মাহাবুবুর রহমান. কক্সবাজার :: আর কয়েক দিন পরেই কোরবানীর ঈদ। মুলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব কোরবানীর ঈদের প্রধান উপকরণ গরু। তবে গত বছরের ন্যায় এবারও দেশে করোনা সংক্রামনের কারনে গরু কোরবানীর ঈদ নিয়ে তেমন উৎসাহ নেই সাধারণ মানুষের মাঝে। কারন একদিকে অব্যাহত করোনা সংক্রামন বাড়ছে অন্যদিকে দীর্ঘ দিন ধরে আয়রোজগার না থাকায় অর্থনৈতিক ভাবে বিপর্যন্ত। তাই কোরবানীর ঈদ এখন অনেকটা ফিকে হয়ে পড়েছে। তবুও অনেকে নিজ নিজ সামর্থমত কোরাবানী দিতে আগ্রহী তবে এবার কোরাবানীর পশু নিয়ে চলছে নানান রকম জল্পনা কল্পনা। বিশেষ করে মায়ানমার থেকে গরু না আসায় অনেকের ধারনা বাজারে গরুর দাম বাড়তি হবে। অন্যদিকে খামারীদের দাবী বিদেশ থেকে গরু আসায় দেশিয় খামারীরা লোকসানের মুখে পড়ে। তবে ক্রেতাদের দাবী বর্তমানে গরুর ব্যাপক দাম হওয়াতে কেউ কিনার সাহস পাচ্ছেনা।
আসছে কোরবানীর ঈদ তাই অনেকে গ্রামে গঞ্জে ছুটছেন আগে ভাগে গরু কিনার জন্য। কথা হয়েছে এমন একজনের সাথে তিনি বাহারছড়ার ঠিকাদার জসিম উদ্দিন। তিনি জানান,আমি গতকাল ভারুয়াখালী গিয়েছিলাম কয়েকটি বাড়িতে গরু দেখতে সেখানে বেশ ভাল ভাল গরু দেখেছি এর মধ্যে একটি গরু ২ লাখ টাকা দিয়ে কিনতে চেয়েছিলাম বিক্রেতা দেয়নি পরে শুনেছি সেটি ২ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে বিক্রি হয়েছে। তিনি জানান, আত্বীয় স্বজন আছে তাই বড় গরু দেখেছি আসলে সেই গরু গত বছর বাজারে দেড় লাখ টাকায় পাওয়া গিয়েছিল। পিএমখালী ইউনিয়নের ঘাটকুলিয়াপাড়া শহিদুল ইসলাম বাবুল জানান,আমাদের এলাকায় প্রতিদিন অন্তত ২০/৩০ জন আসে গরু দেখতে আমার নিজেরও একটি গরু আছে যেটা দাম বলেছি ৭০ হাজার টাকা। আসলে করোনা পরিস্থিতির কারনে বাজার ঠিকমত হয়নি সেটা চিন্তা করে অনেকে আগে ভাগেই গরু দেখতে আসছে। এছাড়া ভয়েও অনেকে বাজারে যেতে চাইছে না। তিনি নিজেই দাবী করেন গত বছরের চেয়ে এখন গরু দাম বাড়তি।
এদিকে ঈদগাও এলাকার ব্যবসায়ি মনজুর আলম জানান, ঈদগাওকে ১৩ জুলাই ভাল গরু বাজার জমেছে এখানে বেশ কয়েকটি বাজার বসেছে সেখানে ভাল ভাল দেশিয় গরু উঠেছে। তবে অন্যান্য বারের চেয়ে অনেক বেশি,আসলে ব্যবসায়িরা সুযোগ বুঝে দাম বেশি হাকছে,এর কারন হচ্ছে মিয়ানমার বা ভারতিয় গরু না আসা। আগে মিয়ানমার এবং ভারত থেকে গরু আসতো তখন গরুর দাম অনেক সহনিয় পর্যায়ে থাকতো এবং করোনা পরিস্থিতির কারনে বাইরে থেকে গরু আসা বন্ধ তাই দেশিয় গরুর উপর নির্ভরশীল সে জন্য স্থানীয় ব্যবসায়িরা বেশি দাম বলছে। তবে ভিন্ন মত দেন খামারীরা। মিঠাছড়ি এলাকার আবদুস সালাম বলেন,আমার নিজের ঘরে দুটি গরু উঠেছে যে গুলো একেবারে প্রকৃতিক ভাবে বড় করেছি তবুও সেই গরুর পেছনে যে পরিমান পরিশ্রম আর খরচ হয়েছে সেই দাম দিতে গেলেও অনেক কিছু। এছাড়া বর্তমানে সব কিছুর দাম বেশি গরুর খাদ্য থেকে শুরু করে সব কিছু তারও উপর এখন গরু চোরের উপদ্রপ বেশি হওয়াতে রাত জেগে পাহার দিতে হয় সে জন্য ভাল করে ঘুমাতেও পারিনা। তাই বিদেশী গরু আসলে আমাদের পথে বসতে হবে তখন আর উচিত দাম পাব না। এদিকে টেকনাফ গরু আমদানী কারক সমিতির সভাপতি আবদুল্লাহ মনির বলেন, কক্সবাজারের গরুর চাহিদা অনুযায়ী অন্তত ২০ হাজার মায়ানমারের গরু আসতে হবে। এখন মাত্র ১৭০০ এসেছে। এখন আমদানী বন্ধ আছে তাই খোঁজ নিলে জানা যাবে উখিয়া টেকনাফের সব বাজারে গরু অনেক দাম। ছোট সাইজের গরুও লাখ টাকা দাম বলছে। যা প্রকৃত পক্ষে ৬০ থেকে ৭০ হাজার। তাই আমি মনে করি দ্রæত টেকনাফ করিডোর খুলে দেওয়া উচিত। এতে সাধারণ মানুষ কোরবানী করতে পারবে।
পাঠকের মতামত: