এম আবু হেনা সাগর ঃ ঈদগাঁও :::
সম্প্রতি কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষন আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে জেলা সদরের গুরুত্ববহ বানিজ্যিক কেন্দ্র ঈদগাঁও বাজার সহ পাশ্ববর্তী বিভিন্ন ইউনিয়নের নিমাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়ে। এতে করে শত শত ঘরবাড়ি পানিবন্দি হওয়ার পাশাপাশি দূর্ভোগ আর দূর্গতি বেড়েই চলছে ঐ এলাকার মানুষজনের। তাই এসব এলাকাকে বন্যাদূর্গত এলাকা ঘোষনার দাবী জানিয়েছে সাধারণ লোকজন। এমনকি রাবারড্যাম পয়েন্টের ভাঙ্গনকৃত বেড়িবাঁধটি দ্রুত সংস্কারের জোর দাবীও জানিয়েছেন। সূত্র মতে, প্রচন্ড বৃষ্টিপাতে ব্যস্তবহুল ঈদগাঁও বাজারে ১৩ টি পয়েন্টে ঢলের পানিতে বন্দি হয়ে পড়েছে। তৎমধ্যে- ঈদগাঁও কেন্দ্রী জামে মসজিদ সড়ক, স্বর্ণপল্লী সড়ক, জাগির পাড়া সড়ক, বাঁশঘাটা সড়ক, মাছ ও তরিতরকারী বাজার, পশ্চিমগলি সড়ক, সুপারী গলি, হাই স্কুল মাঠ পরিপূর্ণ পানিতে সয়লাব, ভূমি অফিস, চাউল বাজার সড়ক ও হাসপাতাল সড়ক। এমনকি পুরো বাজার এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, প্রায় তিন শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বৃষ্টি ও ঢলের পানি প্রবেশ করেছে দোকান পাঠে। তাতে দোকানের মালামাল ক্ষয় ক্ষতি হতেও দেখা যায়। আবার দোকানের কর্মচারীরা তক্তা, বালির বস্তা আর টিন দিয়ে পানি আটকে রাখার চেষ্টা করেও তাতেও সফল হয়নি তারা। বাজার এলাকা ছাড়াও পাশ্ববর্তী ঈদগাঁওর মাইজ পাড়া ভরা খাল সংলগ্ন লোকজন চরম দূর্ভোগে পড়েছে। অন্যদিকে ভোমরিয়া ঘোনা ও দরগাহ পাড়া প্লাবিত হয়ে একাকার হয়ে গেছে ঢলের পানি। যে দিকে যায় সে দিকেই পানি ছাড়া আর কিছু নেই। বহু পরিবার গেল রাতে চুলায় আগুন জ্বালাতে পারেনি। যার ফলে অনেক লোকজন উপোষ কিংবা অনেকে কলা মুড়ি খেতে কোন রকম রাত পার করেছে। জালালাবাদের জলদাস পাড়া পানিতে পরিপূর্ণ। বাড়ি ঘরে পানি প্রবেশ করার ফলে চরম দূর্ভোগ আর দূর্গতিতে পড়েছে। আবার রাবার ড্যাম পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনের ফলে লরাবাক, বটতলী পাড়া, পালাকাটা, মোহনভিলা, ইদ্রিসপুর পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। পাশাপাশি ইসলামাবাদের বিভিন্ন এলাকায় প্লাবিত বললেই চলে। আবার উপকূলীয় ইউনিয়ন পোকখালীর গোমাতলীর পাঁচটি গ্রাম দীর্ঘ প্রায় এক বছর ধরে জোয়ার ভাটায় বন্দি ছিল। তার উপর বৃষ্টিও ঢলের পানিতে নিমজ্জিত। পানিবন্দি এলাকায় গ্রামীণ সড়কগুলো পানির তোড়ের কারণে খানাখন্দকে পরিপূর্ণ হয়ে পড়ে। যাতে করে জন ও যানবাহন চলাচলে নিদারুন কষ্ট পাচ্ছে। পাশাপাশি বাঁশঘাটার সেই ঝুলন্ত ব্রীজ দিয়ে পারাপার বর্তমানে বন্ধ রয়েছে বলে জানান অনেকে। ইসলামাবাদ ইউপি চেয়ারম্যানের মতে, প্রচন্ড বৃষ্টির ফলে ঈদগাঁও নদীতে ঢলের পানিতে প্লাবিত হয় নিমাঞ্চল। বৃহত্তর এলাকাকে তিনি বন্যাদূর্গত এলাকা ঘোষনার জোরদাবী জানান। অপরদিকে জালালাবাদের ইউপি চেয়ারম্যান ও সাবেক সফল ছাত্রনেতার মতে, তার ইউনিয়নে বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনে ও ঢলের পানিতে প্রায় ৭/৮ শত পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। তিনি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে বৃহত্তর ঈদগাঁওতে দ্রুত সময়ে ত্রাণ সহযোগীতা প্রদানের পাশাপাশি বন্যাদূর্গত এলাকা ঘোষণার দাবী ও করেন। অপরদিকে ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাসেল উদ্দিন রাসেল তার ফেইসবুক আইডিতে লিখেছেন বৃহত্তর ঈদগাঁওকে বন্যাদূর্গত এলাকা ঘোষনা করা হউক। অন্যদিকে জালালাবাদ রাবারড্যাম পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনের খবর পেয়ে ঐদিনই কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকোশলী নেতৃত্বে ৭ সদস্যের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান।
পাঠকের মতামত: