ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

অপহৃত সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মনজু তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেলেন

মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া ::

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক জনপ্রিয় ভাইস চেয়ারম্যান ও রাজাখালী ডিগ্রি মাদ্রাসার আরবী প্রভাষক মুহাম্মদ নুরুজ্জামান মনজু অপহৃত হয়েছে। পরে মনজুর পরিবারের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে অপহরণকারীরা। ঘটনাটি ঘটেছে, গত ১৮ জুন দুপুর ১টার দিকে চকরিয়া কোর্ট সেন্টার এলাকায়। এ ঘটনায় নুরুজ্জামান মনজু বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন।

পেকুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নুুরুজ্জামান মনজুর স্বাক্ষরিত চকরিয়া থানায় দায়েরকৃত এজাহারে উল্লেখ করেছেন, তিনি গত ১৮ জুন দুপুরে চকরিয়া আদালতে একটি মামলার হাজিরা শেষে কোটের সামনের সড়কে দাঁড়িয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এসময় দক্ষিণ দিক থেকে একটি নোহা গাড়ি যোগে চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজার ইউনিয়নের কাটাখালী এলাকার মোহাম্মদ হোসেনের পুত্র মোজাম্মেল হক (৪২) ও একই উপজেলার শাহারবিল ইউনিয়নের মাইজঘোনা মৌলভী পাড়া গ্রামের মৃত আবুল হাসেমের পুত্র নাছির উদ্দিনের নেতৃত্বে আরো অজ্ঞাতনামা তিনজন লোক তাকে টানা হেছড়া করে ওই গাড়িতে উঠিয়ে নেয়। এরপর তাকে চকরিয়া পৌরসভাস্থ সমবায় সমিতি মার্কেটের তৃতীয় তলার উত্তর পাশ্বের একটি কক্ষে নিয়ে এসে জিম্মি করে রাখে।

নুুরুজ্জামান মনজু জানান, তিনি গত তিন বছর পূর্ব থেকে চকরিয়া ম্যানগ্রোভ এসেস লিমিটেড এর একজন শেয়ার হোল্ডার এবং পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাকে অপহরণের সাথে জড়িত মোজাম্মেল হক উক্ত কোম্পানির এমডি থাকাকালে কোম্পানির ৪৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছিলেন। পরে কোম্পানির পক্ষ থেকে নিয়োগকৃত ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির অডিটরের মধ্যে তিনিও (মনজু) একজন ছিলেন। পরে কোম্পানি কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্ত অডিটরা মোজাম্মেলের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করেছিলেন। এরপর থেকে প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে নুরুজ্জামান মনজুকে নানান ধরনের হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিলেন মোজাম্মেল হক।

মামলার এজাহারে মনজু আরো উল্লেখ করেন, ঘটনার দিন অপহরণকারীরা তাদের টর্সার সেলে নিয়ে তাকে মারধর করেন এবং চাকু দিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে দশ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে তিনি বাধ্য হয়ে তার স্ত্রীকে ফোন করে বাড়িতে রক্ষিত তিন লাখ টাকা নিয়ে চকরিয়া আসার জন্য ফোন করেন। এরপরে বিকাল ৪ টার দিকে নুরুজ্জামান মনজুর কাছ থেকে জোর করে মোজাম্মেল হক ও নাছির উদ্দিন ১০০টাকা মূল্যমানের তিনটি ননজুডিসিয়াল স্টাম্পে স্বাক্ষর আদায় করেন। স্টাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার পর মনজুকে আবারো মারধর করে অপহরণকারীরা। এরপর নুরুজ্জামান মনজুর স্ত্রীকে তিন লাখ টাকা নিয়ে অপহরণকারীরা বরইতলী ইউনিয়নের শান্তি বাজার নামক স্থানের পশ্চিম পার্শ্বের হারবাং ছড়া ব্রীজ এলাকায় মাগরিবের পর আসার জন্য বলে। অপহরণকারীরা এসময় চকরিয়া থেকে মনজুকে মুক্তিপণের টাকা আদায়ের জন্য ঘটনাস্থলে নিয়ে মুক্তিপণের তিন লাখ টাকা আদায় করে ছেড়ে দেয়।

নুরুজ্জামান মনজুর স্ত্রী আয়েশা ছিদ্দিকা চকরিয়া নিউজকে জানান, তার স্বামী তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়ে ১৮ জুন রাতেই চকরিয়া থানায় অপহরণের সাথে জড়িত মোজাম্মেল হক ও নাছির উদ্দিনসহ অজ্ঞাতনামা আরো তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন।

নুরুজ্জামান মনজু আজ ২১ মার্চ সন্ধ্যায় চকরিয়া নিউজ প্রতিবেতককে জানান, ঘটনার দিন রাতে চকরিয়া থানায় অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় এজাহার দায়ের করেছি। তবে গত তিনদিনেও চকরিয়া থানা পুলিশ তার এজাহারটি নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করেনি।

পাঠকের মতামত: