কক্সবাজার প্রতিনিধি :: দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং মিয়ানমারের কাছে ঘুনধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১০ সালের জুলাইয়ে। চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ এগিয়েছে ২৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ। প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালের জুনে। যদিও বর্তমানে সময় বাড়িয়ে তা ধরা হয়েছে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পের শুরুতে যেখানে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৮৫২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, সময় বৃদ্ধি পাওয়ায় সংশোধনের পর তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকায়।
শুধু দোহাজারী-রামু-ঘুনধুম রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প নয়; রেলের অধীনে এমন আরো কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে; যার প্রাক্কলিত ব্যয় ও সময়ের সঙ্গে বাস্তবায়নের সময় ও ব্যয়ের ব্যাপক তারতম্য রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। জাতীয় সংসদ ভবনে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা করা হয়।
বৈঠকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবছরে চলমান প্রকল্পের ওপর আলোচনা করা হয়। এছাড়া কমিটির আগের বৈঠকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উদ্দেশে করা সুপারিশগুলোর বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি নিয়েও মঙ্গলবার আলোচনা করা হয়। বৈঠকে চলতি ও গত অর্থবছরের রেলওয়ের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি আব্দুস শহীদ এমপি বলেন, প্রকল্পের যে প্রাক্কলন করা হয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তা বাস্তবায়নের সময় ঠিক থাকে না। প্রাক্কলনে যে ব্যয় ধরা হয়, দরপত্রে সেটার চেয়ে কম বা বেশি দেখা যায়। এটা হওয়া উচিত নয়। তাছাড়া প্রকল্প শুরু হয় মেয়াদ শুরুর অনেক পরে। দেখা যায় ২০১০ সালের প্রকল্প শুরুই হয়েছে ২০১৮ সালে। এর ফলে প্রকল্পের খরচ অনেক বেড়ে যায়। জনস্বার্থ বিঘ্নিত হয়। এজন্য আমরা বলেছি প্রাক্কলনের চেয়ে বেশি খরচ করা যাবে না। প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো যাবে না।
তিনি জানান, সংসদীয় কমিটি সরকারের বাস্তবায়ন, মূল্যায়ন ও পরিবীক্ষণ (আইএমইডি) বিভাগের যুগ্ম সচিব পর্যায়ের এক কর্মকর্তার নেতৃত্বে বিষয়টি দেখভালের জন্য একটি কমিটি গঠনের সুপারিশ করেছে।
সংসদীয় কমিটির বৈঠকে যথাসময়ে প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে শেষ করার পাশাপাশি ব্যয় কমাতে জমি অধিগ্রহণ ও মাটি ভরাট এবং উন্নয়নকাজের জন্য আলাদা প্রকল্প গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। এছাড়া সড়কপথে রেল সিগন্যালগুলোয় ওভারপাস তৈরি করে সড়ক দুর্ঘটনা রোধের পরিকল্পনা নেয়ারও সুপারিশ করা হয়।
কমিটির সভাপতি আব্দুস শহীদের সভাপতিত্বে বৈঠকে প্রধান হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন, এবি তাজুল ইসলাম, ফজলে হোসেন বাদশা, আহসান আদেলুর রহমান, গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ ও খাদিজাতুল আনোয়ার অংশ নেন।
পাঠকের মতামত: