নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়া :::
চকরিয়ায় চরণদ্বীপ ও রামপুরা চিংড়ি জোন এলাকা অশান্ত হয়ে উঠেছে। প্রতিদিনি ঘটে চলেছে চিংড়ি প্রকল্পে ডাকাতি ও লুটপাটের ঘটনা। ডাকাতির টাকা ভাগভাগি নিয়ে ডাকাত দলের মধ্যেও খুনাখুনির ঘটনা ঘটছে। এতে গত এক পক্ষকালের মধ্যে দুইজন নিহত ও অনেক চিংড়ি প্রকল্পে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ২৪ জুন ভোর রাতে চকরিয়ার রামপুর চিংড়ি জোন এলাকায় সশস্ত্র ডাকাত দলের গুলিতে নুরুল ইসলাম (৬০) নামের চিংড়ি প্রকল্পের এক পাহাদার নিহত হয়েছে। এসময় সশস্ত্র ডাকাত দল ৪টি চিংড়ি প্রকল্পে ডাকাতি করে চিংড়ি চাষীদের চিংড়িসহ মালামাল লুটপাট করে নিয়ে গেছে। নিহত নুরুল ইসলাম উপজেলার শাহারবিল ইউনিয়নের মৃত ওবাইদুলের পুত্র। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে।
শাহারবিল ইউপি চেয়ারম্যান মহসিন বাবুল জানান; ২৪ জুন ভোর রাত ৩টায় রামপর চিংড়ি জোনের শাহারবিল ইউনিয়নের কোরাল খালীর চাইল্যাপাড়াস্থ নুরুল আলম ও হাবিবের একটি চিংড়ি প্রকল্পে একদল সশস্ত্র ডাকাত দল হানা দেয়। এসময় ওই প্রকল্পের পাহারাদার নুরুল ইসলাম(৬০) ডাকাত দলের সদস্যদের চিনে ফেললে ডাকাতেরা তাকে গুলি করে হত্যা করে।
চিংড়ি চাষীরা জানায় ওই প্রকল্পে ডাকাত দল হানা দেয়ার আগে একই এলাকায় একই ডাকাতদল মন্জুর আলম ও নাজেমের সহ আরও ৪টি চিংড়ি প্রকল্পে ডাকাতি করে চিংড়িসহ মালামাল লুটপাট করে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় এক প্রভাবশালী ব্যক্তির বাহিনী জড়িত আছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়াও গত ৬ জুন রাতে চকরিয়ার চরণদ্বীপ চিংড়ী জোন চিরিঙ্গা ইউনিয়নের বালুচিরা ঘের জবর-দখল করতে গেলে বিবদমান দুই ডাকাতদলের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রতিপক্ষের ছোঁড়া গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন নুরুল আমিন (৩৫) নামের এক ব্যক্তি। পুলিশ নুরুল আমিনকে ডাকাত দলের সদস্য বলে উল্লেখ করেছেন। এ সময় আহত হন চিংড়ি ঘেরের মালিক চিরিঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের সাত নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মীর কাশেম (৩৫)। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় বসবাড়িতে গিয়েও সন্ত্রাসীরা বেশ কয়েকবার হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে। এসব সন্ত্রাসীদের এলাকার এক প্রভাবশালী ব্যক্তি লালন পালন করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশ জানায়; এসব সন্ত্রাসীদের ধরতে গেলে রাজনৈতিক দলের ওই প্রভাবশালী নেতা বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় । এসব অপরাধীদের ধরতে পুলিশি অভিযান চালানো হলেও বাধা হয়ে দাড়ায় মুখোশ পরিহিত ওইসব প্রভাবশালী আওয়ামীগ নেতারা।
ওইসব প্রভাবশালী আওয়ামীগ নেতারাই সশস্ত্র ডাকাত দলের লালন ও পালন কর্তা বলে চিংড়ী চাষিরা জানিয়েছেন। পুলিশ ওসব অপরাধীদেরকে আটক করলে প্রভাবশালীদের লাল ফোনে এদের ছেড়ে দিতে হয়। চকরিয়া সচেতন লাখো জনগন জানে, চিংড়ী জোনের ৪ সশস্ত্র ডাকাত দলের লালন পালন কারা করে থাকে।
চিংড়ি চাষীরা জানান; চিংড়ি জোন চরণদ্বীপ, সওদাগর ঘোনা, পালাকাটা, ডুলাহাজারা ও কোরালখালীর শতাধিক শীর্ষ সন্ত্রাসী প্রভাবশালী মহলের ছত্র ছায়ায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। চকরিয়ার চিংড়ি জোনে ডাকাত, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের উপদ্রব বেড়ে গেছে। সন্ত্রাসীদের নির্যাতন থেকে চিংড়ি চাষিদের রক্ষা করা যাচ্ছে না। প্রতিদিন ঘটে চলেছে চিংড়ি জোন এলাকার কোন না কোন চিংড়ি প্রকল্পে ডাকাতির ঘটনা। অন্যদিকে, অবৈধ জমি দখল-বেদখলে নিতে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি অস্ত্রধারীদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে অভিযোগ রয়েছে। চকরিয়া থানার ওসি বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, চিংড়ি ঘের এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো নয়। পুলিশ যাওয়ার আগেই অপরাধীরা নৌ পথে পালিয়ে যায়।
পাঠকের মতামত: