ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

ছেলেকে নির্যাতনের দৃশ্য দেখে হৃদয় যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেলেন মা

কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া ::  কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় ছেলেকে নির্যাতন করার দৃশ্য দেখে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে এক নারী মারা গেছেন। তার নাম নুর নাহার।

শুক্রবার উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনাইছড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোনাইছড়ি গ্রামে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নুরুল আবছার নান্নুর বাড়িতে রাম দা, কিরিচ ও লাটিসোটা নিয়ে হামলা চালায় এলাকার কিছু সন্ত্রাসী। এতে তিনজন আহত হন। এ সময় ছেলেকে নির্যাতনের দৃশ্য দেখে ঘটনাস্থলে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মা নুর নাহার প্রাণ হারান।

এলাকাবাসী জানান, গত ৩০ মার্চ সোনাইছড়ি মাঠে ক্রিকেট খেলা নিয়ে সাবেক ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি নুরুল আবছার নান্নুর সঙ্গে সাইফুদ্দিন ও শাহীন সরওয়ারের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়।

এ ঘটনায় সংঘর্ষে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। এ নিয়ে উখিয়া থানায় এজাহার দায়ের করে উভয়পক্ষ। তবে নান্নুর মামলাটি রেকর্ড করা হয়নি।

এরপর শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে নুরুল আবছার নান্নুর বাড়িতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় সাইফুদ্দিন ও শাহীন সরওয়ারের নেতৃত্বে ২০/৩০ জনের একটি দল।

এ সময় তারা ঘরের ভেতর গিয়ে নান্নু এবং তার বড়ভাই আহামদ শরীফকে (৩০) মারধর করে।

এসময় বাধা দিতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের লাটির আঘাতে গুরুতর আহত হন নান্নুর বাবা আলী হোসেন।

এ দৃশ্য দেখে মা নুর নাহার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে অজ্ঞান হয়ে যান। পরে এলাকাবাসী তাকে হাসপাতালে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পর দ্বিতীয় দফায় আবার হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এতে সানাউল্লাহসহ তিনজন আহত হয়।

এ ব্যাপার জালিয়াপালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেল বলেন, নান্নুর বসতবাড়িতে হামলার ঘটনা দুঃখজনক। পুলিশের সামনেই এ ঘটনা ঘটেছে। আমি এ ঘটনার নিন্দা জানাই ও দোষীদের শাস্তি দাবি করছি।

এ বিষয়ে উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মুজিবুল হক আজাদ বলেন, এ জঘন্য সন্ত্রাসী হামলা ইতিপূর্বের একটি ঘটনার জের। আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধান চেয়েছিলাম। সমাধানের জন্য আমি শুক্রবার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসও দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমার কথা শোনেননি।

স্ট্যাটাস দেয়ার দুই ঘণ্টা পর পরিকল্পিতভাবে নান্নুর বাড়িতে হামলা চালানো হয়। আমরা উখিয়া উপজেলা যুবলীগ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

এ হামলার বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মকবুল হোসেন মিথুন বলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে এ ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি এবং হামলায় জড়িতদের গ্রেফতারপূর্বক শাস্তি দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সিদ্বার্থ সাহা বলেন, আমরা আসামি গ্রেফতার করার জন্য ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। ঘটনাস্থল থেকে চলে আসার পর নান্নুর বাড়িতে বাদীপক্ষ হামলা করেছে বলে শুনেছি।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। পরে শুনলাম আসামি নান্নুর মা মারা গেছেন। ব্যাপারটি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।

এব্যাপারে জানতে উখিয়া থানার ওসি মর্জিনা আক্তার মর্জিকে ফোন করা হলে রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

পাঠকের মতামত: