চকরিয়া অফিস :: চকরিয়া উপজেলার চকরিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিস দূর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। উপজেলার ১৪১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে শিক্ষা উপকরণ ক্রয় ও ক্ষুদ্র মেরামত খাতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা শিক্ষা বিভাগের ছয় সদস্যের ক্রয় কমিটি অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে বিদ্যালয়ের নামে সরকারিভাবে বরাদ্দের সিংহভাগ টাকা হরিলুটে মেতে উঠেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এ ঘটনায় শিক্ষক মহলে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৭-১৮অর্থবছরে চকরিয়া উপজেলার ১৪১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য শিক্ষা উপকরণ ক্রয় ও ক্ষুদ্র মেরামত খাতে বিপুল টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। নীতিমালা মতে বরাদ্দের টাকা বিদ্যালয় গুলোতে বিতরণের নিয়ম থাকলেও বর্তমান উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ারুল কাদের কৌশলে নতুন নিয়ম চালু করেছেন। সেইজন্য তিনি বিদ্যালয়ের নামে শিক্ষা উপকরণ ক্রয় ও ক্ষুদ্র মেরামত খাতে খবরদারি করতে ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি ক্রয় কমিটি গঠন করে দিয়েছেন।
কমিটির সদস্যরা হলেন সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা আবু জাফর, চিরিঙ্গা মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তছলিম উদ্দিন, রামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এরফানুল কবির, মধ্যম সওদাগরঘোনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহাব উদ্দিন, বাটাখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সিরাজুল করিম, রেডক্রিসেন্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিনহাজ উদ্দিন। কমিটির সকল কার্যক্রম তদারক করছেন উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ারুল কাদের। নৈপথ্যে রয়েছেন অফিস সহকারি আবদুর রাজ্জাক।
অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়ের নামে শিক্ষা উপকরণ ক্রয় ও ক্ষুদ্র মেরামত খাতে ৬ সদস্য বিশিষ্ট উল্লেখিত ক্রয় কমিটি ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে কমদামের মাল বেশি দামে ক্রয়ের ভাউচার সংযুক্ত করে জুনমাসে বরাদ্দের টাকা হরিলুটে নিয়েছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষকদের অভিযোগ মতে, দুই হাজার থেকে ২২শত টাকার মাল ক্রয় কমিটি ভাউচার তৈরী করতে চার হাজার টাকায় কেনা হয়েছে। ৩২শত থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা দামের একটি কম্পিউটার প্রিন্টার ভাউচার দিচ্ছে ৫ হাজার টাকার। একশত ২০ টাকা থেকে দেড়শত টাকা দামের একটি স্কুল ব্যাগ ক্রয় করে তাঁরা ভাউচার দিচ্ছে আড়াইশত টাকার। ভ্যাটের নামে প্রতিটি বিদ্যালয় থেকে ৮ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছে।
সরকারিভাবে প্রতিটি বিদ্যালয়ের জন্য স্লিপ কমিটির জন্য ৪০ হাজার, প্রাকপ্রাথমিক খাতে পাঁচ হাজার, রুটিন মালামাল ক্রয়ের জন্য পাঁচ হাজার ও মিড ডে মিল প্রকল্প খাতে ১০টি বিদ্যালয়ের জন্য প্রতিবছর বিপুল টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। পাশাপাশি বেশি ক্ষতিগ্রস্থ বিদ্যালয় গুলো মেরামতের জন্য দেয়া হয় ক্ষুদ্র মেরামত প্রকল্পের অধীনে এক লাখ টাকা করে অর্থবরাদ্দ। মুলত ক্রয় কমিটি এসব খাত থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয় গুলোকে উপবৃত্তির আওতায় সুবিধা নিশ্চিতে কম্পিউটারে এন্ট্রি করার নামে জিয়াউল করিম খোকন নামের এক শিক্ষক চকরিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসে বসে পাঁচশত টাকা করে করে আদায় করছেন। উপজেলা শিক্ষা অফিসের এ ধরণের বানিজ্য বন্ধের মাধ্যমে শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক সমাজ। ##
পাঠকের মতামত: