ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

 করোনার রেড জোন চকরিয়া পৌরসভা ও ডুলাহাজারার তিন ওয়ার্ডে লকডাউন আজ থেকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::  করোনার বিস্তার ঠেকাতে কক্সবাজার পৌরসভার পর এবার চকরিয়া পৌরসভা (পুরো এলাকা) এবং ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ২, ৩ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে। এসব এলাকা আজ রোববার থেকে আগামী ১৪ দিন লকডাউন থাকবে। আজ ৭ জুন থেকে আগামী ২১ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত নিয়ন্ত্রিত থাকবে সবকিছু। তবে কিছু ক্ষেত্র লকডাউনের বাইরে থাকবে।
কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জেলা ও উপজেলা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এসব এলাকায় বিশেষ ব্যবস্থা হিসেবে রেড জোন শনাক্ত করে ১৪ দিনের লকডাউন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকালে এ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ। এর আগে শুক্রবার রাতে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বিশেষ আইন-শৃক্সখলা সংক্রান্ত জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ইউএনও। প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম। উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি মেজর মো. জুবায়ের, উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান, পৌর মেয়র আলমগীর চৌধুরীসহ করোনা প্রতিরোধ কমিটির সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও নেতৃবৃন্দ।
এ ব্যাপারে চকরিয়ার ইউএনও সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে রেড জোনের আওতায় পড়া এলাকায় ১৪ দিনের লকডাউন কার্যকর করা হবে অনেকটা কারফিউর মতো। এই সময়ে সর্বসাধারণকে বাড়িতে অবস্থান করতে হবে। কেউ বাইরে থেকে এলে তাদেরকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। লকডাউন চলাকালীন কর্মহীন যেসব শ্রমজীবী পরিবার রয়েছে তাদের তালিকা করে বাড়ি বাড়ি খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে গণপরিবহন চলাচল করবে। তবে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানতে বাধ্য করা হবে।
রেড জোনের জন্য জরুরি ঘোষণা : কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এগুলো হলো : সকল প্রকার ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক গণজমায়েত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জনসাধারণ নিজ নিজ আবাসস্থলে অবস্থান করবে। রেড জোন এলাকায় ইজিবাইক টমটম, সিএনজিসহ সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। সকল ব্যক্তিগত ও গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বহনকারী হালকা ও ভারী যানবাহন রাত ৮টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত চলাচল করতে পারবে। কোভিড-১৯ মোকাবেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি গাড়ি চলাচলে জেলা প্রশাসনের অনুমতি লাগবে। অ্যাম্বুলেন্স, রোগী পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ব্যক্তিবর্গের (অন ডিউটি) পরিবহন, কোভিড-১৯ মোকাবেলা ও জরুরি সেবা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের গাড়ি আওতার বাইরে থাকবে। সকল প্রকার দোকান, মার্কেট, হাট-বাজার, ফুটপাতের দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। কেবলমাত্র শনিবার, সোমবার ও বুধবার কাঁচাবাজার এবং শুক্রবার, শনিবার, সোমবার ও বুধবার মুদি দোকান স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে সকাল ৮টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত খোলা যাবে। ওষুধের দোকান এর বাইরে থাকবে। কোভিড-১৯ মোকাবেলা ও জরুরি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সীমিত আকারে খোলা থাকবে। সকল হাসপাতাল, চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও কোভিড-১৯ মোকাবেলায় পরিচালিত ব্যাংকিং সেবা আওতার বাইরে থাকবে। রেড জোনে জরুরি সংবাদ সংগ্রহের জন্য নির্বাচিত সংবাদকর্মী এবং কোভিড-১৯ মোকাবেলায় রেডজোনে কাজে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবীদের চকরিয়ার ইউএনও কর্তৃক ছবিযুক্ত বিশেষ পরিচয়পত্র দৃশ্যমান অবস্থায় গলায় ঝুলানো থাকা সাপেক্ষে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে। প্রকাশ্য স্থানে বা গণজমায়েত করে কোনো প্রকার ত্রাণ, খাদ্যসামগ্রী বা অন্য কোনো পণ্য বিতরণ করা যাবে না। ওয়ার্ড কমিটিসমূহ নির্দেশনাবলী কঠোরভাবে বাস্তবায়নে দায়িত্ব পালন করবে।
প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে কক্সবাজার পৌরসভায় গত ৬ জুন প্রথম রেড জোন ঘোষণা করা হয়। ওই দিন থেকেই শুরু হয়েছে ১৪ দিনের লকডাউন।

পাঠকের মতামত: