জসীম উদ্দীন ::কক্সবাজারে খুব শীঘ্রই শুদ্ধি অভিযান চালানোর কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল এমপি।
দলের ভেতর লুকিয়ে থাকা অপরাধীদের দুঃসংবাদ দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সারাদেশের মত কক্সবাজার জেলায় খুব শীঘ্রই দলীয় শুদ্ধি অভিযান শুরু হবে। সারাদেশের অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে এবং চলবে। যারা দেশের আইন মানবে না সে যেই হউক ছাড় নাই। যে কোন মূল্যে সুশাসন নিশ্চিত করা সরকারের লক্ষ্য বলে জানান তিনি।
আজ রবিবার (৩ নভেম্বর) মুঠোফোনে জানতে চাইলে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল এমপি।
এদবকে, আ’লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কক্সবাজার জেলায়, উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রায় তিন শতাধিক অনুপ্রবেশকারী আওয়ামী লীগে ডুকে পড়েছে। ইতোমধ্যে ১০৩ জন অনুপ্রবেশকারীর একটি তালিকা দলের হাই কমান্ডের হাতে পৌঁছেছে।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড.সিরাজুল মোস্তফা বলেন, এ ধরনের তথ্য তার জানা নেই।
তবে অনুপ্রবেশকারী ভূমিদস্যু, সন্ত্রাসী মাদক কারবারিদেরকে যেন দলে ঢুকার সুযোগ দেয়া না হয় সে জন্য সব উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এরপরও যারা কৌশলে আওয়ামী লীগের পদ পদবী পেয়ে যাবে পরবর্তী চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও হুশিয়ারী দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
তিনি আরো বলেন, অনুপ্রবেশকারী বা অপরাধের সঙ্গে জড়িত কোন ব্যাক্তি কাউন্সিলের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে আসলেও কোন লাভ হবেনা।
এই জাতের লোকের টাকা যেমন যাবে, পদবীও যাবে বলে সাবধান করেন তিনি। এ জন্য প্রত্যেক উপজেলায় আলাদা আলাদা কমিটি গঠন করা হবে বলে জানান এড.সিরাজুল মোস্তাফা।
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শুদ্ধি অভিযান চলছে। গ্রেফতার হচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের বাঘা বাঘা নেতাকর্মীরা। শুদ্ধি অভিযান থেকে বাদ যাচ্ছেনা কট্টরপন্থী আওয়ামীগ ও জনপ্রতিনিধিরাও। এদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজি, টেন্ডাবাজিসহ নানান অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।
এ অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ছাড়াও বিভিন্ন দলের লোকজন ও সাধারণ মানুষ। অভিযানের কারনে সারাদেশের মত কক্সবাজারেও ক্ষমতাসীন আ’লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। বিশেষ করে দলের পদ পদবী ব্যবহার করে চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজিসহ নানান অপর্মের মাধ্যমে যারা টাকার কুমির বনে গেছে এখন তাদের চোখে ঘুম নাই। কে কখন কিভাবে ধরা খায় সে আতংকে রয়েছে।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, আতংকে দিন পার করছে আ’লীগের অনুপ্রবেশকারীরাও। অনুপ্রবেশকারীদের বেশিরভাগই বিএনপি জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলে দাবি করা হচ্ছে। পরবর্তী দল পরিবর্তনের মাধ্যমে তারা আ’লীগের পদ পদবী ব্যবহার করে নানান সুবিধা ও অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। সারাদেশের মত কক্সবাজার জেলায় তার ব্যাতিক্রম নয়।
কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলার ইউনিয়নে আওয়ামীগের সম্মেলন চলছে। সম্মেলনকে সামনে রেখে অনুপ্রবেশকারীরাও আ’লীগের মূলপোষ্ট পদবীতে আসার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের ঠেকাতে মরিয়া কোণঠাসা ভুক্তভোগীরা।তবে এখনো নীরব রয়েছে অনুপ্রবেশকারীদের থেকে সুবিধাভোগীরা।
ভুক্তভোগীদের আওয়ামীগের নেতাকর্মীদের দাবি, অনুপ্রবেশকারীদের থেকে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের কয়েকজন কতিপয় নেতা আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন। সে কারনে চিহৃত অনুপ্রবেশকারী, দখলবাজ, ভূমিদস্যু, মাদক কারবারিদের সরাসরি পক্ষে না নিলেও নীরবে ভুমিকা রাখছে তাদের পক্ষে। অথচ এ ধরনের কেউ যেন আ’লীগে ঠাঁই না পায় এ জন্য সরাসরি দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখহাসিনা কতৃর্ক কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। এর পরও অভিযোগের কমতি নেই।
পাঠকের মতামত: