নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
এতিমের নামে বরদ্দকৃত টাকা আত্মসাৎ করি নাই; ষড়যন্ত্রকারীরা মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে। সাধারণ জনগনের কাছে আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে সামাজিকভাবে মানক্ষুন্ন করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে কুচক্রীমহল। আমার জানামতে আমি এতিমের কোন ধরনের হক মেরে খাইনি। দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আমার জীবদ্দশায় ৪১বছর ধরে ইসলাম প্রিয় মানুষের মাঝে কুরআনের দাওয়াত পৌঁছে দিতে নিরলসভাবে খেদমত করে আসছি।
কতিপয় মহল কর্তৃক আমার বিরুদ্ধে আনীত মিথ্যা অভিযোগ ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছু নয়। শনিবার ২৬অক্টোবর দুপুর ২টার দিকে চকরিয়া প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে হাফেজ মাওলানা বশির আহমদ এ অভিযোগ করেন। তিনি আরো বলেন, কোন ব্যাক্তি এতিমখানার জন্য জমি না দেওয়ায় আমি আমার ক্রয়কৃত জমি হতে ৩০শতক জমি রহমানিয়া বালক-বালিকা হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার নামে ওয়াক্ফ করে দেই। ওই জমিতে ২২জন এতিমসহ হেফজ শিক্ষার্থীদের জন্য ২০১৮সালে আবাসন হিসেবে পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। আমারই তত্ত্বাবধানে ২২জন এতিম হেফজ শিক্ষার্থীসহ পুরো প্রতিষ্ঠানের ব্যয়ভার বহন করে আসছি।
এ প্রতিষ্ঠান চকরিয়া পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড পুকপুকুরিয়া গ্রামে ১৯৯৫সালে প্রতিষ্ঠা করে সমাজ সেবা অধিদপ্তর কর্তৃক ২০০৫ সালে কক্স- ২৯৪/০৫ মূলে নিবন্ধন লাভ করে এবং ২০০৭সালে প্রতিষ্ঠানটি সরকারি ক্যাপিটেশন গ্রান্ডপ্রাপ্ত হয়। এলাকাবাসীর সহযোগিতা ও আমার একক প্রচেষ্টায় এসব উন্নয়ন কর্মকান্ড সহ্য করতে না পেরে প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে একটি স্বার্থান্বেষী মহল উঠে পড়ে লেগেছে।
সংবাদ সম্মেলনে হাফেজ মাওলানা বশির দাবি করেন, ওই এলাকার জনৈক বশির মাহমুদ প্রকাশ চাঁদাবাজ বশির, মনছুর আলম, নাছির উদ্দিন, ছাবের আহমদ ও সালেহ আহমদ প্রকাশ মাকর সাদেকের নেতৃত্বে কতিপয় চক্রটি মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে প্রতিষ্ঠান ও আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে।
অতএব, সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আমি প্রতিপক্ষগণকে কথিত জমি উদ্ধার তথা আত্মসাতের অবান্তর অভিযোগ তুলে এতিম ও কুরআন হেফজ করার প্রতিষ্ঠান এতিমখানা ও হেফজখানার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
মাওলানা হাফেজ বশির আহমদ বলেন, চকরিয়া উপজেলার কাকারা তাজুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে চাকুরীরত আছি। পাশাপাশি আমার প্রচেষ্টায় শাহ জব্বারিয়া এতিমখানা ও হেফজখানা প্রতিষ্ঠা করি।
আমি বিগত ২০১৪ সনে হজ্ব পালনে যাওয়ার সময় একই কুচক্রি মহল আমার বসতভীটা ও এতিমখানার জন্য ক্রয়কৃত জমির অবৈধ মালিকানা দাবী করে। তাদের হজ্ব থেকে দেশে ফিরেই সমাধান করবো বলে জানিয়ে দিই এবং হজ্জ থেকে এসে সমাধানের উদ্যোগ নিলে অভিযুক্তরা কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। ওই ১লাখ ৫০ হাজার টাকা সহানুভূতি সুলভ চাদা দিয়ে আর কোনদিন চাঁদা নেবেনা বলে ননজুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে।
পরবর্তীতে ২০১৬ সালে পূণরায় অন্যায়ভাবে আরো ২লাখ টাকা চাঁদা আদায় করে। সর্বশেষ ২০১৮সালে আবারো চাঁদা দাবী করলে মাননীয় সংসদ সদস্য ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে চাঁদা দাবী থেকে সরে দাঁড়ায়।
হাফেজ বশির আহমদ বলেন, ২০১২ সনে আমি বায়তুশ শরফ মসজিদের খতিব থাকাকালে শাহ জব্বারিয়া এতিমখানা নাম নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হলে এরপর থেকে রহমানিয়া হাফেজিয়া বালক-বালিকা এতিমখানা ও হেফজখানা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে সরকারীভাবে নাম পরিবর্তন করে পূর্বের রেজিষ্ট্রেশন অনুযায়ী রেজিষ্ট্রিকৃত জায়গাতে রহমানিয়া হাফেজিয়া বালক-বালিকা এতিমখানা ও হেফজখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়।
তিনি বলেন, দুইটি প্রতিষ্ঠানই আমার হাতে পরিচালিত হয়ে আসছে। তাই রেজিষ্ট্রেশন অনুযায়ী ২২জনের সরকারি কেফিটেশন পাওয়ায় তা রহমানিয়া হাফেজিয়া বালক-বালিকা এতিমখানার জন্য রেখে শাহ জব্বারিয়া এতিমখানার জন্য নিজস্ব পক্ষ থেকে অর্ধেক টাকা ব্যয় করবেন বলে জানান। পরিশেষে মিথ্যা ও বিভ্রান্তি মূলক সংবাদে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কাউকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহবান জানিয়েছেন।
পাঠকের মতামত: