ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

পেকুয়ার রাজাখালী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে

আ.লীগের মনোনয়ন দৌড়ে তিন নেতা, মাঠে নেই বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক ::
আসন্ন পেকুয়ার রাজাখালী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলের মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন মনোনয়ন প্রত্যাশী আওয়ামী লীগ নেতারা। নৌকা পাওয়ার জন্য লড়াইয়ে আছেন আওয়ামী লীগ তিনজন। তাঁরা হলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ নেতা ছৈয়দ নুর, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. নাছির উদ্দিন। এর মধ্যে নৌকা পাওয়ার দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে আছেন সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল। এমনটি আভাস দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা। কিন্তু তিনজনই প্রচারণায় সরগরম রেখেছেন পুরো রাজাখালী।
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও নির্বাচনী মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছেন। ইউনিয়নের বাজার, পাড়া ও পথে-ঘাটে ব্যানার ফেস্টুন ঝুলিয়ে নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করছেন তাঁরা। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন তরুণ রাজনীতিবিদ তৌহিদুল ইসলাম সুজন। তাঁর মতে শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে থাকা রাজাখালীর জন্য নেতৃত্বের পরিবর্তন প্রয়োজন। “তিনি বলেন, পেকুয়া উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়ন থেকে শিক্ষায় রাজাখালী বেশ পিছিয়ে। কিন্তু বর্তমান সময়ে মানুষ আগের চেয়ে একটু সচেতন হয়েছে বলে মনে হয়। সে জায়গা থেকে বলতে পারি, আগামী নির্বাচনে একটা বিপ্লব হতে যাচ্ছে। যা পরিবর্তনের বিপ্লব।”
তিনি আরও বলেন, রাজাখালীতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছি। আমি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকবো। সাবেক জামাত নেতা হুমায়ুন কবিরও এই ইউপি থেকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার কথা জানিয়েছেন। তিনিও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লড়বেন। পিছিয়ে পড়া উপকূলীয় ইউনিয়ন রাজাখালীতে শিক্ষার প্রসার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির তরে কাজ করতেই চেয়ারম্যান হতে চান বলে জানান হুমায়ুন।

 

অন্যদিকে আ.লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রচারণায় সমানতালে দাপিয়ে বেড়ালেও মাঠে নেই বিএনপি। ২০১৬ সালে এই ইউপিতে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন আনোয়ার হোছাইন সিকদার। এবারের নির্বাচনে শারিরীক অসুস্থতার কারনে অংশগ্রহণ না করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
উপজেলা বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব আবুল বশর বাবু ও যুগ্ম আহবায়ক জিয়াউল হক জিয়া থেকে যেকোন একজন নির্বাচনে অংশ নিবে। কিন্তু তাঁদের মুখে শোনা গেলো অন্য কথা। জিয়াউল হক জিয়া বলেন, “চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার ইচ্ছে আছে। কিন্তু দল যেহেতু নির্বাচনে যাচ্ছেনা তাই আমিও মাঠে আর প্রচারণা চালিয়ে যেতে চাচ্ছিনা। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে আমি যাবোনা।” এক্ষেত্রে বিএনপির অন্য নেতা আবুল বশর বাবু একটু নমনীয়।
তিনি জানান, নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারি। তবে সিদ্ধান্ত নিবো তপশিল ঘোষণার পর। রাজাখালীর বাসিন্দা, ছাত্রনেতা সালাহ উদ্দিন রানা বলেন, বর্তমান সরকার উন্নয়নে বিশ্বাসী সরকার। এরপরেও যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে সবদিক দিয়ে পিছিয়ে পড়েছে এই উপকূলীয় ইউনিয়ন। তাই আমি মনে করি আগামীতে সমৃদ্ধ রাজাখালী পাওয়ার জন্য দক্ষ, সৎ, নিষ্ঠাবান, সর্বোপরি যোগ্য একজনকে চেয়ারম্যান হিসেবে চায় ইউনিয়নবাসী।
গত নির্বাচনে এই ইউপিতে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি আজমগীর চৌধুরী। সেবার আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছৈয়দ নুরের কাছে হেরে যান প্রয়াত এই আওয়ামী লীগ নেতা। স্বনির্ভর রাজাখালী গড়া তাঁর স্বপ্ন ছিলেন বলে জানান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল। তিনি বলেন, রাজাখালী নিয়ে আজমগীর সাহেবের স্বপ্নের শেষ ছিলোনা। রাজনৈতিক কিছু কূটকৌশলে গতবার ওনি হেরে যান। আমার ইচ্ছা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে ওনার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা।
দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। ছাত্র রাজনীতি দিয়ে আমার পথচলা শুরু। বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছি। আশা করবো দল আমাকে মূল্যায়ন করবে। আওয়ামী লীগ নেতা ও রাজাখালীর বর্তমান চেয়ারম্যান ছৈয়দ নুর বলেন, “আমি সবসময় আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছি।
আসন্ন নির্বাচনে আমিও নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে চাই। শুনেছি আমি ছাড়া আরও দুইজন নৌকা নিয়ে নির্বাচন করতে চায়।” দলের মনোনয়ন না পেলে প্রার্থী হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজাখালীর মানুষ আমাকে চাই। দল মনোনয়ন না দিলেও আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করবো।

পাঠকের মতামত: