লোহাগাড়া-সাতকানিয়া প্রতিনিধি :: লোহাগাড়ায় প্রেমিকের লাথির আঘাতের প্রেমিকার প্রসবকৃত মৃত বাচ্চার লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। চট্টগ্রামের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতিক্রমে আজ শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নের রশিদার পাড়ার পুকুর পাড় থেকে নবজাতকের লাশ উত্তোলন করা হয়।
পুলিশ জানায়, লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নের সাতগড়িয়া পাড়ার নিরীহ এক রিক্সাচালক ভাড়া বাসা নিয়ে একই ইউনিয়নের রশিদার পাড়া এলাকায় বসবাস করে আসছে। এখন থেকে প্রায় এক বছর আগে রশিদার পাড়ার আবুল হোসেনের বখাটে পুত্র মো. মিজানুর রহমান ভাড়া বাসায় থাকা ওই রিক্সাচালকের মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বখাটে মিজান প্রেমিকার সাথে দৈহিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়।
এরই মধ্যে প্রেমিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি মিজানকে বলার পর সে প্রেমিকাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিয়ের আশ্বাস দেয় কিন্তু পরে মিজান প্রেমিকার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে এবং তার ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ রাখে।
এভাবে চলতে চলতে প্রেমিকার সন্তান প্রসবের সময় ঘনিয়ে আসে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর বখাটে মিজান হঠাৎ ভাড়া বাসায় গিয়ে প্রেমিকাকে গর্ভপাতের জন্য চাপ প্রয়োগ করে কিন্তু প্রেমিকা তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মিজান তার প্রেমিকার পেটে লাথি মারে। এর কিছুক্ষণ পর প্রেমিকা একটি মৃত সন্তান প্রসব করে।
পরে প্রসবকৃত মৃত সন্তানটিকে তড়িঘড়ি করে মিজান রশিদার পাড়ার পুকুর পাড়ে কবর দিয়ে দেয়। ঘটনার পরদিন প্রেমিকা এ বিষয়ে লোহাগাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লোহাগাড়া থানার এসআই মো. গোলাম কিবরিয়া ওই নবজাতকের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলনের অনুমতি চেয়ে চট্টগ্রামের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করেন।
ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত নবজাতকের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের অনুমতি প্রদান করা হয়।
আজ সকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও লোহাগাড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদ্মাসন সিংহের উপস্থিতে পুলিশ রশিদার পাড়ার পুকুর পাড়া থেকে নবজাতকের লাশ উত্তোলন করে।
লোহাগাড়া থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. গোলাম কিবরিয়া জানান, থানায় মামলা করার আগের দিন রাতে বখাটে মিজান তার প্রেমিকার প্রসবকৃত মৃত বাচ্চার লাশ কবর দিয়ে দেয়। ফলে ওই সময় লাশের ময়নাতদন্ত করা সম্ভব হয়নি। পরে আদালতের অনুমতিক্রমে আজ ওই নবজাতকের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। লাশটি ময়নাতদন্ত করার জন্য চমেক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
এছাড়া ঘটনার সাথে জড়িত মামলার আসামী বখাটে মিজানকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
পাঠকের মতামত: