চকরিয়া প্রতিনিধি :: চকরিয়া পেৌরসদরের সরকারী হাসপাতাল সড়কের আশপাশের এলাকায় ভূয়া ডাক্তারের সংখ্যা আশংকাজনক হারে বেড়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। এক শ্রেণীর রোগীর শিকারী ডাক্তারদের কমিশনে নিয়োজিত দালালদের খপ্পরে পড়ে প্রতিনিয়ত প্রতারণা ও হয়রানীর শিকার হচ্ছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। দুর-দুরান্ত থেকে আগত অসহায় রোগীরা হাসপাতাল সড়কে আসার সাথে সাথে আগে থেকে উৎপেতে থাকা রোগী শিকারী দালালদের খপ্পরে পড়তে হয়। চকরিয়া সরকারী হাসপাতাল সড়কে দলবদ্ধ এসব দালালরা রোগীদের চলে-বলে-কেৌশলে ফুসলিয়েেএসব কথিত ভূয়া ডাক্তারদের কাছে নিয়ে যায়।
চকরিয়ায় এক কথিত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ভূল চিকিৎসা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভূল চিকিৎসার শিকার হওয়া ওই শিক্ষার্থীর নাম নোমান অভি (২৩)। অভি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ছাত্র। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ওই ছাত্র চিকিৎসা নিতে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দিকে যাচ্ছিল। ওই সময় সে এক দালালের ফাঁদে পড়ে। এ সময় দালাল তাকে ফুসলিয়ে ভূয়া হাসপাতাল সড়কের কথিত চিকিৎসক ষ্টিফেন গনসালভেস কাছে নিয়ে যান। পরে তিনি চিকিৎসা শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী অভি’র। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে সড়কে ঘটে এ ঘটনা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অভি অভিযোগ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় সে বাড়িতে বেড়াতে আসেন। কয়েকদিন ধরে তাঁর কানে সামান্য ব্যাথা হচ্ছিল। সোমবার সকালের দিকে সে চিকিৎসা নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নাক, কান ও গলা বিভাগের চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা জন্য যাচ্ছিল। এ সময় হঠাৎ এক দালাল তাকে পেছন থেকে ডেকে একজন ভাল ডাক্তার রয়েছে বলে একটি ওষুধের দোকানের উপরে নিয়ে যান।
অভি আরো বলেন, আমার থাইফয়েড ও ফুসফুসের আছে বলে ওই চিকিৎসক চিকিৎসাপত্র লিখে দেন। তার চেম্বারের পাশে একটা রুমে গিয়ে পরীক্ষা করাতে বলেন।এতে তার খরচ পড়বে সাড়ে ৭শত টাকা। তখন আমি থাইফয়েড ও ফুসফুসের কোন সমস্যা নেই বললেই ওই চিকিৎসক তার কথার সুর পাল্টে পেলেন। তখন আরো দুইটি পরীক্ষা দিতে চান। পরে চিকিৎসক তিনটি ওষুধ লিখে দেন। তিনি যা ওষুধ লিখে দিয়েছেন তা আমার রোগের সাথে কোন ধরণের সম্পৃক্ততা নেই। কথিত ওই চিকিৎসকের নাম হচ্ছে ষ্টিফেন গনসালভেস।
ষ্টিফেন গনসালভেস তাঁর চিকিৎসাপত্র ও সাইনবোর্ডে লিখেছেন, তিনি মেমোরিয়াল খ্রীষ্টান হাসপাতালের ডি.পি.এম.ডি.বি.ডি. (এম.সি.এইচ), (এক্স) এসিসটেন্ট মেডিকেল অফিসার এবং মালুমঘাট মা-মনি হাসপাতালের এ.আর.এম.ও। বাত-ব্যাথা-প্যারালাইসিস স্নায়ু রোগে বিশেষ অভিজ্ঞ।
তবে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শোভন দত্ত বলেন, চিকিৎসাশাস্ত্রে এই রকম কোন ধরণের ডিগ্রি নেই।ওই চিকিৎসকের পদবীতে যা লেখা রয়েছে তা সবই ভূয়া। এই বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে বসে তখন বিস্তারিত জানাবেন বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক ষ্টিফেন গনসালভেসের কাছে গেলে তিনি বলেন, আপনি ডাক্তারি আমার চেয়ে বেশী বুঝেন না আর আপনাকে এত কিছু বলতে আমি বাধ্য নই। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন সেখানে জবাব দিব।
পাঠকের মতামত: