এম জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::
আগামী ২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হচ্ছে বহুল প্রতিক্ষিত কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও কাউন্সিল ২০২২। কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছেন। এরই অংশ হিসেবে চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের অধীন ৯টি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর তালিকাও তৈরি জেলা কমিটির কাছে জমা দিয়েছেন। গত ২৪ সেপ্টেম্বর চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় কক্সবাজার জেলা ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর তালিকা চুড়ান্ত ভাবে অনুমোদন করা হয়েছে।
জানা গেছে, চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ঘিরে ইতোমধ্যে সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থী সরব হয়ে উঠেছেন। অবশ্য আগে থেকে সম্ভাব্য আওয়ামী লীগ নেতারা প্রার্থীতা ঘোষণা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নানাভাবে সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক পদে ভোট করতে ইচ্ছা প্রকাশ করে দলের কাউন্সিলর, নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ী সবার দোয়া কামনা করছেন। এরই অংশ হিসেবে গতকাল শুক্রবার ২৬ আগস্ট চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি পদে লড়বেন বলে জানিয়েছেন। তিনি শুক্রবার জুমার নামাজের পর নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক টাইমলাইনে চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে নিজেকে প্রার্থীতা ঘোষণা করে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর, নেতাকর্মী ও সমর্থন সবার দোয়া চেয়েছেন।
নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী লিখেছেন, সম্মানিত কাউন্সিলর ও ডেলিগেট এবং আওয়ামী পরিবারের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ, ভাই,বন্ধু,বোন,তৃণমূলে নেতা-কর্মী ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার/আদব।
আগামী ২ সেপ্টেম্বর চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত সম্মেলন ও কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ও মাঠ পর্যায় থেকে বেড়ে ওঠা তৃণমূল নেতা-কর্মীদের ভালবাসায় এবং দলের সুষ্ঠধারা ফিরে আনার জন্য এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার ভিশন-২০৪১ সাল বাস্তবায়ন করার লক্ষে আমি মেয়র আলমগীর চৌধুরী চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিলে সভাপতি পদের প্রার্থীতা ঘোষাণা করছি।
তিনি বলেন, ১৯৮৩ সাল থেকে আমি ছাত্ররাজনীতি থেকে শুরু করে আজ বর্তমানে আপনাদের সকলের প্রত্যক্ষ ভোটে জনপ্রতিনিধি হয়ে একটি অবহেলিত ও উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত চকরিয়া পৌরসভার উন্নয়নের মাধ্যমে আপনাদের সবার খাদেম হয়ে সেবা করে যাচ্ছি ।বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জন্ম লগ্ন থেকে আমার পরিবার ও আমি এবং আত্মীয়-স্বজন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আর্দশ বুকে ধারণ করে আওয়ামী লীগ রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত আছে।আমি কখনো অন্য দল থেকে এসে আওয়ামী লীগ রাজনীতি সাথে যুক্ত হয় নাই।আমি ছোটকাল থেকে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আর্দশ বুকে ধারণ করে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত আছি।চকরিয়ার রাজপথে নেতা-কর্মিদের নিয়ে আন্দোলন সংগ্রামে ছিলাম।দলের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য এবং নেতা-কর্মীদের যখন যেটা প্রয়োজন সেটা করেছি।কখনো দলের সিদ্ধান্ত থেকে পিছপা হয়নি।আমার বড় ভাই নুরুল কাদের বি.কম অবিভক্ত(চকরিয়া-পেকুয়া) আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন।
চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সাল ও ২০২১ সালে গোয়েন্দা সংস্থা রির্পোট,চকরিয়া পৌরসভার আপামর জনসাধারণ এবং তৃণমূল নেতা-কর্মীদের ভালবাসায় আমাকে চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে টানা দুইবার মনোনয়ন দিয়েছেন।চকরিয়া পৌরসভার আপামর জনসাধারণ ও নেতা-কর্মী এবং অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ভালবাসায় আমি দুইবার মেয়র পদে প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়েছি।আমি ২০১৬ সাল থেকে মেয়র পদে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অবহেলিত চকরিয়া পৌরসভাকে আধুনিক পৌরসভা গড়ে তুলার জন্য রাত-দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি ।চকরিয়া পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে সকল রাস্তা টেন্ডার হয়ে এখন প্রায় সকল রাস্তা উন্নয়ন কাজ শেষ হবার পথে।তারমধ্যে সকল ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা,প্লাট সলিং রাস্তা,আরসিসি রাস্তা,আরসিসি ড্রেন,ছোট কালর্ভাট,বড় কালর্ভাট,যানজট নিরাসনে জন্য ৪ তলা বিশিষ্ট হোলসেল মার্কেট,কিচেন মার্কেট,কলার আড়ৎ,ফলের আড়ৎ,৪ তলা বিশিষ্ট কমিউনিটি সেন্টার,পরিষ্কার পানির জন্য পাইপ লাইন,পৌরসভার উন্নয়ন কাজের জন্য অসংখ্য গাড়ি সহ উন্নয়ন কাজ।
তিনি বলেন, আমি রাজনীতি শুরু থেকে আগে এবং মেয়র পদে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দলের নাম ভাঙ্গিয়ে ১ খড়া জায়গা ক্রয় করি নাই এবং আমার নামে বাড়ি করি নাই।আমি যেখানে থাকি সেটা আমার বাবার নিজস্ব বাড়ি।আমি সবসময় সততা সাথে সুন্দরভাবে জীবন-যাপন করার জন্য চেষ্টা করেছি।আমি দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয় এমন কাজ যথাঃ দখল বাজী, চাঁদাবাজী,মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসা,থানায় গিয়ে অন্যায় ভাবে কারো জন্য সুপারিশ করা,বিচার বানিজ্য,দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি অন্যায়,অবিচার ও অত্যাচার,দলীয় নৌকা প্রতিকের বিরোধীতা কখনও করি নাই।
সভাপতি প্রার্থী আলমগীর চৌধুরী বলেন, আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একজন কর্মী হিসাবে ছাত্ররাজনীতি শুরু করি।
# সাবেক সভাপতি-চকরিয়া কেন্দ্রীয় উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্রলীগ।
# সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি-চকরিয়া পৌরসভা ছাত্রলীগ।
# সাবেক সাধারণ সম্পাদক-চকরিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ # সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি-চকরিয়া পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক লীগ। # সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বৃহত্তর(চকরিয়া-পেকুয়া) উপজেলা আওয়ামী লীগ। # সাবেক যুগ্ম আহবায়ক-চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ। # সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক-চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ।
#বর্তমান ২০১৩ সাল থেকে চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছি।
আমার রাজনৈতিক জীবনে কখনো দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী বা নৌকা বাহিরে ভোট করিনি। অথচ তারা আপনারা সবাই জানেন চকরিয়া পৌরসভার নির্বাচনে দলের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় থেকে নিজের স্বার্থের জন্য নৌকা প্রার্থীর বিপক্ষে গিয়ে ভোট করেছে এবং দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে।
আমি পৌরসভা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর ও ডেলিগেট এবং তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সকলের দোয়া,সমর্থন ও সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।
আমি কথা দিচ্ছি, ওয়াদা করছি যতদিন বাঁচবো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আপার ভ্যানগার্ড হিসাবে দলের জন্য কাজ করে যাবো এবং জনপ্রতিনিধি হিসাবে দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা আপার ২০৪১ সাল ভিশন বাস্তবায়ন করার লক্ষে কাজ করে যাবো।তার ধারাবাহিকতায় চকরিয়া পৌরসভাকে একটি আধুনিক ডিজিটাল পৌরসভা হিসাবে গড়ে তুলবো।
পরিশেষে সম্মানিত কাউন্সিলর ও ডেলিগেট ভাই,বন্ধু ,নেতা-কর্মীদের প্রতি আমার আহবান আমি চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হলে পদ-পদবী বাণিজ্য মুক্ত,রাজপথে ত্যাগী তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করে কমিটি গঠন করবো।ইনশাআল্লাহ।
পাঠকের মতামত: