ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজারের চকরিয়া উপকূলীয় এলাকায় বাড়ছে অকাল গর্ভপাত

ডেস্ক নিউজ ::   কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার একটি গ্রাম ফাইল্লাপাড়া। গত কয়েক বছর ধরেই গ্রামটিতে অকাল গর্ভপাতের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা। গবেষকরাও চিন্তায় ছিলেন কেন হচ্ছে এমনটি। তবে সম্প্রতি তারা জানতে পেরেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ও এলাকায়লবণাক্ততা বেড়ে এমনটি ঘটছে।

আন্তর্জাতিক উদরাময় রোগ গবেষণা বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) গত ৩০ বছর ধরে চকরিয়ায় স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি পর্যবেক্ষণ করে আসছে। সংস্থাটি সেখানকার বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যবিষয়ক ছোটখাটো পরিবর্তনও নোট করে রাখার অনুরোধ করে। আর ২০১২ সাল থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে উপজেলার উপকূলীয় এবংপাহাড়ি এলাকার ১২ হাজার ৮৬৭ জন গর্ভবতী নারীকে শুরু থেকে সন্তান হওয়া পর্যন্ত নজরদারিতে রাখে আইসিডিডিআরবি।

সংস্থাটি দেখতে পায়, পাহাড়ি বা উঁচু এলাকায় বসবাসকারী নারীদের তুলনায় উপকূলীয় এলাকায় (সমুদ্রের ২০ কিলোমিটারের মধ্যে) বসবাসকারী নারীদের গর্ভপাত হয়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশি। সেই সব এলাকায় ১০০ জন গর্ভবতী নারীর মধ্যে ১১ জনই অকাল গর্ভপাতের কবলে পড়েন। কিন্তু মতলব নামের আরেকটিএলাকা যা তুলনামূলক কিছুটা উঁচু সেখানে এই হার ৮ শতাংশ। এ ছাড়া যত উপকূলের দিকে যাওয়া হয় ততই এই হার বাড়ে বলেও গবেষণায় দেখা গেছে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, তারা যে পানি খাচ্ছেন বা অন্যান্য খাবার খাচ্ছেন তাতে কী পরিমাণ লবণ আছে সেটি প্রভাব রাখছে এই পার্থক্যে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শঅনুযায়ী কোনো ব্যক্তির প্রতিদিন ৫ গ্রামের বেশি লবণ খাওয়া উচিত না। কিন্তু চকরিয়ার উপকূলীয় এলাকার মানুষজনকে প্রতিদিন ১৬ গ্রাম লবণ খেতে হচ্ছে। আর ওই উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় যারা থাকছেন তারা এই এক-তৃতীয়াংশ লবণ খাচ্ছেন।

আইসিডিডিআরবির গবেষক ড. মানজুর হানিফি বলেন, লবণ গ্রহণের এই পার্থক্য গর্ভপাতে ভূমিকা রাখছে। তবে সামগ্রিকভাবে এর পেছনে আছে জলবায়ু পরিবর্তন। তিনি বলেন, এসব জমির ওপর এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে, কিন্তু শরীরের ওপর যে প্রভাব পড়েছে, তা দেখতে পাওয়া যায় না।

তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলোতে অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার বিষয়ে সচেতন করা হয়। কিন্তু এখানে সচেতন করেও লাভ নেই। পানিতে, মাটিতে সব জায়গাই লবণে সয়লাব। তিনি মনে করেন বিষয়টি নিয়ে আরো গবেষণা করা দরকার। কী উপায়ে মুক্তি মিলতে পারে তাও খুঁজে দেখতে হবে।

 

পাঠকের মতামত: