মাহাবুবুর রহমান. কক্সবাজার :: কক্সবাজার বিমান বন্দরের পাশে থাকা বধ্যভুমিতে মুক্তিযোদ্ধের সৃতি হিসাবে আধুনিক সৃতিস্তম্ভ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রনালয়। ২৫ অক্টোবর বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রানালয় সংক্রান্ত সংসদিয় স্থায়ী কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। স্থায়ী কমিটির সদস্য ও মহেশখালী কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিকের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে কমিটি উক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন।
বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভার এক রেজুলেশন পত্র থেকে জানা গেছে,একাদশ জাতীয় সংসদের বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ১৫ তম সভা ২৫ অক্টোবর বিকাল ৩ টায় সংসদ ভবনস্থ পশ্চিম বøকের দ্বিতীয় লেভেলে অবস্থিত কেবিনেট কক্ষে অনুষ্টিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুব আলী (প্রতিমন্ত্রী) কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক,লক্ষীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খান, সংরক্ষিত মহিলা আসন -২৬ সৈয়দা রুবিনা আক্তার সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, কক্সবাজার বিমান বন্দরে মুক্তিযুদ্ধের সৃতি বিজড়িত একটি বধ্যভুমি রয়েছে, উক্ত স্থানে একটি সৃতিস্বম্ভ নির্মাণ করার সুপারিশ করেন যাতে বিশেষ বিশেষ জাতীয় দিবসে সর্বস্তরের মানুষ সেখানে গিয়ে শ্রব্ধা নিবেদনের সুযোগ পায়, সে ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের অনুরোধ জানান। একই সাথে কক্সবাজার বিমান বন্দরের সন্নিকটে বাঁকখালী নদী ড্রেজিং করা হলে প্রয়োজনীয় বালি পাওয়া যাবে এবং নাব্যতা রক্ষা পাবে।
এছাড়া কক্সবাজার বিমান বন্দর সম্প্রসারণের লক্ষ্যে যে সকল বৈধ মালিকদের নিকট থেকে জমি অধিগ্রহন করা হয়েছে জরুরী ভিত্তিতে তাদের পাওনা টাকা পরিশোধ করার অনুরোধ জানান। তিনি পর্যটকদের সুবিধার্থে মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন কর্তৃক রিসোর্ট স্থাপন করারজন্য কিছু জমি অধিগ্রহনের সুপারিশ করেন। পরে বৈঠকে আশেক উল্লাহ রফিক এমপির সুপারিশের প্রেক্ষিতে বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী বলেন, আইকাও এর নির্দেশনার আলোকে কক্সবাজার বিমান বন্দরের পাশের সেই বধ্যভুমিতে একটি আধুনীক সৃতিস্বম্ভ নির্মাণ করা হবে। এ বিষয়ে খুব দ্রæত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এদিকে দীর্ঘদিন পর হলেও কক্সবাজারের বধ্যভুমিতে একটি সৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করার উদ্দ্যোগ কে স্বাগত জানিয়েছেন কক্সবাজারের সচেতন মহল।
এ ব্যপারে কক্সবাজার সম্মিলিত সাংস্কৃতি জোটের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নজিবুল ইসলাম বলেন,শহরের বীচ সংলগ্ন সেই বধ্যভুমিটি সংরক্ষণ করা এবং সেখানে মুক্তিযুদ্ধাদের সৃতিকে সংরক্ষণ করা আমাদের দীর্ঘ দিনের দাবী ছিল। দীর্ঘ দিন পর হলেও সেই উদ্দ্যোগ নেওয়া হচ্ছে জেনে আমরা আনন্দিত। এতে মুক্তিযোদ্ধের সময়কার কথা আগামী প্রজন্ম সহজে জানতে পারবে।
এছাড়া পর্যটকদের জন্য একটি দর্শনিয় স্থান হবে। এ ব্যপারে কক্সবাজারে ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কলিম উল্লাহ বলেন,বিমান বন্দরের পাশের সেই বধ্যভুমিতে আমরা প্রতিটি জাতীয় দিবসে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাই। কিন্তু সত্যিকার অর্থে আসা যাওয়াতে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। বছরের কিছু বিশেষ দিন ছাড়া সেই বধ্যভুমি থাকে অবহেলিত এবং ময়লা আবর্জনায় ভরা। তাই স্থায়ী ভাবে এখানে একটি সৃতিস্তম্ভ নির্মাণ হলে খুবই ভাল হবে এতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ^াসী তরুন প্রজন্ম সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক জানান, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার। তখন কার কথা এবং সৃতি যত বেশি সংরক্ষণ করা যাবে আর সাধারণ মানুষের কাছে পৌছানো যাবে ততই বাঙ্গালী জাতী সমৃদ্ধ হবে। নতুন প্রজন্ম বিভ্রান্ত হবে না তাই বিমান বন্দরের পাশের সেই ঐতিহাসিক বধ্যভুমিতে একটি আধুনীক সৃতিস্তম্ভ করার প্রস্তাব করেছি যা সর্বসম্মতি ক্রমে গ্রহন হয়েছে। আশা করছি খুব শীঘ্র্ই তা বাস্তবায়ন হবে।
পাঠকের মতামত: