বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম কক্সবাজার জেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের একই সাথে আন্দোলন ও নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার আহবান জানিয়েছেন।
তিনি শনিবার (৫ নভেম্বর) কক্সবাজার জেলা বিএনপির নির্বাহী কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই আহবান জানান।
মাহবুরের রহমান শামীম মনে করেন, ‘ভোটারবিহীন ক্ষমতাসীন এই সরকারকে কোন ভাবেই বিশ্বাস করা যায় না। তারা বিএনপিকে আগামি নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখার সবধরণের অপচেষ্টাই করে যাবে। তাই নির্বাচন প্রস্তুতির পাশাপাশি আন্দোলনের প্রস্তুতিও নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের চরিত্রই হলো ফ্যাসিবাদী। তারা অতীতেও ফ্যাসিবাদের পরিচয় দিয়েছে, এখনও ফ্যাসিবাদকে আকড়ে ধরে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করছে। বিরোধী দলকে রাস্তায় নামতে দিচ্ছে না। সমাবেশ করার অনুমতিও এই সরকারের প্রশাসনের কাছ থেকে মিলছে না।’
বিরোধী দলের মতাদর্শ ও আন্দোলন কর্মসূচি দমন করলেই ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় এই নেতা।
জেলা বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত এই সভায় কক্সবাজার জেলা বিএনপির নির্বাহী কমিটির নেতারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে জেলার সাংগঠনিক অবস্থান তুলে ধরেন। প্রধান অতিথি মাহবুবের রহমান শামীম ধৈর্য্য নিয়ে বিএনপির জেলা নেতাদের বক্তব্য শুনেন।
জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় জেলা সার্বিক রাজনীতি ও বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। জাতীয়তাবাদী এই দলটির সাংগঠনিক কাঠামো আরও মজবুত করতে বেশ কিছু সাংগঠনিক পরামর্শ ও সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে এই সভায়।
গুরুত্বপূর্ণ এই সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম ছাড়াও বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা উপস্থিত ছিলেন।
এদের মধ্যে ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ লুৎফুর রহমান কাজল, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দিন মজুমদার ও হারুনুর রশিদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মশিউর রহমান বিপ্লব, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা কলেজ শাখা সভাপতি মাসুদ করিম।
জেলা নির্বাহী কমিটির এই সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক লুৎফুর রহমান কাজল।
প্রধান বক্তা লুৎফুর রহমান কাজল বলেন, ‘কক্সবাজার জেলা অতীতেও বিএনপির ঘাঁটি ছিল, এখনও তাই আছে। ভবিষ্যতেও বিএনপির ঘাঁটিই থাকবে। তাই বলে হাল ছেড়ে দিয়ে বসে থাকলে হবে না। তৃণমূল থেকে শুরু করে জেলা পর্যায় পর্যন্ত সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে সাংগঠনিক কাঠামো মজবুত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি হলো গণমানুষের সংগঠন। এই সংগঠনকে সবসময় গণমুখী কার্যক্রম দিয়ে উজ্জীবিত রাখতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘এই অঞ্চলে ধানের শীষ হলো মানুষের অন্তরের ভালোবাসার প্রতীক। তারা ধানের শীষ মানেই বাংলাদেশকে বুঝেন। তাই কক্সবাজারের মানুষ সবধরণের নির্বাচনের ধানের শীষকেই জয়ী করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘সুষ্টু ও নিরপেক্ষ ভোট হলেও আগামি নির্বাচনেও কক্সবাজার জেলার চারটি সংসদীয় আসনেই ধানের শীষের বিজয় দিয়ে সাধারণ মানুষ বুঝিয়ে দেবেন বাংলাদেশ সবসময়ই বিএনপিকেই চায়।’
জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক আকতার চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না, সহ-সভাপতি এনামুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক ও মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা শাখা সভাপতি জামিল ইব্রাহিম চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক এড. আবু ছিদ্দিক ওসমানী, কক্সবাজার পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল হুদা চৌধুরী, মহেশখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট নুরুল আলম, কুতুবদিয়া উপজেলা বিএনপি সভাপতি জালাল আহমদ, পেকুয়া উপজেলা বিএনপি সভাপতি বাহাদুর শাহ, রামু উপজেলা সভাপতি এসএম ফেরদৌস, কক্সবাজার সদর উপজেলা বিএনপি সভাপতি আবদুল মাবুদ, টেকনাফ উপজেলা সভাপতি জাফর আলম, টেকনাফ পৌরসভা বিএনপি সভাপতি আবদুর রাজ্জাক, উখিয়া উপজেলা বিএনপি সভাপতি সরওয়ার জাহান চৌধুরী, ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা সাধারণ সম্পাদক শওকত আলম, চকরিয়া পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ফখরুদ্দিন ফরায়েজী, চকরিয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম. মোবারক আলী প্রমূখ। সভার শুরুতে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করেন জেলা বিএনপির সদস্য আবদুল মান্নান।
পাঠকের মতামত: