ঢাকা,শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়া বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক ‘ওয়াইল্ডবিস্ট’ দম্পতির ঘরে অতিথি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::

দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আনা বিরল প্রজাতির ‘ওয়াইল্ডবিস্ট’ দম্পতির ঘরে অতিথি এসেছে। বুধবার রাতে পার্কের নির্দিষ্ট বেষ্টনীতে আরেকটি বাচ্চা প্রসব করে ওয়াইল্ডবিস্ট। এ নিয়ে তিনটি বাচ্চা দিল কালো প্রজাতির এই ওয়াইল্ডবিস্ট দম্পতি। যা দেশের ইতিহাসে বিরল।

সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী চকরিয়া নিউজকে জানান, বাচ্চাটির ওজন আনুমানিক এক কেজি। এটি বেশ সুস্থ আছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে একমাত্র চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কেই প্রজনন হল দক্ষিণ আফ্রিকার উত্তর-পূর্ব প্রদেশের কালো প্রজাতির ওয়াইল্ডবিস্টের। ইতোপূর্বেও কয়েক বছরের ব্যবধানে দুটি বাচ্চা প্রসব করেছিল এই দম্পতি। ২০০৬ সালে পার্কে প্রথমবারের মতো দুটি ওয়াইল্ডবিস্টের বাচ্চা আনা হয় দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। বর্তমানে তাদের সংসারে সদস্য সংখ্যা পাঁচজনে দাঁড়াল। এর মধ্যে একটি পুরুষ, তিনটি স্ত্রী। নতুন প্রসবকৃত বাচ্চাটির লিঙ্গ এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।’

পার্ক সূত্র জানায়, বাংলাদেশের মাত্র দুটি জায়গায় দক্ষিণ আফ্রিকার উত্তর-পূর্ব প্রদেশের কালো প্রজাতির ওয়াইল্ডবিস্ট রয়েছে। এর মধ্যে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে এবং গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এবং চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক আবু নাছের মো. ইয়াছিন নেওয়াজ চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়াইল্ডবিস্ট দম্পতি এদেশেও তাদের আপন নিবাসের মতো আবাসস্থল খুঁজে পেয়েছে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠা এই পার্কের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে। তৃণভোজী এই প্রাণী এখানকার পরিবেশের সঙ্গে সহজে খাপ খেয়ে যায়। আর এতেই প্রজননের ক্ষেত্রে একের পর এক সফলতাও এসেছে।’

পার্কের প্রধান কর্মকর্তা আরো জানান, ওয়াইল্ডবিস্ট দলবদ্ধভাবে থাকতে পছন্দ করে। এরা তৃণভোজী  প্রাণী। তারা ঘাস, সবজি ও লতাপাতা খেয়ে জীবনধারণ করে। প্রতিবছর মে থেকে জুলাই মাসের মধ্যেই এই প্রাণীর প্রজনন হয়। সর্বোচ্চ ২৮ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে ওয়াইল্ডবিস্ট। এই বন্যপ্রাণীর গড়ে উচ্চতা হয় ১ দশমিক ৩ সেন্টিমিটার থেকে ১ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত। জন্ম নেওয়া বাচ্চা ৫ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত মায়ের দুধ খেয়েই বড় হয়। তবে বয়স তিন মাস হলেই একটু একটু করে কচি ঘাস খাওয়ার অভ্যাস শুরু করে। প্রাপ্তবয়স্ক ওয়াইল্ডবিস্ট ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত দৌঁড়াতে পারে। বয়স ৭ থেকে ৮ মাস হলেই প্রজনন ক্ষমতা আসে ওয়াইল্ডবিস্টের।

পাঠকের মতামত: