর্যায়ে নাঈম রিপার সাথে একান্তে দেখা করতে চায়। বিগত ০৬/০৯/২০২০ তারিখ রাত ১০ ঘটিকার সময় নাঈম বান্দরবন এর লামা থেকে চকরিয়া আসে এবং স্থানীয় লোকজনের চোখ ফাঁকি দিয়ে রিপার শোবার ঘরে ঢুকে। রাতে রিপাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে এবং তা তার ব্যাক্তিগত মোবাইলে রেকর্ড করে রাখে।
ভোর হওয়ার আগেই নাঈম কৌশলে রিপার শোবার ঘর হইতে বাহির হয়ে বান্দরবন চলে যায়। এর পর থেকে নাঈমের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে নাঈম কল করলে নাঈম আর কল রিসিভ করে না।
পরবর্তীতে ফোন কল রিসিভ করলেও নাঈম রিপাকে তার মোবাইলে কল দিতে নিষেধ করে এবং কল দিলে তার ও রিপার একান্তমূহুর্তের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও অনলাইনে ভাইরাল করে দিবে বলে হুমকি দেয়।
এরপর গত ২২/০২/২০২১ তারিখ নাঈম “রিপা আক্তার“ (ছদ্ম নাম) নামে একটি ফেইক ফেইসবুক আইডি খুলে রিপার আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে যা ভাইরাল হয়ে যায়।
ভিকটিম ছাত্রী রিপার মা বিষয়টি জানতে পেরে চকরিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। চকরিয়া থানা পুলিশ অভিযোগটি মামলা হিসেবে রুজু করে এবং এর পরপরই শুরু হয় এজাহারভুক্ত আসামী নাঈমকে গ্রেফতারে অভিযান।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ জুন রাত ৮ টার সময় চকরিয়া থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম চকরিয়া থানাধীন বরইতলী ইউনিয়নের বানিয়াছড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্ত প্রতারক প্রেমিক মোঃ নাইম উদ্দিন (২২) গ্রেফতার করে এবং তার হেফাজত হতে উপরোক্ত ঘটনায় ব্যবহৃত একটি স্মার্টফোন জব্দ করে যার মধ্যে আলামত সংরক্ষিত ছিল।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের মুহাম্মদ জোবায়ের বলেন, এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন তৎসহ পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা রুজু হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামিকে গতকাল আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
পাঠকের মতামত: