কক্সবাজার প্রতিনিধি ::
ভয়াবহ লবণ সংকটে পড়েছেন কক্সবাজারের শিল্প নগরী ইসলামপুরের মিল মালিকরা। গত দু’মাস ধরে মাঠ পর্যায়েলবণ উৎপাদন না হওয়ায় চরম হতাশায় ভুগছেন অর্ধশতাধিক মিল মালিক। মিলে লবণ মজুদ করতে না পারায়বন্ধের উপক্রম হয়েছে মিলগুলো। এতে কোটি কোটি টাকার লোকসানও গুনতে হচ্ছে তাদের। একই সাথে ঈদগাঁওইসলামপুরে লবণ আনলোডের প্রায় ৬০টি ঘাট শুন্য হয়ে পড়ে আছে। মেসার্স মছুদা সল্ট ক্রাশিং ইন্ডাস্ট্রিজ এরমালিক মিজানুর রহমান বলেন, কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও ইসলামপুরে প্রায় ৬৪টি লবণের মিল রয়েছে। এসবলবণ মিলের কারণে ইসলামপুর শিল্প এলাকা হিসেবে পুরো বাংলাদেশে খ্যাতি রয়েছে। কিন্তু এই শিল্প এলাকায়লবণের সংকট দেখা দিয়েছে। লবণ না পাওয়ায় অনেক মিল বন্ধ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন মহেশখালী, মাতারবাড়ি, কুতুবদিয়া, উজানটিয়া, চৌফলদন্ডী, খুরুস্কুল, হাব ঘোনা, ভারুয়াখালী ও ঈদগাঁও এলাকাহলো লবণ
উৎপাদনের উৎস। এসব উপজেলা ও এলাকার মাঠ থেকে উৎপাদিতলবণগুলো ট্রলারে করে নিয়ে আসা হয় ইসলামপুরের লবণ মিলে। এসব মিল থেকে লবণগুলো ক্রাশিং করে ট্রাকেকরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হয়। কিন্তু গত একমাস ধরে মাঠ পর্যায়ে লবণ উৎপাদনআশংকাজনকভাবে কমে গেছে। যেখানে প্রতিদিন একটি মিলের জন্য মাঠ থেকে লবণ আসত প্রায় তিন থেকে চারটিট্রলারে করে। বর্তমানে ৬৪টি মিলের জন্য লবণ আসছে পাঁচ থেকে ছয়টি ট্রলারে করে। প্রতিটি ট্রলারে করে লবণআসে প্রায় ৫ থেকে এক হাজার টন পর্যন্ত।
আলসৌদিয়া সল্ট ক্রাশিং ইন্ডাস্ট্রিজ এর মাঝি নুরুল হক বলেন, মাতারবাড়িতে কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎউৎপাদন কেন্দ্র ও খুরুশকুলে আশ্রয় প্রকল্পের জন্য অনেকেই লবণ মাঠ ছেড়ে দিয়েছে। তাই এসব মাঠে আর লবণউৎপাদন হচ্ছে না। অনেক জায়গায় লবণ মাঠ কমে গেছে। প্রায় দশদিন পর গত শনিবার ১১শ’ এক মণ লবণ নিয়েএকটি ট্রলার ঘাটে এসেছিল। যেখানে একটি মিলের জন্য দিনে চারটি পর্যন্ত ট্রলার আসত ঘাটে। তবে ডিসেম্বরেরশেষ দিকে লবণ উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান।
মিল মালিক জাফর আহমদ এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার তিনটি লবণের মিল রয়েছে। মাঠ পর্যায়ে লবণ উৎপাদন না হওয়ায়আপাত সব মিল বন্ধ রয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে সবাইকে মিল বন্ধ করে দেউলিয়া হয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, ইসলামপুর শিল্প এলাকা থেকে দৈনিক লবণ বোঝায় প্রায় ১০০টি ট্রাক (প্রতিটি ট্রাকে ১৩ থেকে ১৪টন) দেশের বিভিন্ন স্থানে লবণ সরবরাহ করা হত। কিন্তু বর্তমানে ১০টি মতো ট্রাক লবণ নিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াসরবরাহ দেয়া ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতিটি মিল মালিকরা পাওনা রয়েছে ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা পর্যন্ত। নিয়মিতলবণ সরবরাহ নিতে না পারায় মালিকদের এসব টাকাগুলো আটকে আছে। তিনি দ্রুত লবণ সংকট সমাধানেরআহ্বান জানান সংশ্লিষ্টদের।
পাঠকের মতামত: