ঢাকা,রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

কক্সবাজারবাসীর গলার কাঁটা যানজট : ট্রাফিকরা ব্যস্ত ধান্দায়

ওওওওওওছৈয়দ আলম, কক্সবাজার :::

পর্যটন শহর কক্সবাজারের নাগরিকদের বিভিন্ন দূর্ভোগের অন্যতম একটি হলো যানজট। সারা দেশের জেলা শহরগুলো অভ্যন্তরিন সড়কে কম-বেশি যানজট থাকে তবে সে যানজট যদি মাত্রাতিরিক্ত হয় তাহলে শহরবাসীর দূর্ভোগের শেষ থাকে না। জেলার একটি মাত্র অভ্যন্তরিণ প্রধাণ সড়কটিতে সারা বছর নিত্য যানজট থাকলেও চলতি মাসে এই যানজট সহনশীলতা ছাড়িয়ে গেছে। এভাবে কয়েকদিন ধরে কক্সবাজার শহর ও আশপাশ এলাকার চলমান এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থীর বিভিন্ন প্রতিষ্টান থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা দেয়ার জন্য সকালে বের হলে সঠিক সময়ে পৌছতে পারছেনা। যার ফলে পরীক্ষায় সঠিক সময়ে কেন্দ্রে পৌছতে না পারায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। আর অভিবাবকরা শংকিত অবস্থায় রয়েছেন। তারা কক্সবাজার শহরের যানজটের অবস্থা দেখে উত্তোরনের কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছেনা। অপরদিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, পুরো শহরে টমটমের রাজত্ব আর হাজার হাজার রিক্সা। এতে করে দিনদিন গাড়ী বৃদ্ধির ফলে যানজট আরো ব্যাপক আকার ধারন করছে। আর গাড়ী ও মানুষের তুলনায় অধিক পরিমান ট্রাফিক পুলিশ সদস্য নিয়োজিত নেই বলে জানা গেছে। আর মোড়ে মোড়ে যেই সদস্য রয়েছে তারাই যার যার ধান্দায় ব্যস্ত হয়ে যায়। এভাবেই হলে কোনদিন যানজটমুক্ত হবেনা বলে অনেকেই এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন। গতকাল কক্সবাজার হাশেমিয়া কামিল মাদ্রাসার এক শিক্ষক সকাল ৯টায় তার প্রতিষ্টানের পরীক্ষার্থীদের নিয়ে কেন্দ্রে যাওয়ার সময় তীব্র যানজটের কবলে পড়ে যাই। মুহুর্তের মধ্যে সে তার পেইসবুকে স্ট্যাটাস দেন তিনটি ছবি দিয়ে। তার স্ট্যাটাসটি হুবহু পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল-এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থীদের উপায় কী? দেখার কি কেউ নেই? এখন ৯ টা। কিছুক্ষণ পর পরীক্ষা শুরু হবে। আলীর জাহালের সিটি কলেজ গেইট হতে হাশেমিয়া মাদ্রাসা পর্যন্ত যানজট। রাস্তা মেরামত চলছে। কিন্তু যান চলাচলের নিয়ন্ত্রণ নেই, নেই কোনো ট্রাফিক পুলিশ। রাস্তা জ্যাম আর জ্যাম। শত শত পরীক্ষার্থী শহরের বাহির হইতে ভেতরে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাবে। তবে কীভাবে? টেনশন টেনশন উদ্বেগজনক পরিস্থিতি! এভাবে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শহরের প্রধান সড়কটিতে লেগে থাকে তীব্র ও অসহনীয় যানজট। যানজট নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন সু-নির্দিষ্ট পরিকল্পনা না থাকা শহরবাসীর জন্য এখন যানজট রূপ নিয়েছে গলার কাঁটায়। যানজট রোধে অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি কাজ করছে কিছু কমিউনিটি পুলিশ, কিন্তু তাতেও কোন ইতিবাচক ফল লক্ষ করা যাচ্ছে না। তাই শহরমূখী মানুষগুলো যানজটের কবলে আটক পড়ে যাচ্ছে। সেই সাথে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে শহরে বাস করা লোকজনও। যানজট রোধে ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেয়া হলেও তা কোন কাজে আসছে না। বরং তারাও যানজট সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। কক্সবাজার শহরের প্রাণকেন্দ্র থানা রোড়ের মাথা থেকে রুমালিয়ারছড়া পর্যন্ত যানজট সমস্য দীর্ঘদিনের। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখানে যানজট লেগেই থাকে। এ যানজট নিরসনে বিভিন্ন সময় নানা পদক্ষেপ নেয়া হলেও তা কোন কাজে আসেনি। আবার হাতে নেয়া পদক্ষেপ গুলো স্থায়ী না হওয়ায় যানজট থেকে এখন পর্যন্ত নিস্তার মেলেনি শহরবাসীর। অন্যদিকে দিনের পর দিন বেড়ে চলছে যানবাহনের সংখ্যা। বিশেষ করে ব্যাটারি চালিত ইজি বাইকের সংখ্যা অতিরিক্তি হারে বেড়ে গেছে শহরে। যানবাহন বাড়ার সাথে সাথে যানজটও তীব্রতর হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বিগত কয়েক দিন ধরে জট এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে বর্তমানে চলাফেরাই দায় হয়ে পড়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন টমটম চালক বলেন, ট্রাফিক পুলিশরা ব্যস্ত থাকে সবসময় টাকার জন্য। তারা ৫/১০ টাকা পর্যন্তও নেয়। এমনকি সড়কের দু-পাশে সমস্ত ভ্রাম্যমান দোকান থেকে প্রতিদিন টাকা নেয়। আর বাহিরের কোন ছোট-বড় গাড়ি শহরে প্রবেশ করলে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়।

পাঠকের মতামত: