ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

“ভেজালের ভিড়ে আসল সাংবাদ কর্মীরা উধাও”

সাংবাদিক পরিচয়ে বিরিয়ানি খেতে এসে ধরা

নিজস্ব প্রতিবেদক :: ইয়াবা ব্যবসায়ী মো. ইমরান (২৯)। ৯ম শ্রেণি পাশ, এই ব্যক্তি হঠাৎ করেই বনে যান সাংবাদিক! দুইটি পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে এবং হাতে মোবাইল ক্যামেরা নিয়ে শুক্রবার (৩০ জুলাই) রাতে ঢুকে যান হাজী কাচ্চিঘর হোটেলে। দাবি করেন এক প্যাকেট বিরিয়ানি ও এক হাজার টাকা। অন্যথায় লাইভে হোটেলের ১২টা বাজানোর হুমকি দেন। কৌশলে হোটেল ম্যানেজার পুলিশকে ফোন করেন। এরপর হোটেলে গিয়ে ইমরানকে গ্রেফতার করা হয়।

ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ইমরানের পুরো পরিবারই মাদক ব্যবসায় জড়িত। তার বাবা ডবলমুরিং থানা এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান বাবুল প্রকাশ ডাইল বাবুল। মামলা আছে ২টি। মা শারমিন আক্তার প্রকাশ ডাইল শারমিন প্রকাশ শামীমা আগ্রাবাদ ডেবার পূর্বপাড় এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধেও মামলা আছে ৩টি। ইমরানের বিরুদ্ধে মামলা ২টি। দৈনিক চট্টগ্রামের পাতা এবং আলোকিত চট্টগ্রাম ডটকম নামে দুইটি সংবাদপত্রের পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে হাঁটেন তিনি। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টায় আগ্রাবাদ বাদামতলী মোড়ে হাজী কাচ্চি ঘর নামের এক বিরিয়ানি দোকানে যান ইমরান।

হোটেল ম্যানেজার মো. শামীম জানান, লকডাউনের জন্য শুধুমাত্র খাবার পার্সেলের ব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। কিন্তু দোকান মেরামতের কিছু কাজ থাকায় সাটার নামিয়ে কিছু কাজ চলছিল। এমন সময় ইমরান এসে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিরিয়ানি দিতে বলেন। বিরিয়ানি নেই বললে তিনি বলেন, ‘আমাদেরও যদি না খাওয়ান তাহলে খাওয়াবেন কাকে?’ এরপরও আমরা বিরিয়ানি নেই বললে তিনি ক্ষেপে যান এবং মোবাইল দিয়ে ভিডিও করতে থাকেন।

তিনি বলেন, লাইভে এখন এই হোটেলের ১২টা বাজানো হবে। হোটেল কর্মচারীরা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করলে তিনি এক প্যাকেট বিরিয়ানি ও ১ হাজার টাকা দাবি করেন। তার দাবি পূরণ করার আশ্বাস দিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়। পুলিশ এসে ইমরানকে গ্রেফতার করে। এসময় তার কাছ থেকে ২টি সাংবাদিক পরিচয়পত্র, মোবাইল ও মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।

এলাকার সচেতন মহল জানান, বিশেষ করে চট্রগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার শতশত চিহ্নিত অপরাধী সাংবাদিক পরিচয়ে বিভিন্ন ধরণের অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে । সাংবাদিক পরিচয়ে ঘুরে বেড়ানো এসব অপরাধীদের বেপরোয়া চাদাঁবাজিতে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে সাধারণ ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এসব ভুইফুড় সাংবাদিকদের কারণে প্রকৃত সংবাদ কর্মীরা সমাজে মুখ দেখাতে পাচ্ছেনা। এক কথায় বলতে গেলে “ভেজালের ভিড়ে আসল সংবাদ কর্মীরা উধাও” হয়ে গেছে। সময় এসেছে এসব সাংবাদিক নামধারী অপরাধীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর।

পাঠকের মতামত: