ঢাকা,বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও পর্যটকদের নিরাপত্তায়

কক্সবাজার শহরসহ সমুদ্র সৈকতজুড়ে বসানো হচ্ছে ২৫০ সিসি ক্যামেরা

কক্সবাজার প্রতিনিধি :: কক্সবাজারে পর্যটকদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি ও চুরি–ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য সমুদ্র সৈকতসহ শহরজুড়ে বসানো হবে প্রায় ২৫০টি সিসি ক্যামেরা। এর মধ্যে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বসাবে ১৫০টি ক্যামেরা এবং বাকী ক্যামেরাগুলো বসাবে কক্সবাজার পৌরসভা। ইতোমধ্যে পৌরসভার উদ্যোগে ২৫টি স্থানে সিসি ক্যামরা স্থাপন করা হয়েছে। এ মাসের মধ্যেই বাকী ৭৫টি স্থাপন করা হবে। যা তদারক করা হবে জেলা পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে। ট্যুরিস্ট পুলিশের ডিআইজি আবুল কালাম সিদ্দিকী গত সোমবার কক্সবাজারে পর্যটন ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময়কালে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, কক্সবাজার শহরের হোটেল–মোটেল জোন এলাকাটি মাঝে মধ্যেই আলোচনায় আসে খুন, ছিনতাই, ধর্ষণ, মাদকের কারবার, পতিতাবৃত্তিসহ নানা অপরাধের কারণে। এছাড়া পর্যটন শহরের বিভিন্ন স্থানে প্রায় সময় ছিনতাইয়ের শিকার হন পর্যটক ও সাধারণ নাগরিকরা। এই অবস্থায় সিসিটিভি স্থাপনসহ পুরো পর্যটন শহরকে নিরাপত্তার চাদরে ঢাকার উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। এর অংশ হিসেবে হোটেল মোটেলগুলোর প্রবেশ পথ ও বের হওয়ার পথ সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে তদারকি করা হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র যাছাই ছাড়া কাউকে কক্ষ ভাড়া না দেওয়ার জন্য হোটেল মালিকদের নির্দেশনা দিয়ে ডিআইজি আবুল কালাম সিদ্দিকী বলেন, হোটেল–মোটেলে বাড়তি ভাড়া নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে জেলা পুলিশের উদ্যোগে প্রায় ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে শহর ও শহরতলীর ৪০টি স্পটে ৫২টি সিসি (ক্লোজ সার্কিট) ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। পর্যটন ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন মহলের চাঁদায় স্থাপিত এসব সিসি ক্যামেরার মধ্যে বাজারঘাটার ৩–৪টি ক্যামেরা ছাড়া বাকীগুলো অনেক আগে থেকেই অচল রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

ওই সময় সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা স্থানগুলো হলো– বাস টার্মিনাল পুলিশ বক্স ও সিএনজি পাম্প, কক্সবাজার কারাগার, স্টেডিয়ামের সামনে ও মোহাজের পাড়ার মোড়, সদর হাসপাতালের দক্ষিণ ও পূর্ব পাশের মোড়, জেলা শিক্ষা অফিসের সামনে ( সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়), গোলদীঘির পাড়ের দক্ষিণ মোড়, অগগমেধা ক্যাং (বৌদ্ধ মন্দির সড়ক), বার্মিজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের উত্তর মোড়, বড় বাজার সামনে মোড় (বাজারঘাটা), ভোলাবাবুর পেট্রোল পাম্প, লালদীঘির পূর্ব পাড় মসজিদের সামনে, পৌরসভার সামনে, ঘুনগাছ তলা (ফরেস্ট অফিস মোড়), বিমানবন্দর গেটের সামনে, ঝাউতলার হোটেল রেনেসার সামনের যাত্রী ছাউনিতে, হলিডের মোড়ের যাত্রী ছাউনীর সামনে ও পিটিআই স্কুলের সামনের মোড় (পিডিবির সামনে), আরআরআরসি অফিসের সামনে (বাণিজ্য মেলার মাঠ), লাবণীর মোড়ের যাত্রী ছাউনী, কল্লোল মোড়, হান্ডি রেস্টুরেন্টের মোড়, সী ইন পয়েন্ট ট্যুরিস্ট পুলিশ বক্স, সুগন্ধার মোড় ( ড্রাগন মার্কেটের সামনে), কলাতলীর পেছনের মোড় (সী ক্রাউন এর সামনে), কলাতলীর মোড়, হোটেল সী প্যালেসের উত্তর ও দক্ষিণ পাশ, সুগন্ধা পয়েন্ট ট্রাফিক পুলিশ বক্স, লং বীচের পাশে ( মোহাম্মদীয়া হোটেল সামনের পশ্চিম পাশ), নিরিবিলি অর্কিড এর এটিএম বুথের পাশে, সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সামনে (কটেজ জোনের পাশে) জাম্বুর মোড়, গোলচত্বর মোড়ের দক্ষিণ পাশে (ইউএনএইচসিআরের পেছনের রাস্তা), পাসপোর্ট অফিসের সামনে, সার্কিট হাউস গেইট, পুলিশ সুপার বাসভবনের সামনের মোড় ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে।

প্রকল্পের উদ্বোধনকালে তৎকালীন পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন জানিয়েছিলেন, কক্সবাজার পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন অলিগলিসহ সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউপির লিংকরোড পর্যন্ত দেড় শতাধিক স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। সিসি ক্যামেরার কারণে কমপক্ষে ৬০ শতাংশ অপরাধী অপরাধের অন্ধকার পথ ছেড়ে দেবে।

পাঠকের মতামত: