ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪

এসি আছে সংযোগ নেই, ফ্যান খুলে পড়ল দর্শকের মাথায়

কক্সবাজার জেলা ক্রীড়া সংস্থায় যত অব্যবস্থাপনা

কক্সবাজার প্রতিনিধি :: কক্সবাজারের বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে চলছিল জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্টের ফাইনাল খেলা। যেহেতু ফাইনাল, কানায় কানায় পরিপুর্ণ দর্শক গ্যালারী। কোথাও ঠাই নেয়। খেলাও ছিল টান টান উত্তেজনাপুর্ণ। দ্বিতীয়ার্ধের কিছু সময় পর সবার চোখ ভিআইপি গ্যালারীর দিকে, কেউ হাসছে আবার কেউ দৌড়াচ্ছে। এমন রহস্য তৈরি হয়েছে ভিআইপি গ্যালারীতে ফ্যান খুলে পড়ে যায় দর্শকদের ওপর। এসময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যান কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আবছার, চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদীসহ বেশ কয়েকজন।

মঙ্গলবার (৭ জুন) বিকেলে জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্টের মহেশখালী-চকরিয়ার মধ্যকার খেলায় এমন ঘটনা ঘটেছে।
অন্যদিকে, গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য স্টেডিয়ামটির তৃতীয় তলায় তৈরি করা ‘প্রেস বক্স’। যেখানে লাগনো আছে তিনটি এসি। কিন্তু সে সবের কোনটির সংযোগ নেই। পাখা থাকলেও তা অপ্রতুল। কোন শৃঙ্খলা না থাকায় প্রেস বক্সে ঢুকে উশৃঙ্খল আচরণ শুরু করেন খোদ ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তাদের ভাই পরিচয়দানকারী একাধিক ব্যক্তি।

কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক জাহেদ সরওয়ার সোহেল বলেন, যদি সংযোগ দিতে না পারে তাহলে এসি লাগালো কারা। এতো গরমে গণমাধ্যমকর্মীদের বসানো হয়ে। যা কখনো কাম্য নয়। এমন কাজ ক্রীড়া সংস্থার জন্য লজ্জার।

ভিআইপি গ্যালারিতে ছিলেন লিংরোডের রিয়াজ উদ্দিন। তিনি বলেন, অল্পের জন্য বেঁচে গেছি। হঠাৎ বিকট শব্দে আমাদের উপরে পড়েছিল ফ্যান। আমার পায়েও কানিকটা আঘাত পেয়েছি। পাশে ছিল চকরিয়ার চেয়ারম্যান তিনিও ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। কর্তৃৃপক্ষের চরম উদাসীনতায় এমন ঘটনা ঘটেছে। টিকিট বিক্রিতেও অনিয়ম ছিল। অনেকে প্রবেশও করতে পারেনি।

ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক আহসান সুমন বলেন, নাম সর্বস্ব এসি লাগিয়ে দায় এড়াচ্ছে ক্রীড়া সংস্থা। এসি লাগানো হলো কিন্তু সংযোগ দেয়া হয়নি। তীব্র গরমে অতিষ্ট হয়ে পড়েছিল সাংবাদিকরা। কর্তৃপক্ষকে বার বার বলার পরও প্রেস বক্সে বাহিরের লোক প্রবেশ করেছে। চরম অব্যবস্থাপনায় ছিল পুরো স্টেডিয়াম।

সিনিয়র সাংবাদিক দীপক শর্মা দীপু বলেন, মানুষ থাকার পরিবেশ প্রেস বক্সে ছিল না। তীব্র গরমে সেখানকার পরিবেশ খুবই বাজে ছিল। তিনটা এসি লাগানো ছিল। কিন্তু কোন ধরণের সংযোগ দেয়া হয়নি। পাখা দেয়া হয়েছে যা ঠিক মতো চলছেও না।
টিকিট কেটেও প্রবেশ করতে পারেননি মহেশখালী থেকে আসা মৌলভী জুবায়ের। তিনি বলেন, টিকিট কাটলাম। কিন্তু ঢুকার পরিবেশ পায়নি। কোন নিয়ম শৃঙ্খলা নেই এখানে। বাজে পরিবেশ। এ দায় ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তারা এড়াতে পারেন না।

একই অবস্থা আব্বাস উদ্দিন ও আবুল কালামের। তারা অভিযোগ করে বলেন, ভিআইপিতে টিকিট কেটেছি। দিয়েছে ছাদের উপর। নেই কোন ধরণের রেলিং। যদি কেউ পড়ে যায় তার দায়ভার কে নিবে। এমন হলে দেশের ফুটবল কখনো এগিয়ে যাবে না।

এবিষয়ে জানতে চাইলে ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদক এডভোকেট জসীম উদ্দিন দায় চাপিয়েছেন ডেকোরেটার কর্তৃপক্ষের উপর। তার দাবি, এসব পাখা বাহির থেকে ভাড়ায় এনে লাগানো ছিল। কিন্তু ডেকোরেশনের ছেলেটা এটি সঠিকভাবে লাগানো ছিল না । তাই পড়ে গেছে।

প্রেস বক্সের এসিতে সংযোগ নেই কেন জানতে চাইলে তিনি তার সঠিক উত্তর না দিয়ে বলেন, আমরা সাংবাদিকদের জন্য নাস্তা-পানির ব্যবস্থা করেছি।
এর আগে, বিপ্লব কান্ডে চরম সমালোচনার মুখে পড়ে ক্রীড়া সংস্থা ও টুর্ণামেন্ট আয়োজক কমিটি। গতকাল ফাইনালে চকরিয়া চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।

পাঠকের মতামত: