লিটন কুতুবী, কুতুবদিয়া-কক্সবাজার :::
কক্সবাজারের কুতুবদিয়া দ্বীপের বড়ঘোপ ইউনিয়নের আজম কলোনী গ্রামের লবণ মাঠে দুর্বৃত্তরা ভূমিহীন মানুষের জমি দখল করতে গিয়ে হামলায় গুলিবিদ্ধসহ আহত ২০জন প্রান্তিক লবণচাষী। এ ঘটনায় প্রান্তিক লবণচাষী পেচুমিয়া বাদি হয়ে মনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী মুকুলকে প্রধান আসামী করে ২৮সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা রুজু হয়েছে বলে ওসি অংসা থোয়াই এ প্রতিনিধিতে নিশ্চিত করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী কুতুবদিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আছাদ উল্লাহ চৌধুরী জানান, গত রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় আজমকলোনী গ্রামের শতাধিক প্রান্তিক লবণ চাষি মাঠে কাজ করছিল। হঠাৎ করে কৈয়ারবিলের বাসিন্দা মুকুল অস্ত্রধারী ২০/২৫জন সন্ত্রাসী নিয়ে মাঠে লবণ উৎপাদন কাজে কর্মরত শ্রমিকদেরকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গোলাগুলি বর্ষন করে। এ সময় ১১ জন গুলিবিদ্ধ হয়। এছাড়াও আহত হয়েছে আরো ১০জন। কুতুবদিয়া হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বড়ঘোপ ইউনিয়নের মনোহরখালী গ্রামের আবুল কাসেমের ছেলে রাশেদ (২৮), আব্দু শুক্কুরের ছেলে জাফর আলম (৬০), মৃত সফর মুল্লুুকের ছেলে রহিম উল্লাহ (৭০), সোবাহানের ছেলে আমির হামজা (৩০), মাহামুদুল হকের ছেলে মোঃ হোসেন (২৫) একই ইউনিয়নের আজমকলোনী গ্রামের মোহাম্মদের ছেলে পেঁচু মিয়া (৫০), জাকের হোছাইনের ছেলে মোহাম্মদ হোসন (৫০), মৃত খুইল্ল্যা মিয়ার ছেলে জালাল আহমদ (৭৫), জালাল আহমদের ছেলে আনোয়ার হোছাইন (৪০), জালাল আহমদের ছেলে বেলাল হোছাইন (২৮), নজির আহমদের ছেলে মোঃ বেলাল (৩৪)। আহতদের মধ্যে গুরুত গুলিবিদ্ধ জালাল,আনোয়ার, রাসেদ, রহিম উল্লাহ, পেচুমিয়া,মোঃ হোসেনসহ ৬ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ বাকী ৫জনকে কুতুবদিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি দেয়া হয়। অন্যান্য আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে বলে কুতুবদিয়া সরকারি হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার জয়নাল আবেদীন এ প্রতিনিধিকে নিশ্চিত করেন।
গুলিবিদ্ধ মামলা বাদি পেচুমিয়া সাংবাদিদের জানান, গত ৫ ফেরুয়ারী (রবিবার) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মুকুল আধুনিক অগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত ২০/২৫জনের একদল সন্ত্রাসী নিয়ে লবণ মাঠে কাজে ব্যস্ত প্রান্তিক লবণ চাষিদের উপর এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। এসময় সন্ত্রাসীদের গুলির শব্দে প্রাণ ভয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় উপরোক্ত চাষিরা গুলিবিদ্ধ হয় বলে তিনি জানান।
কুতুবদিয়া উপজেলা আ’লীগের সভাপতি আওরঙ্গজেব মাতবর এ প্রসঙ্গে বলেন, কৈয়ারবিল ইউনিয়নের বাসিন্দা মরহুম ডাক্তার জাবের আহমদ চৌধুরী ১৯৭১ সনে স্বাধীনতা বিরোধী পাকিস্তানের পক্ষে থানা শান্তি কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন। তারই ছেলে মনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী মুকুল। বর্তমানে সে আ’লীগ সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য সাধারণ মানুষের উপর গুলি চালিয়ে সম্পদ লুট করার নাম দিয়ে আইনশৃংখলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটাচ্ছে। তার ব্যাপারে আইনশৃংখলা বাহিনী বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ জানান।
বেড়িবাঁেধর বাইরে পানি উন্নয়ন বোর্ড(পাউবো)’র জমি লীজ নিয়ে প্রান্তিক লবণচাষী আর লীজ গ্রহীতার সাথে জমি দখল বেদখলকে কেন্দ্র করে আগে থেকেই উত্তেজনা চলে আসছিল এবং পূর্বেও উভয় পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে কুতুবদিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অংসা থোয়াই‘র সাথে কথা হলে তিনি জানান, রবিবার সকালে আজম কলোনী গ্রামে গোলাগুলির সংবাদ পেয়েই একদল ফোর্স পাঠানো হয় এবং তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।
পাঠকের মতামত: