ঢাকা,সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

আজ আখেরী মোনাজাত

কক্সবাজার প্রতিনিধি ::

কক্সবাজারের ইজতেমার দ্বিতীয় দিনে কয়েক লাখ লাখ মুসল্লি জুমার নামাজ আদায় করেছেন। জুমার নামাজে ইমামতি করেন মুফতি জসিম উদ্দিন। নামাজ শেষে তিনি মুসলিম উম্মাহর সুদৃঢ় ঐক্য, দুনিয়া ও আখেরাতের শান্তি, দেশের কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করেন। মোনাজাতে তিনি আত্মশুদ্ধি ও গুনাহ মাফের পাশাপাশি দুনিয়ার সব বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত করার জন্য দুই হাত তুলে আল্লাহর দরবারে রহমত কামনা করা হয়। এ সময় ‘আমিন, আল্লাহুম্মা আমিন’ ধ্বনিতে ইজতেমা ও আশপাশের এলাকায় এক অন্যরকম পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সকাল ১০টা থেকেই মুসল্লিরা ইজতেমা স্থলে আসতে শুরু করেন। বেলা ১২টা নাগাদ কানায় কানায় পুর্ণ হয়ে যায় শহরের ডায়বেটিস পয়েন্টস্থ ইজতেমার মাঠ। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ও কন কনে শীতে বয়ান কার্যক্রম কিছুটা বিঘিœত হলেও মাঠ জুড়েই অবস্থান করেছেন মুসল্লিরা।ফজরের নামাজের পর বয়ান শুরু করেন মুফতি মুনির বিন ইউচুপ। তিনি এ সময় বলেন, নামাজের বিকল্প নেই। আল্লাহ’র দাওয়াত ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া প্রতিটি মুসলমানের দায়িত্ব। জুমার নমাজের পর বয়ান করেন মৌলভী আনাছ। আছরের নামাজের পরে বয়ান করেন মুফতি মোরশেদ।
গতকাল ইজতেমায় জুমার নামাজ আদায় করতে মুসল্লিদের ¯্রােত পড়ে ইজতেমা মাঠের দিকে। শহরের প্রায় সবকটি মসজিদে তেমন মুসল্লি ছিল না। বেলা ১২টার পর ইজতেমা স্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। হলিডে’র মোড় থেকে তিনটি চেকপোষ্ট বসানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। চেকপোষ্টের কড়া তল্লাশী পেরিয়ে মুসল্লিরা ইজতেমাস্থলে পৌঁছায়।
ইজতেমা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, জুমার নামাজে স্থায়ী মুসল্লী ছাড়াও কক্সবাজার শহর, কক্সবাজার সদর, উখিয়া ও রামুসহ দূর-দূরান্ত থেকে বিপুল মুসল্লী অংশ নিতে আসেন। সব মিলে অন্তত আড়্াই লক্ষ মুসল্লী এক সাথে নামাজ আদায় করেছেন। কর্তৃপক্ষ আরো জানান, জেলা পর্যায়ে ক্যাটাগরিতে কক্সবাজারে তৃতীয়বারের মতো ইজতেমা অনুষ্ঠিত চলছে। আগামি বছর কক্সবাজারে ইজতেমা হবে না। ইজতেমা স্থলে অন্তত সাড়ে পাঁচ লাখ মুসল্লী সমাগমের লক্ষ্য নিয়ে ১৭ একর জায়গায় প্যান্ডেল করা হয়েছে। ইজতেমায় তাবলিগ জামাতের আহলে সুরা মাওলানা মোজাম্মেলুল হক, ছৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম, মাওলানা মোশারফ ও কাকরাইল মসজিদের ওস্তাদ মাওলানা মনির বিন ইউসুফসহ দেশবিদেশের আরো বেশ কয়েকজন বক্তা বয়ান করছেন। আজ শনিবার অনুষ্ঠিত হবে আখেরী মোনাজাত।
ইজতেমা কমিটির জিম্মাদার আতাউল করিম জানান, গতকাল ইজতেমা স্থলে এক মুসল্লির মৃত্যুত হয়েছে। গতকাল জুমার নামাজের পর ইজতেমা স্থলে তার নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার নাম আবুল কাসেম। বাড়ি পিএমখালীর জুমছড়ি গ্রামে।
এদিকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ও কন-কনে শীতে বয়ান কিছুটা বিঘœ সৃষ্টি হলেও মাঠ জুড়েই রয়েছেন মুসল্লিরা। আগত মুসল্লি আবুল হোসেন গুনু জানিয়েছেন, ভারি বৃষ্টিপাত হলেও আমরা মাঠ ছেড়ে যাব না। আজ আখেরী মোনাজাত শেষ করেই চিল্লায় বেরিয়ে পড়। বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত মুসল্লিদের অধিকাংশ চিল্লায় বেরিয়ে পড়বেন ইজতেমা শেষে। সকলেই এমন প্রস্তুতি নিয়ে ইজতেমায় এসেছেন।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন বলেন, ইজতেমা স্থলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হয়েছে। বসানো হয়েছে একাধিক চেকপোষ্ট। সেই সাথে সব ধরণের গোপনীয় নাশকতার আশঙ্কা ঠেকাতে গোয়েন্দা নজরদারী রয়েছে।

পাঠকের মতামত: