ঢাকা,সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫

কিশলয় শিক্ষা নিকেতন স্কুলে বিলুপ্ত কমিটির স্বাক্ষর নিয়ে বিল ভাউচার করার অভিযোগ 

চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী কিশলয় আর্দশ শিক্ষা নিকেতন স্কুলে সরকারি আদেশ লঙ্ঘন করে বিলুপ্ত ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে সভা সেমিনার করার পাশাপাশি বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের বিপরীতে  বিল ভাউচার পাশ করানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একইভাবে বিলুপ্ত কমিটির সদস্যদের নিয়ে সোমবার ১৩ জানুয়ারি পুনরায় স্কুলে সভা ডেকেছেন ম্যানেজিং কমিটির সদস্যসচির ও কিশলয় শিক্ষা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম।
সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক আগের কমিটি বাতিল হলেও সেই আদেশ উপেক্ষা করে প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম বিলুপ্ত কমিটির সদস্যদের নিয়ে সভা থেকে শুরু সবকিছু করছেন এধরণের  অভিযোগ তুলে বিদ্যালয়ের পাঁচজন সচেতন অভিভাবক বাদি হয়ে শনিবার ১১ জানুয়ারি চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দপ্তরে অবহিত পুর্বক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ইউএনও মোহাম্মদ আতিকুর রহমান পদাধিকার বলে খুটাখালী কিশলয় আর্দশ শিক্ষা নিকেতন স্কুলের সভাপতি।
লিখিত অভিযোগে আবেদনকারী অভিভাবকরা জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহনের পর ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমুহের বিদ্যামান ম্যানেজিং কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে এডহক কমিটি গঠনের জন্য নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে।
সেই নির্দেশনা মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমুহে এডহক কমিটি গঠন পুর্বক পরিচালিত হলেও সরকারি এই আদেশ শুধু লঙ্ঘন করা হচ্ছে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী কিশলয় আর্দশ শিক্ষা নিকেতন স্কুলে। সরকারি আদেশ জারির পর ৫ মাস সময় অতিবাহিত হলেও এখনো কিশলয় শিক্ষা নিকেতনে গঠন করা হয়নি এডহক কমিটি। উল্টো প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গঠিত কমিটির (বিলুপ্ত কমিটি) সদস্যদের নিয়ে নিজের ইচ্ছে মতো করে বিদ্যালয়ের সাচিবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
কিশলয় শিক্ষা নিকেতন স্কুলের অভিভাবক মনজুর আলম, রমজান, আলী আকবর, শফিউল আলম, আবদুর রহমান অভিযোগ করে বলেন,  যেখানে সরকার সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোর বিদ্যামান বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে নতুন এডহক কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, সেখানে আদালত থেকে বিদ্যালয় কমিটি বহাল  সংক্রান্ত পদক্ষেপ নিয়ে আসা কতটুকু যৌক্তিক। এধরণের সিদ্ধান্ত, প্রবিধান মালা ২৪ এর ৬৯ অনুচ্ছেদ এর পরিপন্থি। মুলত এটি করার একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে, স্কুলের তহবিলের টাকা আত্মসাত, সম্পদ লুন্টন ও প্রশাসনিকসহ সামগ্রিক কর্মকাণ্ডে পুকুরচুরি সহজ করার জন্য প্রধান শিক্ষকের অপকৌশল।
এব্যাপারে খুটাখালী কিশলয় শিক্ষা নিকেতন স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম বলেন, আমার স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ এখনো আছে। তাই কমিটির সদস্যদের নিয়ে সভা করা হচ্ছে। শুধুমাত্র  সভাপতি পদে বদল হয়ে চকরিয়ার ইউএনও স্যার নতুন সভাপতি হয়েছেন।
তিনি বলেন, শিক্ষাবোর্ড কতৃক যখনই নির্দেশনা সহকারে পত্রাদেশ পাওয়া যাবে, তখন স্কুলের এডহক কমিটি গঠন করবো।
এব্যাপারে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড.বিপ্লব গাঙ্গুলি বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে নতুন এডহক কমিটি গঠনের আদেশ দেওয়া হয়েছে। সেখানে বিলুপ্ত কমিটির সদস্যদের নিয়ে সভা করার কোন সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, সরকারি নির্দেশনা ছিল একমাসের মধ্যে স্কুলের এডহক কমিটি গঠন করতে হবে। যদি সেই নির্দেশনা কিশলয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক লঙ্ঘন করে থাকেন, তাহলে অভিযোগ প্রাপ্তি সাপেক্ষে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: