কক্সবাজারের ৮ উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মরত নকল নবিশরা (এক্সট্রা মোহরার) এবার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করছে। আজ রবিবার থেকে আগামী একসপ্তাহ পর্যন্ত চলবে এই পূর্ণদিবস কর্মবিরতি। এতে জেলার চকরিয়া, পেকুয়া, কক্সবাজার সদর, রামু, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, উখিয়া ও টেকনাফ সাব রেজিস্ট্রি ও কক্সবাজার সদর ও রেকর্ড রুমে আগত সেবা গ্রহীতারা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। রেজিষ্ট্রিকৃত দলিলের নকলসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তুলতে গিয়েও না পেয়ে ফেরত যাচ্ছেন সেবাগ্রহীতারা।
এর আগে গত সপ্তাহের রবিবার দুপুরে কক্সবাজার জেলা রেজিস্ট্রার অফিস প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে জেলার নকলনবিশরা। চাকুরি জাতীয়করণসহ ১২ মাসের বকেয়া পারিশ্রমিক পরিশোধের দাবিতে আন্দোলন করছে আইন মন্ত্রণালয়ের অধীন নিবন্ধন অধিদপ্তরের নকলনবিশেরা (এক্সট্রা মোহরার) কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচী ঘোষণা করে। কর্মসূচীর মধ্যে ছিল স্কেলভুক্ত করাসহ ১২ মাসের পারিশ্রমিক পরিশোধের দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসুচির অংশ হিসেবে গত ১২ ও ১৩ এপ্রিল কালোব্যাজ ধারণ করেন দেশের সকল এক্সট্রা মোহরাররা। গত ১৮ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে অর্ধদিবস কলম বিরতি, যা ২১ এপ্রিল পর্যন্ত চলে। এর পর আজ রবিবার ২৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া পূর্ণদিবস ‘কলম বিরতি’ চলবে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত।এরপরও দাবি আদায় না হলে আগামী ২ মে ঢাকায় মহাসমাবেশের মাধ্যমে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানানো হয়।
কক্সবাজারে এসব কর্মসূচীতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশ এক্সট্রা মোহরার এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও আন্দোলন-সংগ্রাম কমিটির জেলা শাখার আহবায়ক মিনার মু. সাইফুদ্দিন। তার সাথে আছেন কক্সবাজার জেলা এক্সট্রা মোহরার এসোসিয়েশনের সভাপতি ররীন্দ্রনাথ দে, আন্দোলন-সংগ্রাম কমিটির সদস্য সচিব মো. নাসির উদ্দিন, শ্রীদুল রঞ্জন দাশ, জেলা কমিটির অর্থসচিব নুরুল মোস্তফা, মো. ইমাম হাসান, বিদ্যুৎ কান্তি দাশ, সনজিৎ কান্তি রুদ্র, সেলিম উদ্দিন, সাখাওয়াত হোসেন টিটু, আবদু শুক্কুর, কামাল উদ্দিন প্রমূখ।
ভুক্তভোগী এক্সট্রা মোহরারদের দাবি, জাতীয়করণ তথা সরকারী স্কেলভুক্ত করে তাদের বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, শিক্ষা সহায়ক ভাতা, যাতায়াত ভাতা, টিফিন ভাতা, মহার্ঘ ভাতা ও সরকারি যাবতীয় সুযোগ-সুবিধাসহ প্রদান করতে হবে। এছাড়াও অবিলম্বে বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে হবে।
বাংলাদেশ এক্সট্রা মোহরার এসোসিয়েশন সূত্রে জানা গেছে, এক্সট্রা মোহরারদের স্থায়ী করার জন্য ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আইন প্রণয়ন করেন। ১৯৮৪ সালের ১৫ আগষ্টের একটি জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার স্বীকৃতিও দিয়েছিলেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত এক্সট্রা মোহরারদের সমস্যার সমাধান হয়নি।
তৎকালীন সরকার তাদের দাবী মেনে নিতে সম্মত হয় এবং ১৯৮৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সরকারের সাথে এক্সট্রা মোহরার এসোসিয়েশনের সাথে দ্বি-পাক্ষিক চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালে রেজিস্ট্রেশন বিভাগীয় কর্মচারী ও এক্সট্রা মোহরার এসোসিয়েশন যৌথভাবে দাবী পেশ করলে কর্তৃপক্ষ একটি কমিটি করে দেয়। উক্ত কমিটি এক্সট্রা মোহরারদের পে-স্কেলভুক্ত করার সুপারিশ করে। কিন্তু এই সুপারিশ এখনো পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি।
পাঠকের মতামত: