কক্সবাজার প্রতিনিধি :: কক্সবাজার চকরিয়া উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের প্রধান সহকারী সহ অন্যান্য সহকর্মীদের অমানুষিক নির্যাতনে বিষপান করা একই অফিসের মহোরার দূর্জয় পাল মারা গেছেন। ২৩ সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে ৪ টায় কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আইসিউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন তিনি।
এদিকে তার বিষপানের জন্য দায়ী এবং বিভিন্ন সময় অমানুষিক নির্যাতনের জন্য চকরিয়া সাব রেজিস্ট্রি অফিসের প্রধান সহকারী নিবাস কান্তি পাল, মোহরার লিটন পাল, পিয়ন নাছির উদ্দিনকে দায়ী করে একটি চিরকুট লিখে গেছে দূর্জয় পাল।
সরেজমিনে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা দূর্জয় পালের স্বজনদের কান্নায় হাসপাতালের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে।
এ সময় দূর্জয় পালের স্ত্রী শিল্পী মল্লিক বলেন, আমার স্বামীকে দীর্ঘদিন ধরে নিবাস পাল, লিটন, নাছির সহ অফিসের সহকর্মীরা মানসিক ভাবে নির্যাতন করছিল। তারা আমার স্বামীকে তার কাজের বাইরে অতিরিক্ত কাজ দিত। কাজ পারে না বলে নাজেহাল করতো, তার শরীর থেকে গন্ধ উঠতো বলে ছোট করতো। এমনকি তাকে বস্তাভরে মেরে ফেলে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। সে এসব নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত বুধবার রাতে আমার স্বামী বিষপান করে আত্মহত্যার চেস্টা করে। সে খুরুশকুলের গুচ্ছগ্রাম এলাকায় গিয়ে বিষপান করে। পরে তাকে উদ্ধার করে এনে হাসপাতালে এনে চিকিৎসা করা অবস্থায় মৃত্যু বরণ করে। এ সময় তিনি নিবাস পাল সহ অন্যান্য দোষী ব্যাক্তিদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন।
এ সময় দূর্জয় পালের বড় ভাই বাবুল পাল বলেন, আমার ভাইকে নিবাস নির্যাতন করতো সেটা আমাদের অনেকবার বলেছে। আমি সে বিষয়ে নিবাসকে ফোনও করেছিলাম। মুলত তারা খুবই পরিকল্পিত ভাবে দূর্জয় কে ছোট করতো।কাজ থেকে দূরে রাখতো। দূর্জয় একটি চিরকুটে সব লিখে গেছে। শ্যালক সুমন মল্লিক বলেন, আমার বোন জামাইকে অমানুসিক নির্যাতন করে মৃত্যুর পথে ঠেলে দিয়েছে। আমরা মামলা করবো এবং খুনিদের বিচার চাইবো।
এ ব্যাপারে চকরিয়া সাব রেজিস্ট্রি অফিসের প্রধান সহকারী নিবাস পাল বলেন, দূর্জয় পাল আমার আত্মীয় হয়। তাকে মানসিক নির্যাতনের প্রশ্নই আসেনা। আমি শুধু অফিসের দায়িত্ব পালন করার জন্য সব সময় বলেছি।
চকরিয়া উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার অমিত মন্ডল চাকমা বলেন, আমার জানামতে অফিসে মানসিকভাবে নির্যাতনের কোন ঘটনা জানা নেই তাছাড়া কোন সমস্যা হলে আমাকে জানাতে পারতো। নিহত দূর্জয় পালের লাশ বর্তমানে হাসপাতালের মর্গে আছে।
উল্লেখ্য দূর্জয় পাল কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের পালপাড়ার মধুরাম পাল ও মনাসারানী পালের ছেলে। বর্তমানে শহরের বিজিবি ক্যাম্প এলাকায় থাকে। তার ১ মেয়ে ও ১ ছেলে রয়েছে তারা উভয়ে শহরের বর্ডার গার্ড স্কুলে পড়ে।
পাঠকের মতামত: