মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ::
সম্পত্তির লোভে আপন ভাগিনাকে পরিকল্পিতভাবে খুনের অভিযোগ তুলেছে নিহতের চাচা বদিউল আলম। মা-বাবা না থাকায় মামা নাছির উদ্দিন বাদশা ও মামী ফাতেমা বেগম শারিরীক, মানসিক নির্যাতন ও মায়ের রেখে যাওয়া সহায় সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে বিষময় করে তুলেছিল কামাল হোসেনের জীবন। নিজের বাড়ি থেকে বের করে দেয়া ও সম্পদ থেকে বঞ্চিত করায় গত ১২ মার্চ রবিবার ক্ষোভে বিষপান করে মারা যায় লামার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে বাশঁখাইল্লা ঝিরি নতুন মুসলিম পাড়ার কামাল হোসেন (১৯)।
নিহতের চাচা বদিউল আলম বলেন, ৪/৫ বছর আগে আমার বড় ভাই শফিউল আলম ও ভাবী মনোয়ারা বেগম ফাঁসিয়াখালীর বাশঁখাইল্লা ঝিরি নতুন মুসলিম পাড়ার বসবাস শুরু করে। তাদের পূর্বের বাড়ি ছিল বামলু পাড়া, রাজাখালী, পেকুয়া, কক্সবাজার। বাশঁখাইল্লা ঝিরিতে এসে জনৈক রুহুল আমিন থেকে ২ একর জায়গা ২৫ হাজার টাকায় ক্রয় করে ঘর তৈরি করে বাস করে। কিছুদিন পরে আমার ভাই ভাবীর সাথে রাগ করে চলে যায়। ভাবী ও ভাগিনা কামাল হোসেন সেখানে একা থাকত। দেড় বছর আগে আমার ভাবী মারা যায়। ছেলেটি একা হয়ে পড়ে। মৃত্যু কালে আমার ভাবী ৪টি গরু, ১ভরি স্বর্ণের অলংকার, ২ একর জমি ও কিছু নগদ টাকা রেখে যায়। এই সম্পত্তির লোভে তারা ছেলেটিকে অত্যাচার শুরু করে। যাতে কামাল হোসেন এলাকা ছেড়ে চলে যায়। তাদের নির্যাতন সইতে না পেরে বিষপান করে ভাতিজা। জানতে পারি মরার আগে সে ২ দিন না খেয়ে ছিল।
পার্শ্ববর্তী বাড়ির বাসিন্দা জান্নাতুল ফেরদৌস (৪২) জানায়, কামাল হোসেনের মা মারা যাওয়ার পরে তার মামা নাছির উদ্দিন বাদশা তাদের বাড়ি দখল করে নেয়। একমাস আগে ছেলেটিকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। কারো বাড়িতে থাকলেও বকাবকি করত। অন্যের মেয়ে নিয়ে কলংক দেবে বলে হুমকি দিত। অসহায় ছেলেটি মসজিদের বারান্দায় ঘুমাত।
বাশঁখাইল্লা ঝিরির মোঃ নাছির (৩৯) বলেন, বেলা ২টায় বাড়ির সামনে ছেলেটি বিষপান করে। তাদের সামনে ছেলেটি ছটপট করলেও তারা ছেলেটিকে ডাক্তারের কাছে নেয়নি। বাদশা পাড়ার সকলকে ফোন করে নিষেধ করে কেউ যেন কামাল কে হাসপাতালে না নেয়। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আমি এলাকার গিয়াস উদ্দিন ও সাহাবউদ্দিন নিয়ে তাকে চকরিয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে গেলে অনেক দেরী হয়ে গেছে বলে ডাক্তার তাকে কক্সবাজার হাসপাতালে রেফার করে। কক্সবাজার নেয়ার পথে হাসেঁর দিঘি পর্যন্ত গেলে গাড়ীতে সে মারা যায়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লামা থানার পুলিশ লাশ নিয়ে যায়। বাদশা আরো ২টি কাটাকাটি মামলার আসামী।
মামা নাছির উদ্দিন বাদশা ও মামী ফাতেমা বেগম বলেন, এই সম্পত্তি আমাদের। কিন্তু কোন প্রকার দলিল বা ডকুমেন্ট দেখাতে পারেনি।
লামা থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক ও এই অপমৃত্যুর মামলার তদন্তকারী অফিসার ইকবাল মনির বলেন, গত ১২ মার্চ একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়। মামলা তদন্তনাধীন রয়েছে। ডাক্তারী রিপোর্ট এখনো আমরা পাইনি।
পাঠকের মতামত: