আবদুল্লাহ আল আজিজ ::
কক্সবাজার শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে বালুকাময় ও নান্দিক সৌন্দয্যের রাণী ইনানী সমুদ্র সৈকতে দেশী বিদেশী পর্যটকদের ঢল নেমেছে।
পর্যটন মৌসুম শেষ প্রান্তে। অন্যদিকে স্বাধীনতা দিবস ও সাপ্তাহিক মিলিয়ে তিনদিনের টানা ছুটির ফাঁদে পড়েছে দেশ। ২৭ মার্চ কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গড়াচ্ছে চার দেশের খেলোয়াড়দের নিয়ে ‘ইমার্জিং কাপ’। এর রেশ এসে পড়েছে দেশের পর্যটন রাজধানী খ্যাত ইনানীতে।
কক্সবাজারের কলাতলী থেকে উখিয়ার মনখালী পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ সড়কের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হওয়ার সুবাধে পর্যটকেরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছে ইনানীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করার জন্য। কক্সবাজার বীচ এলাকায় পাথুরের কোন স্তুপ না থাকায় প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট পাথুর স্তূপে দাঁড়িয়ে সমুদ্র দেখার জন্য পর্যটকদের আর্কষন বেশি ইনানীর দিকে। এ বীচের পাটুয়ারটেকে পাথরের স্তুপ দেখলে মনে হয় যেন সৃষ্টির সব সৌন্দর্য্যে স্রষ্টা এখানে ঘিরে রেখেছেন। একদিকে সাগরের গর্জন অপরদিকে অনাবিল সৌন্দর্য্য ভরপুর পাহাড়ের হাতছানি সবাইকে বিমোহিত করে তোলে। পাটুয়ারটেকের সামান্য অদুরেই রয়েছে প্রাচীনকালের ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন কানা রাজার সুড়ঙ্গ, চিংড়ির পোনা উৎপাদনের হ্যাচারি জোন ও সুপারি বাগান ঘুরে দেখছেন।
দেখা গেছে, শত শত পর্যটক বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে মেরিন ড্রাইভ সড়ক ধরে কক্সবাজার থেকে ইনানী ভ্রমণে যাচ্ছেন। পথে বড়ছড়া পাহাড়ি ঝরনা, দরিয়ানগর পর্যটনকেন্দ্র, হিমছড়ি ঝরনা ও পাহাড়রচূড়ার বিনোদনকেন্দ্রেও ঢুঁ মারছেন অনেকে।
এছাড়া সাগরের পাশে রয়েছে, বিস্তীর্ণ ঝাউবিথি। এখানেই নানা প্রকার পাখির কলতানে মুখরিত হয়ে উঠে সৈকত অঙ্গন। বিস্তীর্ণ সৈকতের বালুচরে লাল কাকড়ার দৌঁড়াদৌঁড়ি পর্যটকদের বিশেষ আনন্দ দিয়ে থাকে। পাশাপাশি স্থানীয় দুর্বৃত্ত কর্তৃক ঝাউগাছ নিধন অব্যাহত থাকার ফলে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে উপকূলের জীবন ধারা। তারপরও এখানে নিয়মিত পর্যটকেরা আসা-যাওয়া করছে।
চট্টগ্রাম থেকে আসা পর্যটক দম্পতি মুজাহিদ ও মুস্তারিন জানিয়েছেন, ছুটিতে কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছি, ইনানী বীচ আমাদের খুব ভাল লেগেছে। সময় পেলেই বার বার ছুটে আসবো। হানিমুনে আসা অপর দম্পতি জানালেন, যদি কক্সবাজার বীচের মত এখানে সরকারি উদ্দ্যোগে দোকান পাট বরাদ্ধ দেওয়া হয় তাহলে পর্যটকসহ ভ্রমণ পিপাসুদের কোন সমস্যা থাকবে না। পাশাপাশি দর্শনার্থীদের সংখ্যাও ব্যাপক বৃদ্ধি পাবে।
গাইবান্ধা থেকে ভ্রমনে আসা মোহাম্মদ আল আমিন বলেন, জীবনের প্রথম ইনানী সমুদ্র সৈকতে এসে খুবই ভাল লেগেছে। কক্সবাজার সৈকতের চেয়ে অনেকটা ভিন্নতা আছে এখানে। পাথর গুলো খুবই চমৎকার। এক একটি একেক রকমের। সময় হলে কক্সবাজারে আসলেই ইনানী সৈকত ঘুরে যাব।
এইছাড়া শুক্রবার সকাল থেকে জেলার পর্যটন স্পটসমূহে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন পর্যটকরা। শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটি। রোববার মহান স্বাধীনতা দিবসসহ টানা তিনদিনের ছুটিতে পূর্বের মতো চার লক্ষাধিক পর্যটকের আগমন ঘটেছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের বেলাভূমিতে।
পাঠকের মতামত: