নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
কক্সবাজার চকরিয়াস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কে প্রাণী মৃত্যু ও নিখোঁজ আশংকাজনক হারে বাড়ছে। বার্ধক্যজনিত ও নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে প্রাণী এবং অরক্ষিত সীমানার ২১ টি পয়েন্ট দিয়ে বের হওয়া হরিণ নিখোঁজ হচ্ছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ১ বছরে তিনটি সিংহ ও দুটি হাতি মারা যায় সাফারি পার্কে। তন্মধ্যে গত ৩০ ডিসেম্বর বার্ধক্যজনতি রোগ ও পিত্তথলিতে আড়াই কেজি ওজনের পাথর হওয়ায় মারা যায় ৮৬ বছর বয়সী হাতি রঙমালা। সৈকত বাহাদুর নামক ৩২ বছর বয়সী আরেকটি হাতি হৃদরোগে মারা যায় গত ২৮ নভেম্বর। বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগে গতবছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি মারা যায় ২২ বছর বয়সী সিংহ সোহেল। পার্কে সঙ্গী সম্রাটের সাথে মিলনের সময় আহত ১০ বছর ৮ মাস বয়সী সিংহী নদী ফিলাইনলিউকিমিয়া ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত বছরের ২২ এপ্রিল মারা যায়। সর্বশেষ চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি মারা যায় ১৬ বছর বয়সী সিংহ রাসেল। সিংহটি এনাপ্লাজমা ও বিউবমিয়া স্পিসিসে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। একই রোগে আক্রান্ত হয়ে জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছে রাসেলের বোন ১৫ বছর বয়সী সিংহী টুম্পা।
সূত্রমতে, একই সময়ে পার্কে উন্মুক্ত বিচরণরত প্রায় ৪’শ হরিণের মধ্যে ৩০-৪০টি হরিণ নিখোঁজ রয়েছে। এছাড়া অরক্ষিত সীমানা প্রাচীর দিয়ে বছরে কয়েকবার বন্যহাতি প্রবেশ করে নষ্ট করে গাছগাছালি, নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন দর্শনার্থীরা।
হরিণ নিখোঁজের ব্যাপারে সাফারি পার্কের তত্ত্বাবধায়ক মাজহারুল ইসলাম চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘প্রায় ৯’শ হেক্টরবিশিষ্ট সাফারি পার্কের বাউন্ডারি ওয়ালের ২১টি পয়েন্ট এখনো অরক্ষিত। ওই স্থান দিয়ে পার্কের হরিণ নিকটস্থ জঙ্গলে বের হলে ওৎ পেতে থাকা শিকারির খপ্পরে পড়ে আর পার্কে ফিরে আসতে পারে না। তবে কয়টি হরিণ নিখোঁজ রয়েছে তা জানা নেই। পার্কে অসংখ্য হরিণ রয়েছে। গণনার ব্যবস্থা থাকলে সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা যেত।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ১ থেকে ৪৫ বছর বয়সী ৪টি হাতি পার্কে রয়েছে। অসুস্থসহ তিনটি সিংহী ও একটি সিংহ আছে সাফারি পার্কে। অন্যান্য প্রজাতির প্রাণিগুলো রয়েছে সুস্থ-সবল। নিয়মিত দেখভালসহ পর্যাপ্ত খাদ্য দেয়া হচ্ছে পশু পাখিগুলোকে।’
তিনটি সিংহ ও দুইটি হাতির মৃত্যুর ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি প্রাণি মৃত্যুর আগে সুস্থ করে তুলতে প্রাণি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছিল। এরপরও বার্ধক্য এবং জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে ৫টি প্রাণি মারা যায় ও একটি চিকিৎসাধীন রয়েছে।’
পাঠকের মতামত: