ঢাকা,শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট বিকিকিনি হচ্ছে চড়া দামে: দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ সদস্যদের নির্ঘুম প্রচারণা

shalauddin-mostak-coxsbazar-zala-pcজাকের উল্লাহ চকোরী, নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনে হেভিওয়েট দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ সদস্যরা নির্ঘুম প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পাওয়া বর্তমান প্রশাসক মোস্তাক আহমদ চৌধুরী (আনারস) ও ১৪ দলীয় জোটের শরিক দল জাতীয় পাটির (জেপির) প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম সালাহ উদ্দিন মাহমুদ মোটর সাইকেল) প্রতিক নিয়ে দিনরাত বিরামহীনভারে জেলার ৮ উপজেলার ৩ স্থরের নির্বাচিত জন প্রতিনিধিদের দ্ধারে দ্ধারে ভোট ভিক্ষায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এ জেলার ৮ উপজেলায় উপজেলা চেয়ারম্যান ও অপর দুই মহিলা ও পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যানসহ প্রথম স্তরের মোট ভোটার সংখ্যা হচ্ছে ২৪জন। ২য় স্তরের ৪ পৌরসভার ৪ মেয়র, ১২ মহিলা কাউন্সিলার ও ৩৬ পুরুষ কাউন্সিলারসহ মোট ভোটার সংখ্যা হচ্ছে ৫২ জন। ৩য় স্তরের ৭২টি ইউনিয়নে মহিলা ও পুরুষ সদস্যসহ মোট ভোটার সংখ্যা হচ্ছে ১০১২ জন। আগামী ২৮ ডিসেম্বর দেশের অন্যান্য ৬১ জেলার ন্যায় অনুষ্ঠিত হবে বহুপ্রতিক্ষিত এ জেলা পরিষদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে প্রধান বিরোধীদল বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে কোন প্রার্থী না দেয়ায় সাবেক জেলা চেয়ারম্যান এএইচ সালাহ উদ্দিন মাহমুদের জনপ্রিয়তা, গ্রহণযোগ্যতা ও আঞ্চলিকতার কথা বেশী উচ্চারিত হচ্ছে ভোটারদের মাঝে। চেয়ারম্যান প্রার্থী, মহিলা ও পুরুষ সদস্যরা বিজয় নিশ্চিত করতে চড়াদামে ভোট ক্রয়ের জন্য কোমর বেধেঁ মাঠে নেমেছেন।

কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্য ওয়ার্ড ভিত্তিক সীমানা নির্ধারণ করেছেন জেলা প্রশাসন। এ জেলায় মোট ১৫টি ওয়ার্ড রয়েছে। প্রতি ৩ ওয়ার্ডে ১জন মহিলা সদস্য নির্বাচিত হবেন ও ১৫ ওয়ার্ডে ১৫ জন সদস্য নির্বাচিত করবে ভোটাররা। ১৫টি ওয়ার্ডে নির্বাচিত হবেন ৫ মহিলা সদস্যা। ১-২-৩ ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত হয়েছে সংরক্ষিত মহিলা আসন-১ প্রার্থী হয়েছে ৩জন। এরা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাশরফা জান্নাত ( বই ), শিরিন ফারজানা ( হরিণ ) ও প্রীতি কণা শর্মা (ফুটবল)। ৪-৫-৬ ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত হয়েছে সংরক্ষিত আসন-২। এ ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন ৩জন, এরা হলেন উম্মে কুলসুম (দোয়াত কলম ), জাতীয় পার্টি মনোনীত আসমাউল হোসনা ( ফুটবল ), আওয়ামী লীগ মনোনীত সৈয়দা নিঘাত আমিন (বই)। ৭-৮-৯ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত হয়েছে সংরক্ষিত মহিলা আসন-৩। এ ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন ৫জন, এরা হলেন শাহনা বেগম ( হরিণ ), রেহেনা বেগম ( ফুটবল), আওয়ামী লীগ মনোনীত ফিরোজা বেগম ( দোয়াত কলম ), লুৎফুন নাহার ( বই ) ও আনোয়ারা বেগম ( টেবিল ঘড়ি ) । ১০-১১-১২ ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত হয়েছে সংরক্ষিত মহিলা আসন-৪। এ ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন ৪ জন, এরা হলেন, হামিদা তাহের ( মাইক), রোমেনা আকতার ( টেবিল ঘড়ি ), শাহেনা আকতার ( ফুটবল ) ও তাহমিনা চৌধুরী লুনা ( হরিণ )। সংরক্ষিত ৫নং ওয়ার্ডে অন্যান্য প্রার্থীরা মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নেয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আশরাফ জাহান কাজল।

কুতুবদিয়ার ৬ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হয়েছে সাধারণ ওয়ার্ড নং ১। এ ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন ৪জন । এরা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত মিজানুর রহমান (অটোরিক্সা), মাষ্টার আহামদ উল্লাহ (তালা), মনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী ( টিউবওয়েল ) ও মোহাম্মদ জাহেদুল ইসলাম ফরহাদ (হাতি ) ।
সাধারণ ওয়ার্ড ২ নং ওয়ার্ডে অর্ন্তভুক্ত হয়েছে মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি, কালারমারছড়া, ধলঘাটা, শাপলাপুর ও হোয়ানক ইউনিয়ন। সাধারণ ২নং ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন ৪জন। এরা হলেন, মু কামাল উদ্দিন ( তালা ), মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী (টিউবওয়েল), আওয়ামী লীগ মনোনীত মোহাম্মদ রুহুল আমিন (বৈদ্যুতিক পাখা ) ও লুৎফুর রহমান (উটপাখি) ।
সাধারণ ওয়ার্ড ৩ নং ওয়ার্ডে অর্ন্তভুক্ত হয়েছে, মহেশখালী পৌরসভা, ছোট মহেশখালী, বড়মহেশখালী ও কুতুবজুম ইউনিয়ন। সাধারণ ৩নং ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন ৪জন। এরা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত আনোয়ার পাশা চৌধুরী (টিউবওয়েল), মোহাম্মদ আয়ুবর রহমান (তালা), শহিদুল ইসলাম মুন্না (হাতি) ও আজিজুল হক (আজিজ) (উটপাখি ) । সাধারণ ৪ নং ওয়ার্ড গঠিত হয়েছে পেকুয়া উপজেলার মগনামা, উজানটিয়া, পেকুয়া সদর, রাজাখালী ও টৈইটং ইউনিয়ন। এ ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন ৭জন। এরা হলেন, রিয়াজ খান রাজু ( বৈদ্যুতিক পাখা), মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (টিউবওয়েল), এ.টি.এম জায়েদ মোর্শেদ (হাতি), আবুল কাসেম (ক্রিকেট ব্যাট ), মোহাম্মদ তারেক ছিদ্দিকী ( তালা ), মেহদি হাসান (অটোরিক্সা ) ও আওয়ামী লীগ মনোনীত আবু হেনা মোস্তফা কামাল (ঘুড়ি )। ৫নং ওয়ার্ডে অর্ন্তভুক্ত হয়েছে পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া, শীলখালী, চকরিয়ার হারবাং, বরইতলী ও কৈয়ারবিল ইউনিয়ন। এ ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন ৫জন। এরা হলেন, জন্নাতুল বকেয়া (অটোরিক্সা), মোহাম্মদ বদরুদোজ্জা (ঘুড়ি), কমরউদ্দিন আহমদ (হাতি ), এস এম জাহাঙ্গীর বুলবুল (তালা) ও মাহবুব রহমান (টিউবওয়েল) । ৬ নং ওয়ার্ডে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে চকরিয়ার কোনাখালী, ঢেমুশিয়া, বদরখালী, পশ্চিম বড়ভেওলা, মানিকপুর ও পূর্ব বড়ভেওলা ইউনিয়ন। এ ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন ২ জন। এরা হলেন, এম আজিজুর রহমান (তালা), আওয়ামী লীগ মনোনীত আবু তৈয়ব ( টিউবওয়েল) । ৭নং ওয়ার্ডে অর্ন্তভুক্ত হয়েছে চকরিয়া পৌরসভা, লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন, কাকরা, সুরজপুর মানিকপুর ও বমু বিলছড়ি ইউনিয়ন। এ ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন ৫ জন। এরা হলেন, আবদুর রহিম (টিউবওয়েল ), জাহিদুল ইসলাম (তালা ), মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম( অটোরিক্সা), মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু (হাতি) ও আওয়ামী লীগ মনোনীত ওয়ালিদ মিল্টন (ঘুড়ি)। ৮ নং ওয়ার্ডে অর্ন্তভুক্ত হয়েছে চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়ন, শাহারবিল, চিরিঙ্গা, ফাসিয়াখালী ও খুটাখালী ইউনিয়ন। এ ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন ৫ জন। এরা হলেন, মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ চৌধুরী (অটোরিক্সা), আওয়ামী লীগ মনোনীত মোক্তার আহমদ চৌধুরী (তালা), আ.ন.ম আমিনুল এহছান (বৈদ্যুতিক পাখা), মোহাম্মদ ওমর ফারুক (ঘুড়ি ) ও সোলতান আহমদ (অটোরিক্সা)। ৯ নং ওয়ার্ডে কক্সবাজার সদর উপজেলার ইসলাম পুর, পোকখালী, ইসলামাবাদ, ঈদগাও ও জালালাবাদ ইউনিয়ন। এ ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন ৬ জন। এরা হলেন, মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম (হাতি), মোহাম্মদ জুনায়েদ কবির (ঘুড়ি), সোহেল জাহান চৌধুরী (বৈদ্যুতিক পাখা), মিজানুল হক (তালা ), আজিজুর রহমান (টিউবওয়েল) ও আওয়ামী লীগ মনোনীত মনজুরুল হক চৌধুরী (অটোরিক্সা ) । ১০ নং ওয়ার্ডে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে, কক্সবাজার সদর উপজেলার কক্সবাজার পৌরসভা, খুরুস্কুল, ঝিলংজা ও পিএমখালী ইউনিয়ন। এ ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন ৫ জন। এরা হলেন, নুরুজ্জামান (টিউবওয়েল), আওয়ামী লীগ মনোনীত উজ্জ্বল কর (অটোরিক্সা ), রফিক উদ্দিন (বৈদ্যুতিক পাখা), মাহমুদুল করিম (তালা) ও মোহাম্মদ রুহুল আমিন (হাতি ) । ১১ নং ওয়ার্ডে অর্ন্তভুক্ত হয়েছে কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী, ভারুয়াখালী, রামু উপজেলার রশিদ নগর, জোয়ারিয়া নালা ও চাকমারকুল ইউনিয়ন। এ ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন ২ জন। এরা হলেন, শামসুল আলম মন্ডল (তালা) ও আওয়ামী লীগ মনোনীত পলক বড়–য়া (টিউবওয়েল) ।
১২ নং ওয়ার্ডে রামু উপজেলার ঈদগড়, গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া ও কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হয়েছে। এ ওয়ার্ডে উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্নসাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শামসুল আলম বিনা প্রতিদ্ধন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছেন । ১৩ নং ওয়ার্ডে অর্ন্তভুক্ত হয়েছে রামু উপজেলার ফতেখারকুল ইউনিয়ন, রাজারকুল, দক্ষিণ মিঠাছড়ি ও খুনিয়া পালং ইউনিয়ন। এ আসন থেকে আবদুর রহিম ও রাহমত উল্লাহ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নুরুল হক। ১৪ নং ওয়ার্ড এর অর্ন্তভুক্ত হয়েছে উখিয়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন। এ ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন ২ জন। এরা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত হুমায়ুন কবির চৌধুরী (তালা ) ও খাইরুল আমিন (টিউবওয়েল) ।
১৫ নং ওয়ার্ডে অর্ন্তভুক্ত হয়েছে টেকনাফ উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা। এ ওয়ার্ডে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি শফিক মিয়া বিনা প্রতিদ্ধন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
জনপ্রতিনিধি ভোটাররা দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ পুরুষ ও মহিলা সদস্যদের সফলতা আর ব্যর্থতা নিয়ে চুলছেড়া বিশ্লেষণ করছেন। জেলার উন্নয়নে কার কি অবদান আর রাজনৈতিক অঙ্গনে কার কি ভুমিকা ছিল বা আছে তা নিয়েও চলছে আলোচনা সমালোচনা। ইতিমধ্যে সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড ৫ ও সাধারণ ওয়ার্ড ১২, ১৩ ও ১৫ নং ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্ধন্ধিতায় ৪জন নির্বাচিত হওয়ায় আগামী ২৮ ডিসেম্বার ওইসব ওয়ার্ডে শুধু মাত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ভোট অনুষ্টিত হবে।

পাঠকের মতামত: