কক্সবাজার প্রতিনিধি ::
কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে ৩৯ ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২৫টিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। নির্বাচন ঘিরে সেভাবেই নিরাপত্তার ছক করা হয়েছে। তবে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মনে করছেন, সবগুলো কেন্দ্রই সমান ‘গুরুত্বপূর্ণ’।
কক্সবাজার সদর থানা পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ কেন্দ্রগুলোকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য-উপাত্ত, আগের নির্বাচনগুলোর সময়কার পরিস্থিতি এবং সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনার বিচার-বিশ্লেষণ করে কেন্দ্রের নিরাপত্তার ছক ও তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো: মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘সবগুলো ভোটকেন্দ্রকেই আমরা সমান গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছি। সেভাবেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ঠদের কাছে বলেছি। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুসারে, এ নির্বাচনে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ১০/১২ জন করে পুলিশ সদস্য, ১৪ জন করে আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়াও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ৬টি দল, ২ প্লাটুন বিজিবি সদস্য কাজ করবে। ৩/৪টি কেন্দ্র মিলে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত মাঠে থাকবে।’
কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামরুল আজম বলেন, ‘পৌর এলাকার ৩৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২৫টি ভোটকেন্দ্র ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে অন্য ভোটকেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।’
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল বলেন, ‘গুরুত্ব বিবেচনায় আমরা ভোটকেন্দ্রগুলোকে বিভাজন করেছি। সব কেন্দ্রেই আমরা প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করবো। সেখানে পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। কোথাও নিরাপত্তার কোন ঘাটতি আমরা হতে দেবো না। একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে যা কিছু করার দরকার তার সবই আমরা করবো।’
কক্সবাজার পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের একজন কাউন্সিলর প্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘প্রতিদ্বন্দ্বি একজন প্রার্থী ভোটারদের নানাভাবে জিন্মি করার চেস্টা করছেন। তার লোকজন অন্য প্রার্থীদের স্বাভাবিক প্রচারণাতেও বাধা দিচ্ছেন। এলাকায় ভোট চাইতে ঢুকলে তার লোকজন নজরদারী করে, বিভিন্ন স্থানে চেয়ার নিয়ে বসে থাকে এবং ভোটারদের হুমকি দেয়। এই ওয়ার্ডের দুইটি ভোটকেন্দ্রই (আল আমিন একাডেমী, খাজা মঞ্জিল এবং কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়) খুব ঝুঁকিপূর্ণ। ভোটের দিন দুই কেন্দ্র্রেই ওই প্রার্থীর অনৈতিক প্রভাব বিস্তারের আশংকা রয়েছে।’ তিনি এ দুইটি ভোটকেন্দ্রকে অতিঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
ইতোমধ্যে কোন প্রার্থী কোন ভোটকেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ বর্ণনা করে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন কিনাÑএমন প্রশ্নের উত্তরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল বলেন, ‘কোন প্রার্থী যদি মনে করেন কোন কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ, কারো অনৈতিক প্রভাব বিস্তারের আশংকা রয়েছে, সেক্ষেত্রে তারা বিষয়টি আমাদের জানাতে পারে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখবো এবং সেভাবেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।’
জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৫ জুলাই। ওইদিন পৌর এলাকার ১২টি ওয়ার্ডের মোট ৩৯টি কেন্দ্রের একযোগে ভোটগ্রহন করা হবে। ওইসব কেন্দ্রে মোট ভোট কক্ষ থাকবে ২২৪টি। অস্থায়ী কক্ষ থাকবে ১১টি। নির্বাচনে ৮৩ হাজার ৭২৮ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে ৪৪ হাজার ৩৭৩ জন ও নারী ভোটার রয়েছেন ৩৯ হাজার ৩৫৫ জন।
প্রসঙ্গত, এবারের পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচ জন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৭ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৬৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
পাঠকের মতামত: