ঢাকা,রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় বনভুমি বেচাকেনা: এক ডাক্তারসহ ৬ প্রভাবশালীর বিরোদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী

মনির আহমদ, কক্সবাজার ::  চকরিয়ার ফাসিয়াখালী রেঞ্জের মালুমঘাট ষ্টেশনে মহাসড়ক সংলগ্ন রিজার্ভ বনভুমি বেচাকেনার দালিলিক প্রমানের ভিত্তিতে

৬ প্রভাবশালীর বিরোদ্ধে বনআইনে মামলা করেছে সংশ্লিষ্ট বন কর্তৃপক্ষ। ডুলাহাজারা বনবিট কর্মকর্তা ইলিয়াস হোসেন বাদী হয়ে চকরিয়া সিনিয়র জুড়িসিয়াল মেজিষ্ট্রেট আদালতে ২৩ আগষ্ট মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং সিআর ৯১৫/২১, ধারা ৪৪৭/৪২৭/৪৬৭/৪৬৮/৫০৬(২)৩৪ দন্ডবিধির এবং ফৌজদারী কার্যবিধি ৫২২। মামলাটি গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেছে বলে জানিয়েছেন বাদী।

মামলা সুত্রে জানা যায়, চকরিয়ায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক সংলগ্ন কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফাসিয়াখালী রেঞ্জের মালুমঘাট ষ্টেশনে ৪ শতক বনভুমিতে তৈরী করা দুইতলা বিশিষ্ট একটি ভবন ডুলাহাজারা মগছড়া জোমনাথপাড়া মৃত রামানন্দ নাথ এর পুত্র মামলার ১ নং আসামী হরি রঞ্জন নাথ (৫৮) এর নিকট থেকে ১৫ লক্ষ টাকা মুল্যে ক্রয় করেন মামলার ২ নং আসামী ডুলাহাজারার বাসিন্দা চট্টগ্রামের প্রখ্যাত ডাক্তার আনোয়ারুল হক চৌধুরী। ক্রেতা জমিসহ দোকান ঘরটি ক্রয়ের পর দেখভাল করার দায়িত্ব দেন তারই নিকটাত্মীয় ডুলাহাজারা ইউনিয়নের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমিনুল এহেছান মেম্বার প্রকাশ সাইফুল চেয়ারম্যানকে।

জানাযায়, কেয়ার টেকার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমিনুল এহেছান মেম্বার প্রকাশ সাইফুল বিভিন্নজনকে ভাড়া দিয়ে টাকা আত্মসাতের পাশাপাশি দোকানঘরটি বেহাত করে আত্মসাত সহ জবর দখলের চেষ্টা চালালে ক্রেতা মালিক ডা: আনোয়ারুল হক চৌধুরী ও তাঁর কেয়ারটেকার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমিনুল এহেছান মেম্বার প্রকাশ সাইফুল সহ কয়েকজনের মধ্যে চকরিয়া সিনিয়র জুড়িসিয়াল আদালতে সিআর ৭৬৪/১৯ নং মামলার উদ্ভব হয়।

চকরিয়া সিনিয়র জুড়িসিয়াল আদালতের হাকিম চাহিদা মোতাবেক মামলাটি কক্সবাজার পুলিশি ব্যোরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), বন সংরক্ষক চট্টগ্রাম অঞ্চল হয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, কক্সবাজারে তদন্তের ভার পড়ে। মামলার দীর্ঘ তদন্ত ও বিচার বিশ্লেষনে জমিটি বনবিভাগ কর্তৃক নিজেদের আওতায় উদ্ধারে আনার বাধ্যবাদকতায় পড়ে।

এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট ফাসিয়াখালীর রেঞ্জের দ্বায়িত্বরত সহকারী বনসংরক্ষক এইচএম আহসানুল হক এবং রেঞ্জ কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম ও বনকর্তাদের দ্বায়িত্ববোধ প্রশ্নবিদ্ধ সহ গলার কাটা হয়ে উঠে বিষয়টি। এ ঘটনায় বনবিভাগের জমি কেনাবেচার বিষয়টি ওপেন সিক্রেট হয়ে পড়ে। পরিশেষে বাধ্য হয়ে বিক্রেতা, ক্রেতা ও ভোগদখলকারী ৬ জনকে আসামী করে বন আইনের ৪৪৭/৪২৭/৪৬৭/৪৬৮/৫০৬(২)৩৪ দন্ডবিধির এবং ফৌজদারী কার্যবিধি ৫২২ এর সিআর ৯১৫/২১নং মামলা করেন ডুলাহাজারা বনবিট কর্মকর্তা ইলিয়াস হোসেন।

মামলায় আসামী করা হয় বনভুমি বিক্রেতা ডুলাহাজারা মগছড়া জোমনাথপাড়া মৃত রামানন্দ নাথ এর পুত্র হরি রঞ্জন নাথ, ডুলাহাজারা মাইজপাড়ার মরহুম বসির আহমদ চৌধুরীর পুত্র ডা: আনোয়ারুল হক চৌধুরী, ও এফজালুল হক চৌধুরীর পুত্র ডুলাহাজারা ইউনিয়নের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমিনুল এহেছান মেম্বার প্রকাশ সাইফুল (৪৭), ডুলাহাজারা চা বাগান এলাকার তৌহিদুল ইসলাম (২৫), ১ নং ওয়ার্ড সোয়াজানিয়ার মৃত সিরাজুল হকের পুত্র জাকারিয়া (৩২) এবং চট্টগ্রাম হালিশহর সোনাশাহ মাজার রোড় ২৮৭ নং পুর্ব রামপুর হেলেন ভিলা (৩য় তলা) মৃত মফিজুর রহমানের পুত্র মোহাং হুমায়ুন কবির।

মামলার বাদী ডুলাহাজারা বনবিট কর্মকর্তা ইলিয়াস হোসেন মামলার সত্যতা স্বীকার করে, ৬ আসামী সকলের বিরোদ্ধে আদালত গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছে বলে জানান।

মামলার আসামী ডুলাহাজারা মাইজপাড়ার মরহুম বসির আহমদ চৌধুরীর পুত্র ডা: আনোয়ারুল হক চৌধুরী মোবাইল ফোনে মামলার সত্যতা স্বীকার করেন।

পাঠকের মতামত: