নিজস্ব প্রতিনিধি, কক্সবাজার ::::
কক্সবাজার কারাগারে নজির আহমদ (৪৫) এক হাজতি রহস্যজনকভাবে মারা গেছে। শনিবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কারা অভ্যন্তরে মারা যায় সে। নজির আহমদ (৪৫) টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের দক্ষিণ নয়া পাড়ার আব্দু শুক্কুরের পুত্র । তার ২ মেয়ে ও এক পুত্র সন্তান রয়েছে।
তবে জেল সুপার বজলুর রশীদ আখন্দ দাবি করছেন, হাজতি নজির আহমদ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এরপরই নিয়মানুযায়ী বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে। কারাগারে মারধরের কারণে মৃত্যুর বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট হাতে এলেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে বলে দাবি করেন।
অন্যদিকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. সুলতান আহমদ সিরাজী বলেন, ২০ নভেম্বর ভোরে কক্সবাজার কারা কর্তৃপক্ষ একটি মৃতদেহ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। বিষয়টি আমাকে ওই সময় কর্মরত জরুরী বিভাগের চিকিৎসকরা অবহিত করেছেন।
এদিকে, ভোরে মৃতদেহ হাসপাতালে নিয়ে এলেও বিকেল পর্যন্ত রহস্যজনক কারণে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করতে গড়িমসি করতে দেখা যায় কারা কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের। বিকেল পাঁচ টা পর্যন্ত মৃতদেহ রেখে দেয়া হয় হাসপাতাল সংলগ্ন লাশ ঘরে। এ সময় নিহতের স্বজনদের হাসপাতাল প্রাঙ্গনে বসে থাকতে দেখা গেছে। হাসপাতালের মর্গের সামনে অর্পণ নামে এক ডেপুটি জেলারের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলাপ করতে চাইলেও তিনি বিষয়টি এড়িয়ে মোটর সাইকেল যোগে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। সন্ধ্যার দিকে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সুরতহাল রিপোর্ট সম্পন্ন করার পর পোস্ট মর্টেম করা হয়।
শনিবার সন্ধ্যায় কারাগারের অভ্যন্তরে মারা যায় নজির আহমদ। আর আজ ২০ নভেম্বর রবিবার ভোরে তার মৃতদেহ নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে। কারা কর্তৃপক্ষের এমন আচরণে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানিয়েছে, শনিবার ১৯ নভেম্বর সকাল ১০ টার দিকে কারাভ্যন্তরে নজির আহমদকে মারধর করা হয়। কারাগারে গাঁজা বিক্রির কারবার করার অভিযোগ এনেই তাকে মারধর করে কারাগারের সুবেদার রাজ্জাক ও চিফ রাইটার মানিক। এ সময় সুপার বজলুর রশীদ আকন্দ এবং জেলার আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন। এরপরই শারীরিক অবনতি ঘটতে থাকে তার। সন্ধ্যার দিকে কারাগারে হাসপাতালে মারা যায় সে।
মোহাম্মদ শাকের নামে নিহতের এক ভাইপো জানিয়েছে, গতকাল ১৯ নভেম্বর শনিবার এশার নামাজের পর কক্সবাজার কারাকর্তৃপক্ষ সাবরাং ইউপি’র ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার মাহমুদুর রহমানের মোবাইলে ফোন করে নজির আহমদের মৃত্যুর সংবাদ জানায়। এরপর স্থানীয় ইউপি সদস্যই তাদের কাছে মৃত্যুও সংবাদটি পৌঁছে দেন।
নিহতের ভাই মকতুল হোসেন জানিয়েছেন, তারা হাসপাতালের মর্গে নজির আহমদেও শুধু চেহারা দেখেছেন। অন্য কোন অঙ্গ দেখেননি। তবে, কারান্তরীন অন্যান্য স্বজনদের সঙ্গে আলাপ করে জেনেছেন গতকাল এশার নামাজের পর নজির আহমদ কয়েকবার বমি করেছিল। এরপর রাতেই কারাগারে মারা যায়।
পাঠকের মতামত: