ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

চুনতিতে বনবিটের অর্ধশত গাছ কেটে সাবাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক :: লোহাগাড়া উপজেলার চুনতিতে কাটা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির মাদারট্রিসহ প্রায় অর্ধশত গাছ। গতকাল শনিবার সকালে ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের রোসিঙ্গাঘোনাস্থ সাতগড় বিটের পুরাতন অফিস এলাকায় গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় এক সপ্তাহ যাবৎ সাতগড় বিটের পুরাতন অফিস এলাকা থেকে বনবিভাগের লোকজনের যোগসাজসে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছেন আবুল হোসেন নামে এক কাঠ ব্যবসায়ী।

এছাড়া সাতগড় বিট অফিসের লোকজনকেও গাছ কাটার সময় ঘটনাস্থলে দেখতে পেয়েছেন। কেটে নেয়া গাছের মধ্যে শতবর্ষী গাছও রয়েছে। এ গাছগুলো কেন কেটে ফেলা হয়েছে তা তারা জানেন না। মামলার ভয়ে কেউ এ ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞাসা করতেও সাহস পাননি।

তবে শতবর্ষীসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছগুলো কেটে নেয়ায় পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। নষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য। শত শত পাখি হারিয়ে আশ্রয়স্থল। লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারিয়েছে সরকার।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, বাগানে করই, জাম, মেহগনি, কাঁঠাল ও গর্জনসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাদারট্রি গাছের মোথা। কেটে নেয়ার পর গাছের মোথা এখন স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন প্রজাতির ছোট ছোট গাছও কেটে ফেলা হয়েছে। কর্তনকৃত গাছের মাথা লুকানোর জন্য আগুন দিয়ে পুড়ে ও ঝোপঝাড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। তবে আশপাশের লোকজন বনবিভাগের লোকজনের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।

কাঠ ব্যবসায়ী আবুল হোসেন জানান, বাগান করার জন্য বনবিভাগের ঊর্ধতন কর্মকর্তার নির্দেশে ২টি গাছ কাটা হয়েছে। এছাড়া কিছু গাছের ঢালাপালা কাটা হয়েছে। বাগান করার ব্যাপারে স্থানীয়দের সাথে বনবিভাগের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা বৈঠকও করেছেন বলে জানান তিনি।

সাতগড় বনবিট কর্মকর্তা মাসুদ পারভেজ জানান, চুনতি ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া এলাকায় সাতগড় বনবিটের নতুন অফিস। বর্তমানে পুরাতন বিট অফিসটি পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। সেখানে ওষধি গাছের বাগান করার জন্য জঙ্গল পরিস্কার করা হয়েছে। কোন ধরনের মাদারট্রি বা অন্য গাছ কাটা হয়নি।

তিনি আরো জানান, গাছের ছায়ায় গাছ হয় না তাই বট গাছের কিছু ডালপালা কাটা হয়েছে। বাগান সৃজনের ফলে স্থানীয়দের কোন সমস্যা হতে পারে। তাই তারা এ ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. জয়নুল আবেদীন জানান, সাতগড় বনবিটের পুরতান অফিস এলাকা থেকে বিভিন্ন প্রজাতির মাদারট্রিসহ একাধিক গাছ কেটে নেয়ার বিষয়টি অবগত হয়েছি।

এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ কামনা করছি।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের আওতাধীন পদুয়া রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শওকত ইমরান আরফাত চকরিয়া নিউজকে জানান, সুফল প্রকল্পের আওতায় নতুনভাবে পুণঃরক্ষার জন্য বনায়ন করা হচ্ছে।

লোকবল সংকটের কারণে বনবিভাগের লোকজন উপস্থিত না থাকায় হয়তো শ্রমিকরা গাছগুলো কেটে ফেলেছে। কাজ তদারকির জন্য রেঞ্জ কর্মকর্তাকে সশরীরে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেয়া হবে।

পাঠকের মতামত: